শেষ দিনে ৮ উইকেট নিয়ে নেমে লড়াইটা সহজ ছিল না। রবীন্দ্র জাদেজার ব্যাট করা নিয়েও ছিল অনিশ্চয়তা। এমন অবস্থায় দিনের শুরুতেই অধিনায়ক আজিঙ্কা রাহানেকে হারানোয় কাজটা অনেক কঠিন হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু চেতশ্বর পূজারার দৃঢ়তার পর ঋশভ পান্তের আগ্রাসী এক ইনিংস আর হনুমা বিহারি, রবীচন্দ্রন অশ্বিনের নিবেদনে ম্যাচ বাঁচিয়ে ফেলেছে ভারত।
৪০৭ রানের অসম্ভব এক লক্ষ্য তাড়ায় তাড়ায় শেষ দিনের পুরোটা ব্যাট করে ভারত করেছে ৫ উইকেটে ৩৩৪ রান। ফলে ম্যাচ হয়েছে ড্র। বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতেও তাই থাকল ১—১ সমতা। ব্রিসবেনে শেষ টেস্টেই জমবে সিরিজ মীমাংসার লড়াই।
আগের দিনের ২ উইকেটে ১০২ রান নিয়ে নেমেই উইকেট হারায় ভারত। অফ স্পিনার ন্যাথান লায়নের বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান মাত্র ৪ রান করা রাহানে।
এরপর দারুণ এক জুটিতে ঘুরে দাঁড়ায় সফরকারীরা। এক প্রান্তে পূজারা ছিল দৃঢ়তার ছবি, অন্যদিকে আগ্রাসী মেজাজ নিয়ে নামেন পান্ত। নিজের স্বভাবের সঙ্গে মাননসই ব্যাট চালাতে থাকেন তিনি। অজি বোলারদের উপর চালান পাল্টা আক্রমণ। তার ব্যাটের ঝাঁজে এক পর্যায়ে ম্যাচ জিতে যাওয়ার অবিশ্বাস্য সম্ভাবনাও দোলা দিতে থাকে ভারতের। পান্ত শেষ পর্যন্ত টিকে থাকলে হয়ত সেই সমীকরণও মিলে যেতে পারত।
চতুর্থ উইকেটে পূজারার সঙ্গে পান্ত যোগ করেন ১৪৮ রান। সেঞ্চুরির একদম কাছে থাকা এই বাঁহাতি কিপার ব্যাটসম্যান লায়নকে উড়াতে গিয়ে পয়েন্ট ক্যাচ দিয়ে দেন। মাত্র ৩ রানের জন্য হাতছাড়া হয় তার সেঞ্চুরি। নিভে যায় ভারতের অবিশ্বাস্য এক সম্ভাবনারও। ৯৭ রানের ইনিংস খেলতে পান্তের খরচ হয় ১১৮ বল। ১২ চার আর ৩ ছক্কাও মেরেছেন তিনি।
তার আউটের পর পরই ৭৭ করা পূজারাকে ভেতরে ঢোকা এক বলে বোল্ড করে দেন জস হ্যাজেলউড।
এরপরই অ্যাপ্রোচ বদলে ফেলে ভারত। শেষ দেড়সেশন টিকে থাকার মিশন নেয় তারা। সেই কাজে হনুমা বিহারির সঙ্গে অসাধারণ সঙ্গ দিয়েছেন অশ্বিন। আর কোন বিপর্যয় ঘটতে দেননি তারা।
১৬১ বলে ২৩ রানে অপরাজিত ছিলেন বিহারি, ১২৮ বল খেলে ৩৯ রান করেন অশ্বিন।
অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসে ৩৩৮ রানের জবাবে ভারত করেছিল ২৪৪ রান। বড় লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে আরও ৩১২ রান করে ইনিংস ছেড়েছিল স্বাগতিকরা। বিশাল লক্ষ্য দিয়ে দেড়দিনে ভারতকে অলআউট করার সময় পেয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু ব্যাটিং দৃঢ়তায় শেষ পর্যন্ত ম্যাচ বাঁচালো রাহানের দল।