জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে ভিপি পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুর রশিদ জিতু নির্বাচিত হয়েছেন। নানা আলোচনা সমালোচনার পর টানা তিন দিন ভোট গণণার পর ঘোষিত এ ফলে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন জিতু।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে এই ফলাফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মো. মনিরুজ্জামান।
নির্বাচনে জাকসুর ২৫টি পদের মধ্যে ২০টিতেই জয় পেয়েছে শিবির-সমর্থিত সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট। বাকি চারটির মধ্যে দুটি বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) ও দুটি স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচিত। জাকসু নির্বাচনে যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ পদেই শিবির-সমর্থিত প্যানেলের সদস্যরা নির্বাচিত হয়েছেন, সেখানে শীর্ষ পদে (ভিপি) জয়লাভ করে আলোচনায় এসেছেন আবদুর রশিদ জিতু।
কে এই জিতু
জিতু মূলত ছাত্রলীগ করতেন। কিন্তু জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় পদত্যাগ করে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হন তিনি। আবার মাঝে মধ্যে তিনি শিবিরের অনুষ্ঠানেও অংশ নিতেন।
মূলত ১ জুলাই থেকে তিনি কোটাবিরোধি আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। এমনকি গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী শিক্ষার্থীদের স্বার্থে যৌক্তিক সব আন্দোলনের প্রথম সারিতে ছিলেন তিনি। কোটা সংস্কার আন্দোলনের আগে জিতু ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত থাকলেও আন্দোলনের সময় সর্বপ্রথম ছাত্রলীগের হাতে মার খেয়ে আহত হন।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ব্যানারে ‘ফার্স্ট ম্যান’ হিসেবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত জাহাঙ্গীরনগরের আন্দোলন পরিচালনা করেন। পরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক পদ থেকে পদত্যাগ করে ‘গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলন’ নামে প্ল্যাটফর্মের সূচনা করেন। এই প্ল্যাটফর্ম থেকে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন তিনি।
আব্দুর রশিদ জিতু বিশ্ববিদ্যালয়ের গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক এবং তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।
তবে বহুল প্রতীক্ষিত এই নির্বাচন বয়কট করেছেন ছাত্রদলসহ চারটি প্যানেল ও স্বতন্ত্র পাঁচ প্রার্থী। নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না থাকা ও নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে একজন নির্বাচন কমিশনারসহ বিএনপিপন্থি চার শিক্ষক পদত্যাগ করেছেন।
জাকসুতে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ হাজার ৮৯৭। এর মধ্যে ছাত্র ছয় হাজার ১১৫ এবং ছাত্রী পাঁচ হাজার ৭২৮ জন। এর প্রায় ৬৭-৬৮ শতাংশ ভোট পড়েছে।