আলোচিত চীনা রকেটের নিয়ন্ত্রণহীন ধ্বংসাবশেষ মালদ্বীপের পাশে ভারত মহাসাগরে পড়েছে বলে দাবি করেছে বেইজিং।
রোববার (০৯ মে) বেইজিং এর স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ২৪ মিনিটে ধ্বংসাবশেষ ভারত মহাসাগরে পড়ে।
গত ২৯শে এপ্রিল চীনের ওয়েনচ্যাং স্পেস কেন্দ্র থেকে লং মার্চ ফাইভবি (Long March 5B) রকেটটি উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল। রকেটটিকে সফলভাবে তিয়ানহে স্পেস স্টেশনের মডিউলকে কক্ষপথে স্থাপন করা গেলেও পরে সেটির ওপর থেকে নিয়ন্ত্রণ হারায় গ্রাউন্ড স্টেশন। এরপর থেকেই পৃথিবীর কক্ষপথে ঘুরতে থাকে চীনা রকেটটি।
চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম গত কয়েকদিন ধরে আশঙ্কা প্রকাশ করে আসছিল যে, এই রকেটের ধ্বংসাবশেষ জনবহুল অঞ্চলে বিধ্বস্ত হতে পারে আবার আন্তর্জাতিক জলসীমাতেও পড়তে পারে।
আর্থ অবজারভেটরি সিঙ্গাপুরের জেসন স্কট হেরিন বিবিসিকে জানান,”মাধ্যাকর্ষণ টানের ফলে এই ধ্বংসাবশেষ নীচের দিকে আরও ঘন বায়ুমণ্ডলের দিকে নামতে থাকবে, এর ফলে মাধ্যাকর্ষণ টান এবং নীচের দিকে নেমে আসার গতিবেগ আরও বাড়তে থাকবে।”
একবার এই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেলে, বস্তুটি একটি একটি নির্দিষ্ট দিকে নীচের দিকে ধেয়ে আসতে থাকবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। ভূ-পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার উচ্চতায় বায়ুমণ্ডল ক্রমেই ঘন হতে থাকায় রকেটের ধ্বংসাবশেষের বেশিরভাগ আগুনে পুড়ে যাবে বলে ধারণা করা হয়।
যে অংশগুলো পুড়বে না সেগুলোই পৃথিবীতে ভেঙে পড়বে।
হার্ভার্ড-স্মিথসোনিয়ান সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রো ফিজিক্সের জ্যোতির্বিজ্ঞানী জোনাথন ম্যাকডোয়েল বিবিসিকে বলেন, “অনিয়ন্ত্রিতভাবে আছড়ে পড়ার বিষয়টি ‘লং মার্চ ফাইভবি’-এর একটি বড় সমস্যা”।
তিনি আরও জানান যে, মার্কিন বা ইউরোপীয় রকেটগুলো বিশেষভাবে নকশা করা হয় যেন কক্ষপথে বড় কোন অংশ ছিটকে না পড়ে”।
একটি রকেটের ধ্বংসাবশেষ নিয়ন্ত্রিতভাবে পৃথিবীতে ভেঙে পড়তে পারে, কিন্তু এক্ষেত্রে রকেটটির গতি এর উৎক্ষেপণের পদ্ধতি দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
এক্ষেত্রে ধ্বংসাবশেষ সমুদ্রের মাঝখানে এবং জনমানব থেকে দূরে একটি নির্দিষ্ট স্থানে যে ভেঙে পড়বে সেটা নিশ্চিত হওয়া যায়। একইভাবে, রকেটের গতিপথ এমনভাবে ঠিক করতে হয় যেন এর ধ্বংসাবশেষ পড়ার স্থানটি দ্রুত অনুমান করা যায়।
অবশেষে রকেটটির নিয়ন্ত্রণহীন ধ্বংসাবশেষ মালদ্বীপের পাশে এসে পড়ল, স্বস্তি ফিরে এল পৃথিবীতে।