spot_img

কুয়েতে ষাটোর্ধ্ব অভিবাসীদের আবাসিক পারমিট বাতিল

অবশ্যই পরুন

কুয়েতে ৬০ বছরের অধিক বয়সের অভিবাসী শ্রমিক এবং যাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা মাধ্যমিক পর্যায়ের নিচে,তাদের রেসিডেন্সি ওয়ার্ক পারমিট বাতিল করে দিয়েছে কুয়েত পাবলিক অথরিটি ফর ম্যানপাওয়ার (পিএএম)।

১ জানুয়ারি থেকে এ নতুন আইন কার্যকর করতে যাচ্ছে কুয়েত সরকার। গত বছর ১৫ই আগস্ট এ বিষয়ক আইন চূড়ান্ত হয়। তাতে বলা হয়, কুয়েতের জনসংখ্যাতত্ত্ব ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ছে। এ সমস্যার সমাধান করার জন্য সরকার যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে এটি তার অংশ ।

পিএএমের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পেশাজীবীদের মধ্যে অবকাঠামো নির্মাণ খাত, গাড়ি মেরামত, রেস্তোরাঁর কাজে নিয়োজিত শ্রমিক। এ বছরের শেষের দিকে যখন তাদের আবাসিক অনুমোদনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে তখন কুয়েত ছাড়তে হবে। এ খবর দিয়েছে চায়না গ্লোবাল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক (সিজিটিএন)।

এ বিষয়ে বার্তা সংস্থা সিনহুয়াকে সাংবাদিক আজিজ আল কিনাঈ বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে কুয়েতে জনসংখ্যাতত্ত্ব বিষয়ক সঙ্কটের সমাধান করতে। কারণ, কুয়েতে স্থানীয় নাগরিকদের চেয়ে অভিবাসীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে এক ভারসাম্যহীন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ক্রমশ এ ধারা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই নিজ দেশের নাগরিকদের জন্য যথাযথ পরিবেশ সৃষ্টি করা প্রয়োজন সরকারের, যাতে তারা নিজেদের কাজ নিজেরা করতে পারেন।

সাংবাদিক আজিজ বলেন, কুয়েতে অভিবাসীরা যেসব কাজ করেন, তা কুয়েতের মানুষের জীবনধারার সঙ্গে মানানসই নয়। অর্থাৎ তারা নিজে হাতে এসব কাজ করতে অভ্যস্ত নন। তাই যদি এই পরিকল্পনাকে সফল করতে চায় সরকার, তাহলে তাদের উচিত নিজ দেশের নাগরিকদের এসব কাজের সঙ্গে যুক্ত করা এবং তাদেরকে উৎসাহিত করা।

সরকারের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন কুয়েতের নাগরিকরা। কুয়েতি যুব সমাজের জন্য বেসরকারি ও সরকারি খাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা প্রয়োজন। নতুন নতুন কৌশল হাতে নেয়া প্রয়োজন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চাকরি করেন ২৮ বছরের যুবতী খাওলা আল শাম্মারি। তিনি এমন সব পদে নাগরিকদের কর্মসংস্থানের মাধ্যমে তাদের ক্ষমতায়িত করা প্রয়োজন বলে মনে করেন।

পক্ষান্তরে কুয়েত ফেডারেশন অব রেস্তোরাঁ, ক্যাফে এন্ড ক্যাটারিং মনে করে, বেসরকারি খাতে এমন সিদ্ধান্তের কারণে তাদের কার্য সম্পাদন বাধাগ্রস্ত হবে। কুয়েত চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ড্রাস্ট্রি (কেসিসিআই) এর প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ আল সাকর বলেন, কারুকর্ম সংশ্লিষ্ট পেশায় কোনও সনদ প্রয়োজন হয় না।

এক্ষেত্রে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অভিজ্ঞতাও বাড়ে। কিন্তু সরকারি সিদ্ধান্তের কারণে অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে অনেক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এ বছর ১ জানুয়ারি সরকারি আইন কার্যকর হয়েছে। এর ফলে যেসব অভিবাসীর বয়স ৬০ বছরে পৌঁছেছে তাদের যদি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সনদ না থাকে তাহলে তারা আবাসিক মর্যাদা নবায়নের আবেদন করতে পারবেন না।

কুয়েতে ৪০ বছর ধরে অবস্থান করছেন ইরানের ইস্পাহানের জাহিদ ইয়াকুব। তার বয়স এখন ৬৫ বছর। ফেব্রুয়ারিতে তিনি স্থায়ীভাবে দেশে ফিরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এই দীর্ঘ ৪ দশকে তিনি কুয়েতের বিখ্যাত আল মুবারাকিয়া মার্কেটে সবজি ও ফল বিক্রি করেছেন। তিনি বিয়ে করেছেন। কুয়েতে রয়েছে তার ৪ সন্তান।

তিনি বলেছেন, ২৫ বছর বয়সে কুয়েতে গিয়ে তিনি টেবিলে কমলা সাজাতে সাহায্য করতেন। তার মতো বিদেশি এমন হাজারো শ্রমিক, যাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি নেই তারা সামনের কয়েক মাসে কুয়েত ছাড়ার পরিকল্পনা করছেন। এখানে উল্লেখ্য, কুয়েতের মোট জনসংখ্যার শতকরা ৭০ ভাগই বিদেশি।

সর্বশেষ সংবাদ

মুজিববর্ষের নামে ভাস্কর্য-ম্যুরালে হাজার হাজার কোটি টাকা নষ্ট: শফিকুল আলম

মুজিববর্ষের নামে কত টাকা অপচয় করা হয়েছে তা বর্তমান সরকার খতিয়ে দেখছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ