কোভিড-১৯ ভাইরাসের জীবাণু অন্য যেকোনো মাধ্যমের চেয়ে বায়ুর মাধ্যমেই বেশি ছড়ায় বলে নতুন এক গবেষণায় প্রমাণ পেয়েছে। গত ১৫ এপ্রিল মেডিকেল জার্নাল ল্যানসেটে প্রকাশিত এক নিবন্ধে এতথ্য জানানো হয়।
যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার ছয় সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ দল গবেষণাটি পরিচালনা করেন। গবেষকদের লেখা ওই পর্যালোচনামূলক ওই নিবন্ধে ১০ টি কারণ দেখানো হয়েছে যার মাধ্যমে বোঝানো যায় যে, আলোচিত এই ভাইরাসটি বায়ুর মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে। একইসঙ্গে গবেষণাপত্রটির উপসংহারে কোভিড-১৯ মোকাবেলায় গৃহিত ব্যবস্থাবলী নতুনভাবে ঢেলে সাজানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ছয় বিশেষজ্ঞের একজন কোঅপারেটিভ ইনস্টিটিউশন ফর রিসার্চের রসায়নবিদ ও কোলোরাডো বোল্ডার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জোস-লুইস জিমনেজ বলেন, ‘এটি যে বায়ুবাহিত রোগ তার পক্ষে দৃঢ় প্রমাণ পাওয়া গেছে। সে তুলনায় বড় আকারের ড্রপলেটের মাধ্যমে সংক্রমণের প্রমাণ নিতান্তই কম।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও অন্যান্য সংস্থাগুলোর উচিত কোভিড প্রতিরোধে গৃহীত ব্যবস্থা পর্যালোচনা করা। সংক্রমণ প্রতিরোধে যে ব্যবস্থাগুলো নেওয়া হয়েছে, খুঁজে পাওয়া নতুন তথ্যের আলোকে তা নতুনভাবে সাজানো। ’
গবেষণায় লব্ধ তথ্যের ভিত্তিতে দেখানো হয়েছে, কোভিড-১৯ সংক্রমণের হার ঘরের বাইরের তুলনায় ভেতর অনেক বেশি। তবে, ভেতরে সুষ্ঠু বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা করা হলে এর সংক্রমণ ব্যাপকভাবে কমে যায়।
গবেষণাটি বলছে, উপসর্গহীন ব্যক্তি, যাদের কাশি বা হাঁচি নেই, তারাও অন্যদের সংক্রমিত করতে পারেন। মোট সংক্রমণের অন্তত ৪০ শতাংশই উপসর্গহীনদের মাধ্যমে হয়ে থাকে।
যদি সংক্রামক ভাইরাসটি প্রাথমিকভাবে বায়ুবাহিত হয়, তবে করোনা রোগীর শ্বাস-প্রশ্বাস, কথা বলা, চিৎকার করা, গান গাওয়া বা হাঁচি দেওয়ার সময় অন্যরা যদি একই বাতাসে শ্বাস নেয়, তবে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি আছে।
ভাইরাসটির দ্রুত সংক্রমণ রোধে বিশেষজ্ঞ দলটির পরামর্শ হচ্ছে, ঘরে সুষ্ঠু বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা করা, বায়ু পরিস্রাবণ, ভিড় কমানো, আবদ্ধ ঘরে কম থাকা, বাড়ির অভ্যন্তরে থাকলে মাস্ক পরা, মাস্কের গুণগত মান যাচাই করে নেওয়া, মুখের আকারের সঙ্গে সঠিক মাপের মাস্ক পরা ও সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি আছে এমন ব্যক্তিদের সংস্পর্শে কাজ করার সময় স্বাস্থ্যসেবা ও অন্যান্য কর্মীদের জন্য ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামের (পিপিই) ব্যবস্থা করা।