স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ভারত থেকে নিয়মিত আমাদের যে অক্সিজেন আসত, সেটি গত এক সপ্তাহ ধরে বন্ধ করে দিয়েছে দেশটির সরকার। তবুও আমাদের কোনো সমস্যা হচ্ছে না। আমাদের যে অক্সিজেন আছে, এটাই আমাদের জন্য যথেষ্ট।
বুধবার (২৮ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় ১৫০ শয্যার অ্যাজমা সেন্টারকে করোনা হাসপাতাল হিসেবে উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে (ভার্চুয়াল) যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, আমরা লিক্যুইড অক্সিজেন ব্যবহার করেছি, পাশাপাশি আমরা এখন গ্যাস অক্সিজেনের ব্যবহারের ব্যবস্থা করেছি। আমরা লিক্যুইড অক্সিজেন আরও বেশি করে মজুত করারও ব্যবস্থা করেছি। এখনও আমরা ভালো আছি। কিন্তু আমরা চাই না, রোগীর সংখ্যা তিনগুণ বেড়ে যাক। তখন আমরা সামাল দিতে সমস্যায় পড়ে যাব।
তিনি বলেন, ভারত এত বড় ও শক্তিশালী রাষ্ট্র, কিন্তু আজ ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলছেন, করোনাভাইরাস তাদেরকে নাড়িয়ে দিয়েছে। এত বেশি রোগী যদি হয়ে যায়, তাহলে তো কোনো রাষ্ট্রের পক্ষেই সম্ভব নয় এটাকে নিয়ন্ত্রণ করা। তাদের অক্সিজেন, ওষুধ এবং হাসপাতালগুলোতে শয্যার অভাব হয়ে গেছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি, বেবিট্যাক্সিতে ওখানকার (ভারত) হাসপাতালের সামনে রোগীরা অক্সিজেন নেওয়ার চেষ্টা করছে, সেখানেই মারা যাচ্ছে। তারা হাসপাতালের ভেতরেও ঢুকতে পারছে না। আল্লাহর রহমতে আমাদের দেশে এই ধরনের ঘটনা ঘটেনি।
জাহিদ মালেক বলেন, আমাদের দেশে প্রত্যেকটা রোগীকে হাসপাতালে জায়গা দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে বেসরকারি হাসপাতালগুলো আমাদেরকে সহযোগিতা করেছে। শুরুতে তাদের এক হাজার শয্যা থাকলেও পরবর্তী সময়ে সেটিকে তারা দুই হাজার শয্যা করেছে। আমরাও সরকারিভাবে ছয় থেকে সাত হাজার শয্যার ব্যবস্থা করেছি। কিন্তু এভাবে যদি রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে, তাহলে তো একটা পর্যায়ে সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে যাবে।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের সংক্রমণের হার কমে আসছে। গত সপ্তাহে সংক্রমণের হার ২৪-এ উঠেছিল। এখন তা কমে ১২/১৩-তে নেমেছে। এটা আমাদের জন্য আশার আলো। আমরা চাই এটা আরও কমে আসুক। এই সময়ে যদি আমরা সবাই মিলে একযোগে কাজ করি, তাহলে আমরা করোনাকে প্রতিরোধ করতে পারব।
তিনি বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কাজ করছি। ওনার পরামর্শ নিয়ে কাজ করছি। তিনি টিকার জন্যও কাজ করছেন। স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। আমরা সেইভাবে কাজগুলো করে যাচ্ছি।
বিধিনিষেধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা লকডাউন দিয়েছি, কিন্তু আমাদের তো ১৭ কোটি মানুষ রয়েছে। এখানে অনেক মানুষ দরিদ্র। লকডাউন দিলে তো তাদের জন্য চলতে সমস্যা হয়ে যায়। সুতরাং লকডাউন আমাদের জন্য একমাত্র সমাধান নয়। কিন্তু দীর্ঘ সময় মাস্ক পরতে পারি, দূরত্ব বজায় রাখতে পারি। এ কাজটি আমরা যেখানেই যাই না কেন, সেখানে করতে পারি। তাহলে করোনা নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। পাশাপাশি টিকাও একটি বড় বিষয়।
টিকা প্রসঙ্গে মন্ত্রী আরও বলেন, অনেকদিন হলো আমরা টিকা কার্যক্রম শুরু করেছি। এখনও আমরা টিকা দিচ্ছি। কিন্তু এখন যেহেতু আমাদের সোর্স থেকে ঠিকমতো টিকা পাচ্ছি না, সেই কারণে নতুন কোনো সোর্স খুঁজেছি। ইদানীং আপনারা জানেন, রাশিয়ার স্পুটনিক-৫ টিকার বিষয়েও আমরা একটি আশ্বাস পেয়েছি। তারা আমাদেরকে টিকা দেবে এবং আমাদের দেশে তৈরি করবে। চীন থেকেও আমরা একই রকমের আশ্বাস পেয়েছি, তারাও আমাদের টিকা দেবে এবং বাংলাদেশে তৈরি করবে। এই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি তবে এগুলো দীর্ঘমেয়াদি এটা কবে শেষ হবে এটা বলা খুবই মুশকিল।