ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানের জন্য ইসরায়েলের পশ্চিমতীর দখলের মডেল নিয়ে আলোচনা করেছে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী, রাশিয়া ইউক্রেনের দখলকৃত অঞ্চলগুলোর সামরিক ও অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণ নেবে, ঠিক যেভাবে ১৯৬৭ সালে জর্ডানের কাছ থেকে পশ্চিমতীর দখলের পর সেখানে শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে ইসরায়েল।
সূত্রের বরাত দিয়ে যুক্তরাজ্যভিত্তিক দ্য টাইমস জানিয়েছে, এই প্রস্তাব কয়েক সপ্তাহ আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শান্তি দূত স্টিভ উইটকফ ও রুশ কর্মকর্তাদের আলোচনায় ওঠে। উইটকফ মধ্যপ্রাচ্যেও শান্তি প্রতিষ্ঠার দায়িত্বে আছেন এবং তিনি এমন ধারণাকে সমর্থন করেন।
মার্কিন কর্মকর্তারা মনে করেন, এই মডেলে সংবিধান অনুযায়ী ‘গণভোট’ ছাড়া ভূখণ্ড ছাড়ার সাংবিধানিক বাধা এড়িয়ে যেতে পারবে ইউক্রেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বারবার বলেছেন, তিনি ভূমি ছাড়তে রাজি নন। তবে ‘অকুপেশন মডেল’ এই যুদ্ধে বিরতি টানার উপায় হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এই পরিকল্পনায় ইউক্রেনের আন্তর্জাতিক সীমানা অপরিবর্তিতই থাকবে। যেভাবে পশ্চিমতীরের সীমানা ৫৮ বছর ধরে অপরিবর্তিত থাকলেও ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে।
শুক্রবার আলাস্কায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠকের আগে হোয়াইট হাউসের কাছে এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে ‘পশ্চিমতীর মডেলের’ কথা জানা গেছে। একটি সূত্র বলেছে, ‘এটা হবে ঠিক যেভাবে ইসরায়েল পশ্চিমতীর দখল করে রেখেছে। সেখানে একজন গভর্নর থাকবে, অর্থনীতি রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হবে, কিন্তু নামটা থাকবে ইউক্রেন। ইউক্রেন কখনো তার সার্বভৌমত্ব ছাড়বে না, কিন্তু বাস্তবে এটি হবে দখল হয়ে যাওয়া অঞ্চল।’
যদিও আন্তর্জাতিক বিচার আদালত ইসরায়েলের পশ্চিমতীর দখলকে অবৈধ ঘোষণা করেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র এই রায়কে স্বীকৃতি দেয় না এবং রাশিয়া আংশিক স্বীকৃতি দেয়। ২০২২ সালের মার্চে একই আদালত রাশিয়াকে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান বন্ধের নির্দেশ দিলেও রাশিয়া তা মানেনি।
কিছু মার্কিন আলোচক মনে করছেন, ইউক্রেনের দখলকৃত অঞ্চলের জন্য এই পরিণতি যুদ্ধের বাস্তব পরিস্থিতি ও অন্য দেশগুলোর রাশিয়ার বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধে অংশ না নেয়ার মনোভাবকে প্রতিফলিত করে। এখন শুধু রুশ দখলের সীমানা চূড়ান্ত করাই বাকি। আলাস্কার বৈঠকের আগে পুতিন যতটা সম্ভব তা বিস্তৃত করতে চাচ্ছেন।