পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি বলেছিলেন যে, ১৯১৫ সালে ওসমানীয় সাম্রাজ্যের দ্বারা আর্মেনিয়ানদের গণহত্যা নিয়ে তুরস্কের অবস্থানকে ইসলামাবাদ সমর্থন করে। রোববার তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত ক্যাভুসোগলুর সাথে ফোনালাপের সময় এই মন্তব্য করেন কুরেশি।
এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জাহিদ হাফিজ চৌধুরী বলছেন, পাকিস্তান বিশ্বাস করে যে ‘একতরফা দৃষ্টিভঙ্গি এবং ঐতিহাসিক ঘটনাবলির রাজনৈতিক শ্রেণিবিন্যাস’ আসল ঘটনাকে দুর্বল করতে পারে এবং দেশগুলির মধ্যে মেরুকরণের কারণ হতে পারে। তিনি বলেন, ‘এই বিষয়টিতে সত্যতা যাচাই করার জন্য সকলকে নিয়ে একটি যৌথ ইতিহাস কমিশন গঠনে তুরস্ক যে প্রস্তাব দিয়েছে, তা আমরা প্রশংসা সহকারে নোট করছি।’ বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, আজারবাইজান এবং নাগর্ণো-কারাবাখের সংঘর্ষে আর্মেনিয়ার ভূমিকার সাথে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকার কারণে আর্মেনিয়াকে রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি না দেয়া বিশ্বের একমাত্র দেশ হচ্ছে পাকিস্তান।
এরপর তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় টুইট করে বলে, ‘ভাতৃসম পাকিস্তানকে ধন্যবাদ! তুরস্ক-পাকিস্তানের বন্ধুত্ব দীর্ঘজীবী হোক!’ এর আগে গত শনিবার, প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসাবে অটোমান যুগে আর্মেনিয়ানদের হত্যা এবং নির্বাসনকে আনুষ্ঠানিকভাবে গণহত্যা হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছেন জো বাইডেন। তিনি বলেন, ‘১৯১৫ সালের ২৪ এপ্রিল থেকে ওসমানীয় কর্তৃপক্ষের অধীন কনস্টান্টিনোপলে (বর্তমানে ইস্তাম্বুল) আর্মেনিয়ান বুদ্ধিজীবী এবং সম্প্রদায়ের নেতাদের গ্রেফতারের সাথে সাথে প্রায় ১৫ লাখ আর্মেনিয়ানকে নির্বাসন, গণহত্যা, বা নির্মূলে অভিযান চালানো হয়েছিল।’
তবে অটোমান সাম্রাজ্যের উত্তরসূরি রাষ্ট্র হিসাবে তুরস্ক নিয়মিতভাবে আর্মেনিয়দের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। ডেইলি সাবাহ অনুসারে, তুরস্কের অবস্থান হ’ল পূর্ব আনাতোলিয়ায় কয়েকজন আর্মেনিয়ান যখন অটোম্যানদের বিরুদ্ধে আক্রমণকারী রাশিয়ান বাহিনীর পক্ষ নিয়েছিল তখন নিহত হয়েছিল। তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘২৪ এপ্রিল উগ্র আর্মেনিয়ান চেনাশোনা ও তুরস্কবিরোধী গোষ্ঠীর চাপের মধ্যে ১৯১৫ সালের ঘটনা সম্পর্কে মার্কিন প্রেসিডেন্টের বক্তব্যকে আমরা কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান ও নিন্দা করি।’
‘শব্দগুলি ইতিহাস পরিবর্তন বা পুনর্লিখন করতে পারে না,’ টুইটারে কভুসোগলু বলেছিলেন, ‘তুরস্কের নিজের অতীত সম্পর্কে কারও কাছ থেকে শেখার কিছুই নেই।’ সূত্র: মিডল ইস্ট মনিটর।