শিল্প মন্ত্রণালয়ের চলমান প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতি বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, প্রকল্পে যেখানে ধীরগতি রয়েছে, সেখানে গতি আনতে হবে। করোনায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সাবধানতা অবলম্বন করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে হবে। কোনো দোহাই দিয়ে প্রকল্পের কাজ বন্ধ রাখা যাবে না।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, করোনাকালীন এ লকডাউনে ভার্চুয়ালি সভা করে প্রকল্পের কাজের তদারকি বাড়াতে হবে। চলতি বছরের জুনের মধ্যে নির্ধারিত প্রকল্পের কাজ শেষ করতে হবে। কোনোভাবেই প্রকল্পের সময় বাড়ানো হবে না।
বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) শিল্পমন্ত্রী ২০২০-২০২১ অর্থবছরে শিল্প মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা বিষয়ক ভার্চুয়াল সভায় এসব কথা বলেন তিনি। সভায় শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
শিল্প সচিব কে এম আলী আজমের সভাপতিত্বে সভায় মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন সংস্থা ও করপোরেশনের প্রধানরা এবং বিভিন্ন প্রকল্পের পরিচালকরা ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন।
সভায় জানানো হয়, ২০২০-২০২১ অর্থবছরে শিল্প মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে মোট ৪৮টি উন্নয়ন প্রকল্প রয়েছে। এর মধ্যে ৪৪টি বিনিয়োগ, ৩টি কারিগরি সহায়তা এবং ১টি নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্প রয়েছে। সব মিলিয়ে এসব প্রকল্পে বরাদ্দের মোট পরিমাণ ৩ হাজার ৮৪২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে জিওবি খাতে ১ হাজার ৬৯৯ কোটি ৯১ লাখ টাকা, প্রকল্প সাহায্য খাতে ২ হাজার ৯৮ কোটি ৪৫ লাখ এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন খাতে ৪৪ কোটি ১৯ লাখ টাকা বরাদ্দ রয়েছে।
চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত প্রকল্পগুলোর বিপরীতে ১ হাজার ৪৮০ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে বলে সভায় জানানো হয়। সভায় আরও জানানো হয়, শিল্প মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির অগ্রগতি ৩৮ দশমিক ৫২ শতাংশ। সারের সংরক্ষণ ও বিতরণের সুবিধার জন্য ১৩টি বাফার গোডাউন নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যে পাঁচটি বাফার গোডাউন হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি আটটি বাফার গোডাউনের কাজ চলতি বছরের মধ্যেই শেষ হবে। এছাড়া সার সংরক্ষণ ও বিতরণ সুবিধার জন্য বিভিন্ন জেলায় ৩৪টি বাফার গুদাম নির্মাণ কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়া দ্রুততম সময়ের মধ্যে শেষ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
২০২০-২০২১ অর্থবছরের সমাপ্তির জন্য ১৩টি প্রকল্পের তালিকা করা হয়েছে। এসব প্রকল্প জুন ২০২১ সালের মধ্যে শেষ হবে। উন্নয়ন প্রকল্পের প্রশিক্ষণ, সভা, সেমিনার ও আলোচনামূলক কার্যক্রম অনলাইন বা ভার্চুয়ালি পরিচালনা করতে সভায় নির্দেশনা দেওয়া হয়। এছাড়া বিসিআইসি কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন অস্থায়ীভিত্তিতে রাসায়নিক দ্রব্য সংরক্ষণের জন্য গুদাম ও বিএসইসি কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন গাজী ওয়্যার লিমিটেডকে শক্তিশালী ও আধুনিকায়নকরণ শীর্ষক প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতি উপস্থাপন করা হয়।
শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, অস্থায়ী ভিত্তিতে রাসায়নিক দ্রব্য সংরক্ষণের জন্য গুদাম, সার সংরক্ষণ ও বিতরণের সুবিধার জন্য বাফার গোডাউন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ অতিদ্রুত শেষ করতে হবে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন করপোরেশনের সমস্যাসমূহ চিহ্নিত করে তার সমাধান করতে হবে। করোনা মহামারির মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাইকে কাজ করতে হবে এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সকল প্রকল্পের কাজ শেষ করতে হবে।