নারায়ণগঞ্জে আলোচিত সাত খুন মামলার আপিল বিভাগের শুনানি চার সপ্তাহের জন্য মুলতবি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ সাতজনকে অপহরণ করা হয়। তিন দিন পর তাদের মরদেহ উদ্ধার হয় শীতলক্ষ্যা নদী থেকে। নিহতদের মধ্যে ছিলেন নজরুল ইসলাম, তার গাড়িচালক জাহাঙ্গীর, বন্ধু স্বপন, তাজুল, লিটন এবং আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহিম।
এ ঘটনায় নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি এবং চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন ফতুল্লা থানায়।
২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। এতে ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। রায় ঘোষণার পর মামলাটি ডেথ রেফারেন্স আকারে হাইকোর্টে পাঠানো হয়। একই বছরের ২২ মে থেকে আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শুরু হয়। শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ২২ আগস্ট হাইকোর্ট রায় ঘোষণা করে।
হাইকোর্টের রায়ে ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়, ১১ জনের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং বাকি ৯ জনের বিভিন্ন মেয়াদের সাজা বহাল রাখা হয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন ও র্যাব-১১’র বরখাস্তকৃত তিন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা— তারেক সাঈদ মুহাম্মদ, আরিফ হোসেন ও মাসুদ রানা।
অন্য যে ১১ জনের ফাঁসির আদেশ বহাল রয়েছে তারা হলেন-র্যাবের চাকরিচ্যুত সাবেক হাবিলদার মো. এমদাদুল হক, ল্যান্সনায়েক হীরা মিয়া, আরওজি-১ এ বি মো. আরিফ হোসেন, ল্যান্সনায়েক বেলাল হোসেন, সিপাহী আবু তৈয়্যব আলী, কনস্টেবল শিহাব উদ্দিন, এসআই পূর্ণেন্দু বালা, সৈনিক আবদুল আলীম, সৈনিক মহিউদ্দিন মুন্সী, সৈনিক আলামিন শরীফ ও সৈনিক তাজুল ইসলাম।
এছাড়া সাজা কমে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ১১ আসামি হলেন- র্যাবের চাকরিচ্যুত সাবেক সিপাহী আসাদুজ্জামান নূর ও সার্জেন্ট এনামুল কবির এবং নূর হোসেনের ৯ সহযোগী মূর্তজা জামান চার্চিল, আলী মোহাম্মদ, মিজানুর রহমান দিপু, আবুল বাশার, রহম আলী, জামাল উদ্দিন সরদার, ভারতে গ্রেপ্তার হওয়া সেলিম, সানাউল্লাহ সানা ও শাহজাহান।
বিচারিক আদালতে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড পাওয়া ৯ জনও র্যাবের বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তা ও সদস্য।