করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ ফের চিন্তায় ফেলেছে মানুষকে। টিকাদান কর্মসূচির মাধ্যমে এক বছরের বেশি সময় ধরে চলতে থাকা মহামারিতে সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা কমে আসায় মানুষ একটু স্বস্তি পেয়েছিল। কিন্তু এপ্রিলের শুরু থেকে আবারও বাড়তে শুরু করেছে সংক্রমণ। সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে করোনার স্পষ্ট প্রভাবের বিষয়টি স্বীকৃত হলেও মানুষের মানসিক অবস্থার ওপরও মহামারির প্রভাব একেবারে কম নয়।
আর তাই তো এই খরাপ সময়ে মানুষকে আরও শক্ত হতে হবে। বাড়াতে হবে মনের জোর। আর ঠিক এই কাজটিই করেছেন ভারতের গুজরাট রাজ্যের বারোদা শহরের পারুল সেবাশ্রম হাসপাতালের চিকিৎসকরা। করোনায় আক্রান্ত রোগীদের মনের জোর বাড়াতে তারা গানের তালে তালে নেচেছেন। সম্প্রতি এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এরপরই আলোচনায় এসেছেন ওই চিকিৎসকরা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, বারোদার পারুল সেবাশ্রম হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীরা। করোনার নতুন ধরনে আক্রান্ত হওয়ায় তাদের সকলেই মনের জোর অনেকটাই কমে গেছে। রোগীদের মধ্যে এমন অনেক বয়স্ক মানুষ রয়েছেন, যাদের অনেকে বিছানা থেকে উঠতে পারছেন না।
কিছু যুবককেও এই হাসপাতালে ভর্তি থাকতে দেখা গেছে। তাদের সকলের মনের জোর গিয়ে ঠেকেছে তলানিতে। কিন্তু তা কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলেন না হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স থেকে শুরু করে অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীরা। এরপর তারা যা করলেন, তা আসলে মনে করিয়ে দিচ্ছে গত বছরের করোনার স্মৃতি।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, পার্সোনাল প্রোটেকশন ইক্যুইপমেন্ট (পিপিই) কিট পরে ডাক্তাররা রোগীদের সামনে গিয়ে নাচ করছেন। ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজছে ‘জো ভি হোগা দেখা যায়েগা’ যার অর্থ- ‘যাই হোক সেটা পরে দেখা যাবে’ গান। আর সেই গানের তালে নাচছেন ডাক্তাররা।
বিছানায় শুয়ে শুয়েই হাত নাড়ছেন বয়স্ক নারীরা। বসে বসে তালে তাল মেলাচ্ছেন বৃদ্ধরাও। সকলেই যেন এই গান ও নাচে নতুন করে প্রাণশক্তি ফিরে পেয়েছেন। অনলাইনে ভাইরাল হওয়া এই ভিডিওটি দেখে চোখে পানি এসেছে অনেকরই।
আবার ওই হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মী থেকে ডাক্তারদের প্রশংসায় মেতেছেন সবাই। ভিডিওটি প্রথমে ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করা হয়। শেয়ার হতেই দ্রুততার সঙ্গে সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। তবে এই ধরনের ভিডিও গত বছর করোনা মহামারির প্রথম দিকে বেশ কিছু দেখা গিয়েছিল। বারোদার এই হাসপাতালের দৃশ্য যেন আবারও সেই স্মৃতিই ফিরিয়ে আনল।