spot_img

একই মঞ্চে বসলেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট ও তাকে গ্রেপ্তারকারী মার্কিন জেনারেল

অবশ্যই পরুন

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত একটি বৈশ্বিক ফোরামে চমকপ্রদ এক দৃশ্যের জন্ম হয়েছে। সিরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা ও অবসরপ্রাপ্ত মার্কিন চার তারকা জেনারেল ডেভিড পেট্রাউসের সঙ্গে একই মঞ্চে বসেন। জেনারেল ডেভিড একসময় শারাকে গ্রেপ্তার করেছিলেন। এ সাক্ষাৎকারকে দুজনেই খানিকটা অস্বাভাবিক মনে করলেও এটিকে তারা নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা হিসেবে দেখছেন।

গত বছর ডিসেম্বরের অভ্যুত্থানে দীর্ঘ ৫০ বছরের আসাদ পরিবারের শাসনের অবসান ঘটিয়ে ক্ষমতায় আসেন বিদ্রোহী নেতা আহমেদ আল-শারা। এ বছর জানুয়ারিতে তিনি সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন। তবে তার অতীত ভিন্ন গল্প বলে।

ইরাকে মার্কিন অভিযানের সময় আল-শারা মার্কিন বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করেন। সেই কারণে ২০০৬ সালে পেট্রাউসের নেতৃত্বাধীন সেনারা তাকে গ্রেপ্তার করে পাঁচ বছর কারাগারে রাখে। পরে পেট্রাউস যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে আল-শারা সিরিয়ায় আল-নুসরা ফ্রন্ট গঠন করেন, যা পরে হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)-এ রূপ নেয়। একসময় আল–কায়েদার সঙ্গে সম্পর্ক থাকার কারণে তাকে ‘সন্ত্রাসী’ ঘোষণা করে তার মাথার দাম এক কোটি ডলার ঘোষণা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। তবে চলতি বছরের জুলাইয়ে ওয়াশিংটন সেই ঘোষণা প্রত্যাহার করে নেয়।

সম্প্রতি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে যোগ দিতে নিউইয়র্কে আসেন আল-শারা। প্রায় ছয় দশকের মধ্যে এ প্রথম কোনো সিরীয় রাষ্ট্রপ্রধান সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন। সফরকালে তিনি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও’র সঙ্গে বৈঠক করেন এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

সোমবার তিনি অংশ নেন ২০২৫ সালের ‘কনকর্ডিয়া অ্যানুয়াল সামিটে’, যেখানে তার সঙ্গে মঞ্চ ভাগ করেন জেনারেল পেট্রাউস। এ সম্মেলনে বিশ্বনেতা, ব্যবসায়ী ও এনজিও প্রতিনিধিরা একত্রিত হয়ে বৈশ্বিক অংশীদারত্ব নিয়ে আলোচনা করেন। অনুষ্ঠানে এক সময়কার শত্রুর সঙ্গে এক মঞ্চে বসা অস্বাভাবিক হলেও পেট্রাউস আল-শারার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।

তার ভাষায়, বিদ্রোহী নেতা থেকে রাষ্ট্রপ্রধান হয়ে ওঠার যাত্রা মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক ইতিহাসে অন্যতম নাটকীয় রাজনৈতিক পরিবর্তন। এমনকি তিনি নিজেও এখন আল-শারার একজন ভক্ত বলে উল্লেখ করেন।

আল-শারা বলেন, অতীতে হয়তো কিছু ভুল হয়েছিল, তবে এখন তার প্রধান লক্ষ্য সিরীয় জনগণকে অস্থিতিশীলতা থেকে মুক্ত করা এবং দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা। ইতোমধ্যে তিনি অক্টোবরে জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন। নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে আল-শারা বলেন, ‘যারা যুদ্ধের ভেতর দিয়ে গেছেন, কেবল তারাই শান্তির গুরুত্ব বোঝেন।’

এক সময়কার শত্রু আজ মঞ্চে আলোচনার সঙ্গী হওয়ার বিষয়ে আল-শারা বলেন, ‘একসময় আমরা যুদ্ধ করতাম, এখন আমরা সংলাপ করছি। অতীতকে বর্তমানের মানদণ্ডে বিচার করা যায় না, যেমন আজকেও অতীতের চোখে দেখা যায় না।’ তার মতে, শান্তির প্রতি এই অঙ্গীকারই তাকে আজ নিউইয়র্কে তার সহকর্মী ও বন্ধুদের মাঝে এনেছে।

সূত্র: আল জাজিরা

সর্বশেষ সংবাদ

জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষার্থীদের মাউশির ছয় নির্দেশনা

দেশজুড়ে আগামী ২১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে অষ্টম শ্রেণির জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা। এরই মধ্যে পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ করা হয়েছে। আজ...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ