মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ডা. গোলাম সাব্বির আহমেদের জামিন শুনানি পিছিয়ে ১২ ডিসেম্বর ধার্য করা হয়েছে। চিফ প্রসিকিউটর দেশে না থাকায় মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ৩ সদস্যের আপিল বিভাগ শুনানির জন্যে নতুন এ দিন ধার্য করেন।
এ সময় প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামীম আপিল বিভাগকে বলেন, চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম দেশে নেই, আজ এই জামিন শুনানি করা সম্ভব না। আদালত কবে শুনানি সম্ভব জিজ্ঞেস করায় প্রসিকিউশন বলে আগামী সপ্তাহে। পরে এ দিন ধার্য করা হয়।
শুনানিতে ডা. গোলাম সাব্বিরের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান।
২০২৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি গোলাম সাব্বিরসহ পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এরপর কারাবন্দি আসামিরা আইন অনুসারে এক মাসের মধ্যে আপিল করেন।
২০১৫ সালের ১৯ মে তৎকালীন সংসদ সদস্য হান্নানসহ তিনজনের নামে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মামলাটি দায়ের করেন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুর রহমানের স্ত্রী রহিমা খাতুন।
মামলায় জাতীয় পার্টির তৎকালীন সংসদ সদস্য এম এ হান্নান ছাড়াও জামায়াত নেতা ফখরুজ্জামান ও গোলাম রব্বানীকে আসামি করা হয়।পরে তদন্তে আরও পাঁচজনের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় এ মামলার আসামি করা হয় মোট আটজনকে।
এ মামলায় ২০১৬ সালের ১১ ডিসেম্বর সংসদ সদস্য হান্নানসহ আটজনের নামে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ২০১৯ সালের ২৭ মে এ মামলার বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। বিচার শেষে ২০২২ সালের ২৩ নভেম্বর রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন ট্রাইব্যুনাল। আর ১৬ ফেব্রুয়ারি রায়ের জন্য সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দিন ধার্য করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
মামলার আসামিরা ছিলেন- এম এ হান্নান, এম এ হান্নানের ছেলে রফিক সাজ্জাদ, ডা. খন্দকার গোলাম সাব্বির আহমদ, মিজানুর রহমান মিন্টু, মো. হরমুজ আলী, ফখরুজ্জামান, আব্দুস সাত্তার ও খন্দকার গোলাম রব্বানী।
এর মধ্যে কারাবন্দি থাকা অবস্থায় এম এ হান্নান ও তার ছেলে রফিক সাজ্জাদ এবং অপর এক আসামি মিজানুর রহমান মন্টু মারা যান। তাদের নামে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, আটক, অপহরণ, নির্যাতন, গুম, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ছয়টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়।
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় ২১ এপ্রিল থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ত্রিশাল উপজেলায় তারা অপরাধগুলো সংঘটিত করেন বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।
২০১৬ সালের ১১ জুলাই হান্নানসহ আটজনের নামে তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেন তদন্ত সংস্থা। এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান ২০১৫ সালের ২৮ জুলাই থেকে ২০১৬ সালের ১১ জুলাই পর্যন্ত তদন্ত কাজ সম্পন্ন করেন।
একই বছরের ১ অক্টোবর প্রসিকিউশনের আবেদনক্রমে এ মামলার আট আসামির নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। পরে ওইদিনই ঢাকায় গ্রেপ্তার হন এম এ হান্নান ও তার ছেলে রফিক সাজ্জাদ। ময়মনসিংহ সদর ও ত্রিশালে গ্রেপ্তার হন বাকি তিনজন।