spot_img

মিথ্যা সর্বকাজেই অপছন্দনীয়

অবশ্যই পরুন

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘সত্য নেকির দিকে পরিচালিত করে আর নেকি জান্নাতে পৌঁছায়। মানুষ সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত থেকে অবশেষে ‘সিদ্দিক’ এর দরজা লাভ করে। আর মিথ্যা মানুষকে পাপের দিকে নিয়ে যায়। পাপ তাকে জাহান্নামে পৌঁছায়। মিথ্যা বলতে বলতে মানুষ অবশেষে আল্লাহর কাছে মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত হয়ে যায়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬০৯৪)

এ হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের সত্যবাদী হওয়ার শিক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি এর পুরস্কারস্বরূপ জান্নাত লাভের ব্যাপারেও অবহিত করেছেন। এরপর তিনি মিথ্যার ব্যাপারে ভীতিপ্রদর্শন করে বলেন, মিথ্যার পরিণতি হলো জাহান্নাম। সুতরাং এই হাদিস আমাদের সত্যবাদিতার প্রতি উৎসাহিত এবং মিথ্যা থেকে সতর্ক করে।

কৌতুকস্বরূপ মিথ্যা : হাসি ঠাট্টা অথবা কৌতুক করেও মিথ্যা বলা যাবে না। মুআবিয়া ইবনে হায়দা কুশাইরি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘সে ব্যক্তির ধ্বংস অনিবার্য, যে কথা বলে এবং লোক হাসানোর জন্য মিথ্যা বলে। তার জন্য ধ্বংস। তার জন্য ধ্বংস।’ (জামে তিরমিজি, হাদিস : ২৩১৫)

অন্য হাদিসে আবু উমামা বাহিলি (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি হাসিঠাট্টার ছলেও মিথ্যা বলে না, আমি তার জন্য জান্নাতের মধ্যস্থলে একটি ঘরের জিম্মাদার।’ (মুজামুল আওসাত, হাদিস : ৮৭৮)

বাচ্চাদের সঙ্গে মিথ্যা : অনেকেই বাচ্চাদের মিথ্যা প্রলোভন দেখায়। এর দ্বারা বাচ্চারা মিথ্যাচারে অভ্যস্ত হয়ে যায়। তাই এটা নিষিদ্ধ। এছাড়া এটা গোনাহের কাজও। আবদুল্লাহ ইবনে আমের (রা.)
থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘একবার আমার মা আমাকে ডাকেন, যখন রাসুল (সা.) আমার ঘরে অবস্থান করছিলেন। আমার মা আমাকে বলেন, তুমি এখানে এসো, আমি তোমাকে দেবো। রাসুল (সা.) তাকে জিজ্ঞেস করেন, তুমি কী দিতে চাও? তিনি বললেন, আমি তাকে খেজুর দেবো। একথা শুনে রাসুল (সা.) বলেন, তুমি যদি তাকে কিছু না দিতে, তবে তোমার জন্য একটা গোনাহ লেখা হতো।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ৪৯০৬)

মিথ্যা প্রশংসা : কারো সামনে তার মিথ্যা প্রশংসা করা নিষদ্ধি। কারো জন্য অনুপযুক্ত উপাধি ব্যবহার করাও দূষণীয়। এভাবে যখন কোনো পাপাচারী নিকৃষ্ট ব্যক্তির প্রশংসা করা হয়, তখন আল্লাহর আরশ পর্যন্ত কেঁপে ওঠে। আনাস ইবনে মালেক (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যখন কোনো পাপাচারী ব্যক্তির প্রশংসা করা হয়, তখন আল্লাহ তায়ালা রাগান্বিত হন এবং তাঁর আরশ কেঁপে ওঠে।’ (শুআবুল ইমান, হাদিস : ৪৮৮৬)

মিথ্যা স্বপ্ন বর্ণনা : বানিয়ে বানিয়ে স্বপ্নের মিথ্যা বর্ণনা দেওয়াও অপরাধ। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি এমন স্বপ্ন দেখার ভান করল, যা সে দেখেনি, তাকে (পরকালে) দুটি যবের দানায় গঁিট লাগানোর জন্য বাধ্য করা হবে। অথচ সে তা কখনোই পারবে না। (ফলে লাঞ্ছিত ও অপদস্থ হবে)।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৫৬৫)

অন্য হাদিসে তিনি বলেন, ‘নিঃসন্দেহে সবচেয়ে বড় মিথ্যা হলো, যা সে দেখেনি, তা দেখার দাবি করা।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৩২৫৯)
আল্লাহ তাআলা আমাদের সব ধরনের মিথ্যাচার থেকে হেফাজত করুন।

লেখক : মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুস সুন্নাহ রাজাবাড়ী
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।

সর্বশেষ সংবাদ

৮ ফেব্রুয়ারি সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ হবে

আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) ছয়টি সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ