রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাসভবনে ইউক্রেনের কথিত হামলার খবরে “গভীর উদ্বেগ” প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং চলমান যুদ্ধের অবসানে কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ওপর জোর দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এক্স (সাবেক টুইটার)-এ দেওয়া এক পোস্টে মোদি লেখেন, “রাশিয়ান ফেডারেশনের প্রেসিডেন্টের বাসভবন লক্ষ্য করে হামলার খবরে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। চলমান কূটনৈতিক প্রচেষ্টাই শত্রুতা অবসান ও শান্তি অর্জনের সবচেয়ে কার্যকর পথ। আমরা সংশ্লিষ্ট সকলকে এসব প্রচেষ্টার ওপর মনোযোগী থাকার এবং সেগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে—এমন যেকোনো পদক্ষেপ এড়িয়ে চলার আহ্বান জানাই।”
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ সোমবার অভিযোগ করেন, মস্কো ও সেন্ট পিটার্সবার্গের মাঝামাঝি অবস্থিত পুতিনের বাসভবনে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। তার দাবি অনুযায়ী, নভগোরোদ অঞ্চলে অবস্থিত পুতিনের “সরকারি বাসভবন”-এর দিকে পাঠানো ৯১টি ড্রোন প্রতিহত করে ভূপাতিত করা হয়। তবে এ ঘটনায় কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। কথিত এই হামলার পরিপ্রেক্ষিতে লাভরভ বলেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন বন্ধে চলমান শান্তি আলোচনায় “রাশিয়ার আলোচনাগত অবস্থান পুনর্বিবেচনা করা হবে।”
তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই দাবি নাকচ করে একে “রাশিয়ার চিরাচরিত মিথ্যাচার” বলে আখ্যা দেন, যা কিয়েভে নতুন হামলার যৌক্তিকতা দেখানোর জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, এই দাবি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর যৌথ শান্তি প্রচেষ্টাকে “ক্ষুণ্ন” করেছে।
এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে জেলেনস্কি লেখেন, “রাশিয়া আবারও বিপজ্জনক বক্তব্য ব্যবহার করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দলের সঙ্গে আমাদের যৌথ কূটনৈতিক প্রচেষ্টার সব অর্জনকে ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। আমরা শান্তি আরও কাছাকাছি আনতে একসঙ্গে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। কথিত এই ‘বাসভবনে হামলা’র গল্প সম্পূর্ণ মনগড়া, যার উদ্দেশ্য ইউক্রেনের বিরুদ্ধে, বিশেষ করে কিয়েভের ওপর, অতিরিক্ত হামলার অজুহাত তৈরি করা এবং যুদ্ধ শেষ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে রাশিয়ার অস্বীকৃতিকে ঢেকে রাখা। এগুলো রাশিয়ার চিরাচরিত মিথ্যা। তাছাড়া, অতীতে রাশিয়া কিয়েভে হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে মন্ত্রিসভা ভবনও রয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “ইউক্রেন এমন কোনো পদক্ষেপ নেয় না, যা কূটনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। বরং রাশিয়াই সবসময় এমন পদক্ষেপ নেয়—এটাই আমাদের মধ্যে অন্যতম পার্থক্য। এই মুহূর্তে বিশ্ব সম্প্রদায়ের নীরব থাকা চলবে না। আমরা রাশিয়াকে টেকসই শান্তি অর্জনের প্রচেষ্টা ভণ্ডুল করতে দিতে পারি না।”

