সদ্য নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ফোন করে অভিনন্দন জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান। এ সময় দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা নিয়ে তারা আলোচনা করেন। বৃহস্পতিবার (০৭ নভেম্বর) তুরস্কের প্রেসিডেন্সি এ খবর জানিয়েছে। খবর রয়টার্সের।
এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্সি বলেছে, এরদোগান বিজয়ের জন্য ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং আগামীতে তুরস্ক ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সহযোগিতার বিকাশের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
এর আগে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে দুইবার হোয়াইট হাউসে গিয়েছিলেন এরদোগান। তবে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সময় একবারও হোয়াইট হাউস সফর করেননি তিনি।
এর আগে বুধবার (৬ নভেম্বর) ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে তুর্কি প্রেসিডেন্ট লেখেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়লাভ করে পুনরায় নির্বাচিত হওয়া আমার বন্ধু ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আমি অভিনন্দন জানাই’। পাশাপাশি তিনি আশা প্রকাশ করেন, ‘ট্রাম্পের নেতৃত্বে তুরস্ক-মার্কিন সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে এবং বিশেষ করে ফিলিস্তিনি ইস্যু ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সংকট ও যুদ্ধের অবসান ঘটবে’।
এরদোগান আরও লেখেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, আরও ন্যায়সঙ্গত একটি বিশ্বের জন্য আরো প্রচেষ্টা চালানো হবে। আমি আশা করি এই বিজয় আমাদের বন্ধুপ্রতিম ও মিত্র মার্কিন জনগণের জন্য এবং সমগ্র মানবজাতির জন্য মঙ্গলজনক হবে’।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিতে দ্বিতীয়বারের মতো মার্কিন মসনদে বসতে চলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে হারিয়ে দেন তিনি। জয়ের পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
বুধবার (০৬ অক্টোবর) সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ফোন করে জয়ের জন্য অভিনন্দন জানান। সৌদির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বলছে, ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলার সময় এমবিএস দুই দেশের মধ্যে ঐতিহাসিক এবং কৌশলগত সম্পর্ক জোরদার করার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছে। এ সময় ট্রাম্পের নেতৃত্বে বন্ধুত্বপূর্ণ আমেরিকান জনগণের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধিও কামনা করেন তিনি। জবাবে ট্রাম্প “তার অভিনন্দন এবং আমেরিকান জনগণের প্রতি অনুভূতির জন্য যুবরাজকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এর আগে বুধবার এমবিএস এবং বাদশাহ সালমান উভয়ই ট্রাম্পকে পৃথক অভিনন্দন বার্তা পাঠান।
এদিকে ট্রাম্পের জয়ের পর কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানি বলেছেন, “আমরা এই অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা উন্নয়নে ট্রাম্পের সঙ্গে ফের কাজ করার অপেক্ষায় আছি।” আর মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসে প্রত্যাবর্তনকে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি আনতে সহায়ক হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন।
এক্সে করা এক পোস্টে সিসি বলেন, “আমি তার (ট্রাম্প) সর্বাত্মক সাফল্য কামনা করি… এবং আমরা একসঙ্গে শান্তিতে পৌঁছানোর পাশাপাশি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং মিশর-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের বন্ধুত্বপূর্ণ জনগণের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্ব জোরদার করার জন্য উন্মুখ হয়ে আছি।”
অন্যদিকে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সামি আবু জুহরি বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে গাজা যুদ্ধ বন্ধ করতে পারবেন বলে ট্রাম্প অতীতে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা এখন পরীক্ষা করা হবে। আমরা ট্রাম্পকে (প্রেসিডেন্ট জো) বাইডেনের ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”
প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে মধ্যপ্রাচ্যে আগ্রাসন চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। তাতে পূর্ণ সমর্থন দিয়ে এসেছে বাইডেন প্রশাসন। বারবার যুদ্ধবিরতির উদ্যোগের কথা বললেও এখন পর্যন্ত কোনো ইতিবাচক ফলাফল সামনে আসেনি। ক্ষমতার বাইরে থাকা ট্রাম্প অবশ্য যুদ্ধের ইতি টানতে সক্ষম বলে বারবার দাবি করে এসেছেন। ফের মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেয়ার পর মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা কমাতে ট্রাম্প ঠিক কী ধরনের পদক্ষেপ নেন তা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও কয়েকমাস।