spot_img

উত্তরাধিকার সম্পত্তি দ্রুত বণ্টন করা জরুরি

অবশ্যই পরুন

বর্তমান সমাজে পারিবারিক সম্পত্তিতে মালিকানার অস্বচ্ছতা ও লেনদেনের অপরিচ্ছন্নতা মহামারির আকার ধারণ করে আছে, যার ফলে সৃষ্ট হচ্ছে অসংখ্য ঝগড়া-বিবাদ, দ্বন্দ্ব-কলহ। যদিও নিজে ত্যাগ স্বীকার করে অন্যকে প্রাধান্য দেওয়ার চেষ্টা করাই ইসলামে কাম্য। তবে লেনদেন ছোট হোক বা বড় তা পরিষ্কার হওয়া উচিত। তার শর্তস স্বচ্ছ ও অস্পষ্টতামুক্ত হওয়া উচিত। এ ব্যাপারে কোনো সংকোচ, লজ্জা, উদারতা বা লৌকিকতা কোনো কিছুই প্রতিবন্ধক না হওয়া উচিত। এভাবে লেনদেনের শর্তসমূহ পরিষ্কার করার পর পারস্পরিক সদাচার যত বেশি করা যায় ততই ভালো। এটিই উদ্দেশ্য হলো এ নীতির-‘ভ্রাতৃত্বের আবহে বসবাস কর, আর অপরিচিতের ন্যায় লেনদেন কর।’

উত্তরাধিকার সম্পত্তি বণ্টনে সমাজের অবহেলা
পরিবারের কোনো ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করলে ইসলামের নির্দেশ হলো, অনতিবিলম্বে তার পরিত্যাক্ত সম্পত্তি উত্তরাধিকারদের মাঝে বণ্টন করে দিতে হবে। কিন্তু আমাদের সমাজে শরিয়তের এ নির্দেশ পালনে চরম অবহেলা-উদাসীনতা বিরাজমান। এমনকি দ্বিন ও শরিয়ত পালনে অভ্যস্ত ও আগ্রহী ব্যক্তিগণও এ ব্যাপারে চরম উদাসীনতার শিকার। কোথাও তো হালাল-হারামের তোয়াক্কা না করে যে যা পায় তার উপরই নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করে। আবার কোথাও এমন মন্দ নিয়ত না থাকলেও অজ্ঞতা ও অবহেলার দরুন সম্পত্তি বণ্টন করা হয় না। যদি মৃত ব্যক্তির কোনো ব্যবসা-বাণিজ্য থাকে তাহলে জীবদ্দশায় যে সন্তান তার দেখাশুনা বা সহযোগিতা করত সেই তা দেখাশোনা করতে থাকে। কিন্তু এ বিষয়টি পরিষ্কার করা হয় না যে এখন ব্যবসার মালিকানা কার, আর তা কী পরিমাণ। উত্তরাধিকারীদের অংশ কী হারে পরিশোধ করা হবে। ব্যবসায় যে ভাই শ্রম দিচ্ছে সে এর বিনিময়ে কী পাবে। বরং কেউ যদি সম্পত্তি বণ্টনের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাহলে তার এ প্রস্তাবকে সমাজে ঘৃণিত ও দোষনীয় মনে করা হয়। বলা হয়, ‘মৃত ব্যক্তির কবরের মাটিও এখনো শুকায়নি, জীবিতরা সম্পদ ভাগ-বাটোয়ারার ধান্ধায় পড়ে গেছে।’

অথচ এ বণ্টন ইসলামের নির্দেশ, স্বচ্ছ মালিকানার দাবিও বটে। কিন্তু এদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই। আর এ অবহেলার ফলাফলই কিছুদিন পর প্রকাশ পেতে থাকে। সময় গড়ালে পরস্পরের নিজ প্রাপ্য ও অধিকারের কথা স্মরণ হয়। ধীরে ধীরে অসন্তোষ ও ক্ষোভ জন্মাতে থাকে। সময়ের ব্যবধানে পরিত্যক্ত সম্পত্তির মূল্য বৃদ্ধিতে বড় ধরনের তারতম্য ঘটে গেলে পারস্পরিক দ্বন্দ্ব-কলহও বড় আকার ধারণ করে। সে দ্বন্দ্ব-কলহের উপযুক্ত কোনো সমাধানও খুঁজে পাওয়া যায় না। এক পর্যায়ে আদালত পর্যন্ত গড়ায়। এমনকি কখনো-কখনো ফৌজদারী অপরাধও সংঘটিত হয়ে থাকে। যদি শরিয়তের নির্দেশ অনুযায়ী যথাসময়ে সম্পদ বণ্টন হয়ে যেত তাহলে সকলের সন্তুষ্টিতে সব বিষয় মীমাংসা হয়ে যেত। সৌহার্দ্য ও সমপ্রীতি বৃদ্ধি পেত।

সম্পত্তি বণ্টনে অন্যায় হলে পরকালে কঠোর শাস্তি
কোরআনে কারিমে উত্তরাধিকার সম্পত্তির মালিকানার অধিকার বন্টনের বিবরণ দেওয়ার পর মহান আল্লাহ বলেন, ‘এগুলো আল্লাহর সীমারেখা। আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করে আল্লাহ তাকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতসমূহে, যার তলদেশে প্রবাহিত রয়েছে নহরসমূহ। সেখানে তারা স্থায়ী হবে। আর এটা মহা সফলতা। আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নাফরমানি করে এবং তাঁর সীমারেখা লঙ্ঘন করে আল্লাহ তাকে আগুনে প্রবেশ করাবেন। সেখানে সে স্থায়ী হবে। আর তার জন্যই রয়েছে অপমানজনক আজাব।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ১৩, ১৪)

আবু উমামা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন: ‘তোমরা আমাকে ছয়টি বিষয়ের নিশ্চয়তা দাও, আমি তোমাদেরকে জান্নাতের নিশ্চয়তা দিবো। সাহাবায়ে কেরাম আরজ করলেন : সেগুলো কী হে আল্লাহর রাসুল! তখন তিনি বলেন, ‘তোমরা তোমাদের উত্তরাধিকার সম্পত্তির বণ্টনে জুলুম করবে না, আর মানুষদের উপর ইনসাফ করবে, … …।’ (আল মুজামুল কাবির, হাদিস : ৮০৮২)

তাই আমরা যত দ্রুত সম্ভব, উত্তরাধিকার সম্পত্তির ন্যায়ভিত্তিক বণ্টন ও মালিকানার নিষ্পত্তি করে নিবো। এতেই পরিবার ও সমাজের জন্য দ্রুত কলাণ বয়ে আনবে।

সর্বশেষ সংবাদ

কোনো নিরীহ মানুষ যেন হয়রানির শিকার না নয়: আইজিপি

পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেছেন, ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে দায়ের করা মামলাসমূহ যথাযথভাবে তদন্ত করতে হবে। কোনো...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ