অস্থির এক রাজনৈতিক সময়ে দিন বদলের সনদ অঙ্গীকার নিয়ে যে যাত্রা শুরু হয়েছিল তার যুগপূর্তিতে দাঁড়িয়ে আওয়ামী লীগ সরকার। টানা ক্ষমতার মসনদে অর্জনের মুকুটে হয়ত যোগ হতে পারত আরও কিছু পালক, তবে রাষ্ট্র পরিচালনা ও কূটনৈতিক সফলতা-ব্যর্থতার আপাত তুলাযন্ত্রে পাওয়ার গল্পটাই সমৃদ্ধ। তবুও উন্নয়নের বৈশ্বিক রেসে সামষ্টিক অর্থনীতির অভ্যন্তরীন স্থিতিশীলতায় বেড়েছে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও ব্যবসায়িক বিভিন্ন সূচকও। যার পুরটাই সম্ভব হয়েছে ধারবাহিক রাজনৈতিক ন্থিতীশিলতার কারনে। এরই ধারবাহিকতা বজায় রেখে এগিয়ে যেতে চায় আওয়ামী লীগ। এবিষয়ে দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন উন্নয়নের মূলমন্ত্রই হচ্ছে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা যা একযুগ ধরে বজায় রাখতে সফল হয়েছে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বধানীন।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা আরও বলছেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে হলে দলের সাংগঠনিক শৃঙ্খলাও বজায় রাখতে হবে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল হানিফ সাননিজকে বলেন, উন্নয়নের চাবিকাঠির প্রথম শর্ত যেমন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, তেমনি এ স্থিতিশীলতা অনেকা নির্ভর করে দলে সাংগঠনিক পর্যায় রাখা। এরই মধ্যে দলের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে অভিযুক্তদের অনেককে দলথেকে স্থায়ী ভাবে বহিস্কার করা হয়েছে। আবার অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি বিশৃঙ্খল নেতা-কর্মীদের হুশিয়ারী করে বলেন,অতীতের মত আগামীতেও শুদ্ধি অভিযান চলবে। যারাই দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা করবে তাদের সাংগঠনিক ব্যবস্থা করবে।
কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক সান নিউজকে বলেন, সকল উন্নয়নের চাবিকাঠি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। যা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বধানী দীর্ঘ এক যুগধরে সম্ভব হয়েছে। আগামী তার ধারাবাহিকতায় আওয়ামী লীগের মূলক্ষ্য।
তিনি বলেন, বড় বড় যে সব প্রকল্প নেয়া হয়েছে এবং কাজ চলছে এগুলো শেষ হলে এর সুফল হিসেবে দ্রুত প্রবৃদ্ধি হবে। উচ্চ প্রবৃদ্ধি ও সমৃদ্ধশালী দেশে উন্নীত হওয়ার জন্য আমরা ভিত্তি স্থাপন করেছি। যে সব প্রকল্প নেয়া হয়েছে সেগুলো বাস্তবায়ন সম্পন্ন হলে দেশের মানুষ এর সুফল পাবে। দেশ উন্নত, সমৃদ্ধ পথে এগিয়ে যাবে।
এ সব বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী সান নিজকে বলেন, আওয়ামী লীগ একদিকে সংগ্রামের ঐতিহ্য ধারণ করে আরেক দিকে সরকার পরিচালায় উন্নয়নের মাধ্যমে মানুষের সেবা করার ব্রত নিয়ে কাজ করে। শেখ হাসিনার উন্নয়ন পরিকল্পনা আধুনিক ও বিজ্ঞান মনস্ক। একটি আধুনিক ও বিজ্ঞানভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনে যা যা পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন তার সরকার গত ১২ বছরে সেটা হাতে নিয়েছে এবং বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। যার ফলে দেশ আজ একটি আধুনিক ও বিজ্ঞানভিত্তিক দেশে পরিণত হয়েছে। এসব করতে গিয়ে শেখ হাসিনাকে অনেক চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে হয়েছে।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডয়াস সদস্য জাহাঙ্গির কবির নানক সান নিউজকে বলেন, দীর্ঘ এক যুগের পথ পরিক্রমায় নানান সমস্যা কাটিয়ে তিনবারের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার এগিয়ে যাচ্ছে। এই এক যুগে বাংলাদেশকে আধুনিক ও বিজ্ঞানভিত্তিক বাংলাদেশে পরিণত করেছে সরকার। এই নতুন বাংলাদেশের রূপকার হিসেবে সরকারের নেতৃত্ব দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এক যুগের পথচলায় সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে এসেছিল বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণ। করোনা মোকাবিলা করে একদিকে জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষা, অন্যদিকে জনগণের জীবন-জীবিকা সচল রাখা দুইয়ে মিলে সরকারের চলার পথটি ছিল বন্ধুর। করোনা সংক্রমণের শুরুর দিকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, হাসপাতালগুলোতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা, সরকারি অনুদান নিয়ে অনিয়ম, স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির মতো বিষয়গুলো নিয়ে সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। তবে শেষ পর্যন্ত বলতে গেলে একহাতেই করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন সরকার প্রধান শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম সান নিউজকে বলেন, দলের মধ্যেশেৃঙ্খলা বজায় রাখা, হাইব্রিড ও বিদ্রোহ মুক্ত করতে পারলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায়া রাখা সম্ভব।