জার্মানিতে সাধারণ নির্বাচনের সময় এগিয়ে আসছে। সব দলই আনুষ্ঠানিক প্রচার পর্বের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর পর আর চ্যান্সেলর প্রার্থী হচ্ছেন না আঙ্গেলা ম্যার্কেল। যদিও তার শিবির এখনো উত্তরসূরি বাছাইয়ের কাজ শেষ করতে পারেনি।
আগামী সেপ্টেম্বরের সাধারণ নির্বাচনে চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী হিসেবে কে ভোটারদের সামনে হাজির হবেন, তা এখনো জানা যায়নি। এমন চাপের মুখে ইউনিয়ন শিবিরের দুই দলের নেতা অবশেষে জানালেন যে, তারা এই ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে প্রস্তুত।
ম্যার্কেলের সিডিইউ দলের সদ্য নির্বাচিত শীর্ষ নেতা ও নর্থরাইন ওয়েস্টফেলিয়া রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আরমিন লাশেট যে চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী হতে আগ্রহী, তা মোটামুটি স্পষ্ট হয়ে উঠছিল। যদিও বাভেরিয়ার সিএসইউ দলের শীর্ষ নেতা ও সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মার্কুস স্যোডার এতকাল সে বিষয়ে নীরব ছিলেন। অবশেষে দুই নেতাই খোলাখুলি ম্যার্কেলের শূন্যস্থান পূরণের আগ্রহ দেখালেন। আগামী দশ দিনের মধ্যেই বিষয়টির নিষ্পত্তি হবে বলে স্যোডার আশা প্রকাশ করেন। খবর ডয়চে ভেলের।
চলমান করোনা মহামারি সংকট সামলাতে সরকারের যাবতীয় ব্যর্থতার কারণে ইউনিয়ন শিবিরের জনপ্রিয়তা তলানিতে ঠেকেছে। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে লাশেট লকডাউন যতটা সম্ভব শিথিল রাখার চেষ্টা চালিয়েও জনসমর্থন পাচ্ছেন না। অন্যদিকে দল, শিবির ও ভোটারদের কাছে স্যোডারের জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে।
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কমাতে স্যোডার ধারাবাহিকভাবে কড়া নীতির পক্ষে অটল থেকেছেন। স্যোডার অবশ্য বলেছেন, যে শেষ পর্যন্ত তাদের মধ্যে যেই শিবিরের চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী হোন না কেন, বিভাজন ভুলে সম্মিলিত শক্তি নিয়ে নির্বাচনের আসরে নামতে হবে। আগামী নির্বাচনের পরেও চ্যান্সেলর পদ ধরে রাখা শিবিরের প্রধান লক্ষ্য।
জনমত সমীক্ষায় স্যোডার লাশেটের তুলনায় অনেক এগিয়ে রয়েছেন। তবে চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী হতে হলে বাভেরিয়ার আঞ্চলিক দলের নেতা হিসেবে তাকে জার্মানির বাকি রাজ্যের সিডিইউ নেতাদের সমর্থন আদায় করতে হবে। অন্যদিকে লাশেট সিডিইউ দলের শীর্ষ নেতা নির্বাচিত হলেও চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী হিসেবে তার সাফল্যের সম্ভাবনা নিয়ে সংশয় বেড়ে চলেছে।
আগামী নির্বাচনের পর জোট সরকার গঠনের ক্ষেত্রে নানা সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। বিশেষ করে সবুজ দলের জনপ্রিয়তা বেড়ে চলায় যে কোনো সরকারেই শরিক হিসেবে এই দলের অংশগ্রহণ প্রায় নিশ্চিত হয়ে উঠছে। সবুজ দলও দ্রুত চ্যান্সেলর পদপ্রার্থীর নাম ঘোষণা করতে চলেছে।
সবচেয়ে বেশি আসন পেলে সেই ব্যক্তি জার্মানির প্রথম সবুজ চ্যান্সেলরও হতে পারেন। বর্তমান জোট সরকারের শরিক হিসেবে এসপিডি গত বছরই সেই কাজ সেরে ফেলেছে। এবার ইউনিয়ন শিবির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিলে ম্যার্কেলের সম্ভাব্য উত্তরসূরির তালিকা পূর্ণ হয়ে যাবে।