করোনা মহামারিতে ভয়াবহ সংকটের মুখে পড়া ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে। এমন পরিস্থিতিতে সোমবার দিল্লিতে আগামী এক সপ্তাহের জন্য লকডাউন জারি করেছে রাজ্য সরকার। হাসপাতালগুলো করোনা রোগীতে পরিপূর্ণ হওয়ায় অক্সিজেনের চরম সংকটও দেখা দিয়েছে দিল্লিতে।
এমন পরিস্থিতিতে সোমবার মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের নেতৃত্বাধীন সরকার দিল্লি থেকে অক্সিজেনের সরবরাহ রাজ্যের বাইরে স্থগিত রাখতে আদালতের দ্বারস্থ হয়। সোমবার দিল্লির হাই কোর্ট রাজ্য থেকে অক্সিজেনের সরবরাহ অন্য কোনো রাজ্যে সরবরাহ স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, দিল্লি প্রশাসন আজ হাইকোর্টকে অবগত করেছে যে, তারা কেন্দ্রের কাছ থেকে প্রতিদিন গড়ে ৭০০ মেট্রিক টন অক্সিজেন চেয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার দিনে ৩০০ মেট্রিক টন করে অক্সিজেন দিতে রাজি হয়েছে। যা আগামীকাল থেকে সরবরাহ শুরু হবে। তবে দিল্লি প্রশাসন আরো বেশি অক্সিজেন চায়।
তবে কোন রাজ্যে অক্সিজেন সরবরাহ করা হচ্ছে জানতে চাইলে আদালতের কাছে সঠিক জবাব দিতে পারেননি অরবিন্দ কেজরিওয়াল সরকারের নিয়োজিত আইনজীবী। আদালত বলেছেন, এটি নিয়ে রাজনীতি হতে পারে।
আদালতের বিচারকরা বলেন, আমরা দিল্লির সরকার এবং হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী এম/এস ইনোক্সকে অক্সিজেন সরবরাহ অব্যাহত রাখার নির্দেশ দিচ্ছি। এছাড়া অবিলম্বে নয়াদিল্লি প্রশাসনের কাছে ১৪০ মেট্রিক টন অক্সিজেন সরবরাহ করারও নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।
করোনা রোগীর চাপ শামলাতে হিমশিম খাওয়া দিল্লির স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার উপক্রম হওয়ায় সোমবার রাত ১০টা থেকে আগামী এক সপ্তাহের জন্য লকডাউন জারির ঘোষণা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তিনি বলেন, ‘যদি এখনই লকডাউন জারি করা না হয়, সেক্ষেত্রে আমাদের অনেক বড় দুর্যোগের মুখে পড়তে হবে। সরকার সবসময়ই আপনাদের পাশে আছে। নিতান্ত বাধ্য হয়েই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
‘তবে সংকট যে চলছে— এটা সত্য। যে কোনো ব্যাবস্থারই একটা সীমা থাকে এবং বর্তমান পরিস্থিতিতে সেটি প্রায় অতিক্রম হওয়ার মতো অবস্থায় পৌঁছেছি আমরা।’
দিল্লিতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন ২৫ হাজার ৪৬২ জন। করোনার অন্যতম কেন্দ্র হয়ে ওঠা এই রাজ্যে শনাক্তের হার প্রায় ৩০ শতাংশ। এর আগে, গতকালও দিল্লিতে ২৪ হাজার ৩৭৫ জনের করোনা শনাক্ত হয় এবং মারা যান ১৬৭ জন।