spot_img

ঔষধি গুণে ভরা পুদিনা পাতা

অবশ্যই পরুন

পুদিনা পাতার সঙ্গে আমরা কমবেশি সবাই পরিচিত। গুণে ভরা এই পাতা আমাদের শরীরের নানা রোগ প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। মুখের স্বাদ বাড়াতেও এটি খুব কার্যকর। সালাদ, চাটনি কিংবা শীতের সকালে এক কাপ পুদিনা পাতার চা মন সতেজ করে দিতে পারে। খাবারের স্বাদ বাড়িয়ে দেওয়া এই উপাদানের ভেষজ গুণাগুণও অনেক। রসুইঘরে যেমন ব্যবহার করা হয়, সুস্বাস্থ্য রক্ষায়ও আছে ব্যবহার। ঔষধি এই গাছ ব্যবহার করা হচ্ছে আদিকাল থেকে। পাওয়া যায় সহজে। পটাশিয়াম পূর্ণ পুদিনা পাতায় খনিজ উপাদানের মাঝে ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, সোডিয়াম, ভিটামিন সি ও এ পাওয়া যাবে। চর্বি ও ক্যালরির মাত্রা কম এবং কোলেস্টেরল নেই। 

যেসব ক্ষেত্রে পুদিনার পাতা ব্যবহার করা যায়, তা হলো-
– পুদিনার পাতা পিষে রস করে তার ভেতর দু’তিন ফোঁটা লেবুর রস দিয়ে তা পান করলে ক্লান্তিভাব দূর হয়।
– পুদিনার তাজা পাতা পিষে মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ পর যদি তা ধুয়ে ফেলা যায়, তাহলে মুখের তৈলাক্ত ভাব দূর হয়ে যায়। ব্রণ ওঠাও বন্ধ হয়।
– কোনো কারণে কেউ অজ্ঞান হয়ে পড়লে তার নাকের কাছে কিছু তাজা পুদিনা পাতা ধরুন। দেখবেন,  জ্ঞান ফিরে এসেছে।
– শরীরের ব্যথা দূর করতে পুদিনা পাতার চা খুব কাজে দেয়।
– মাথা ও পেট ব্যথা নিরাময়েও পুদিনার পাতা খুব উপকারী।
– যাদের মাঝে মধ্যে হেঁচকি ওঠে, তারা পুদিনা পাতার সঙ্গে গোল মরিচ পিষে তা ছেঁকে নিয়ে রসটুকু পান করুন। দেখবেন হেঁচকি বন্ধ হয়ে গেছে।
– পুদিনার পাতা ভালো করে পিষে তার রস ভালো করে মাথায় ব্যবহার করুন। যাদের চুলে উঁকুন আছে তারা খুব উপকার পাবেন।
এছাড়া-
– ব্যথানাশক হিসেবে পুদিনার বিশেষ খ্যাতি আছে। 
– স্নায়ু শান্ত করতে কাজে দেয়। 
– মেছতার প্রথম অবস্থায় পেঁপের সঙ্গে বেটে পুদিনা পাতা লাগালে ব্যথা হয় না।
– ব্রণ দূর করতে পুদিনা পাতা বেটে ত্বকে লাগিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে।
– পুদিনা শরীরে ক্যানসারের কোষ বৃদ্ধিতে বাধা দিয়ে ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়তা করে।
– হজমের সমস্যা এবং পেটের ব্যথায় পুদিনা পাতার চা খেতে পারেন। এর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এ ক্ষেত্রে কাজে দেয়।
– অ্যাজমা ও কাশির সমস্যায় তাৎক্ষণিক কাজ করে। এর রস শ্বাসপ্রশ্বাসের নালি খুলে দেওয়ার কাজে সহায়তা করে। গরম পানিতে পুদিনা পাতা ফুটিয়ে ভাপ নিলে এবং গার্গল করলে উপকার পাওয়া যায়।
– শরীর ঠান্ডা রাখতে গোসলের পানিতে পুদিনা পাতা ফেলে রেখে ১৫ মিনিট পর গোসল করুন। সতেজতা বাড়াবে।
– প্রখর রোদ থেকে ঘরে ফিরে পুদিনা ও ঘৃতকুমারীর রস মিশিয়ে ত্বকে লাগালে ত্বকের পোড়া ভাব চলে যায়। ত্বকের তৈলাক্ত ভাব কমাতে তাজা পুদিনা পাতা বেটে ত্বকে লাগাতে পারেন।

গরমে পুদিনা পাতার লাচ্ছি
গরমের এ সময়ে চারপাশে শুধু ফল আর ফল। গরমকালে একটু কষ্ট বেশি হলেও ফল খেয়ে মানুষ সে কষ্টের কথা ভুলে যায়। এ সময়টার জন্য সবাই সারা বছর অপেক্ষা করে। মানুষ গরমে হালকা খাবার বা ফলের জুস খেতে বেশি পছন্দ করে। এসবের মধ্যে যদি পুদিনা পাতার জুস হয় তাহলেতো কথাই নেই।

উপকরণ
শুরুতে ১ কাপ টকদই, ১ টেবিল চামচ গুঁড়ো দুধ, আধা কাপ পুদিনা পাতা বাটা/গোটা, পরিমাণ মতো বরফ, বিটনুন, চিনি, এক চিমটি গোলমরিচ গুঁড়ো
নেবেন।

প্রণালী
এরপর গ্রাইন্ডারে টক দই, ১ টেবিল চামচ গুঁড়ো দুধ, পুদিনা পাতা বাটা (গোটাও দিতে পারেন), বরফ কুচি, পরিমাণমতো নুন, চিনি ও এক চিমটি গোলমরিচ গুঁড়ো দিয়ে ভালো করে গ্রাইন্ডারে মিশ্রিত করুন। প্রয়োজন হলে অল্প একটু পানি মিশিয়ে দিন।

মিশ্রণটি ভালো করে তৈরি হয়ে গেলে কাঁচের গ্লাসে পরিবেশন করুন। পরিবেশনের আগে লস্যির উপরে একটি করে পুদিনা পাতা ও চেরি দিয়ে পরিবেশন করতে পারেন।

পুদিনা পাতা আমাদের শরীরে নানান উপকারে লাগে। কিন্তু, আমরা অনেকেই হয়তো এর উপকারিতা সম্পর্কে অবগত নই। আপনিও যদি না জেনে থাকেন তবে দেখে নিন-

১) পুদিনা পাতায় থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট পেটের যেকোনও সমস্যার সমাধান করতে সাহায্য করে।
২) গরমকালে শরীরকে ঠান্ডা রাখতে পুদিনার রস খুব ভাল। তাই দই মিশ্রিত এই রেসিপিটি অনায়াসেই খেতে পারেন।
৩) পুদিনা পাতার রস ত্বকের যেকোনও সংক্রমণকে ঠেকাতে অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে।
৪) বহু বিজ্ঞানীদের মতে, পুদিনা পাতার পেরিনিয়াল অ্যালকোহল ফাইটোনিউট্রিয়েন্টের একটি উপাদান, যা দেহে ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধিতে বাধা সৃষ্টি করে।
৫) হজম শক্তি বৃদ্ধি করতেও সাহায্য করে।
৬) টাইফয়েড, নিউমোনিয়া প্রতিরোধ করে। তথ্যসূত্র: বোল্ডস্কাই।

সর্বশেষ সংবাদ

মহানবী (সা.) রওজা শরিফ জিয়ারতে সৌদি আরবের নতুন নির্দেশনা

এখন থেকে মহানবী মুহাম্মদ (সা.) এর রওজা শরিফ জিয়ারতের জন্য আগাম অনুমতি নিতে হবে বলে জানিয়েছে সৌদি সরকার। দেশটির...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ