জর্ডানের রাজ পরিবারের দ্বন্দ্বের খবর এখন সারা দুনিয়ার মিডিয়ায় হট আইটেম। তবে জর্ডানে সেই দ্বন্দ্বের খবর প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে দেশটি।
আম্মানের প্রসিকিটর জেনারেল জানিয়েছেন, এই নিষেধাজ্ঞার মধ্যে রয়েছে সকল অডিওভিজুয়াল মিডিয়া এবং সামাজিক নেটওয়ার্ক। অর্থাৎ কোনো প্রকার অডিও-ভিজুয়াল মিডিয়া কিংবা সামাজিক যোগাযোগ নেটওয়ার্কে রাজ পরিবারের দ্বন্দ্বের কোনো খবর প্রকাশ করা যাবে না।
বিগত কয়েকদিন রাজ পরিবারের দ্বন্দ্ব সামনে আসার পর জর্ডান সরকার এই সিদ্ধান্ত নিল।
প্রসঙ্গত, সাবেক ক্রাউন প্রিন্স হামজা গত শনিবার তাকে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে এমন অভিযোগ করেন। অন্যদিকে, জর্ডানের উপ-প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, প্রিন্স হামজা বিদেশিদের সহযোগে দেশের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নষ্টের ষড়যন্ত্র করেছেন। যদিও সাবেক ক্রাউন প্রিন্স হামজা এই অভিযোগ অস্বীকার করেন। এরপর একেরপর এক জর্ডানের রাজপরিবারের দ্বন্দ্বের খবর সামনে আসতে থাকে।
জর্ডানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, জর্ডানের প্রসিকিউটর জেনারেল রাজধানী আম্মানে বাদশাহ দ্বিতীয় আব্দুল্লাহর সৎভাই হামজার সন্দেহজনক ষড়যন্ত্র সম্পর্কে যে কোনো তথ্য প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
এক বিবৃতিতে প্রসিকিউটর হাসান আল-আব্দাল্লাত বলেন, প্রিন্স হামজার বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বাহিনীর তদন্ত এবং অন্য গোপনীয়তার স্বার্থে তদন্ত সংক্রান্ত সকল বিষয়ে তথ্য প্রকাশে নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এর আগে গতকাল সোমবার প্রিন্স হামজা জর্ডানের শাসক বাদশাহ দ্বিতীয় আব্দুল্লাহর প্রতি আনুগত্যের অঙ্গিকার করেন।
সোমবার জর্ডানের রয়্যাল কোর্ট জানায় এক চিঠিতে প্রিন্স হামজা বলেছেন, আমি আমাকে মহিমান্বিত রাজার হাতে সমর্পণ করলাম। আমি জর্ডানের হাসেমি রাজ্যের সংবিধানের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবো। আমি মহিমান্বিত রাজা এবং তার ক্রাউন প্রিন্সের প্রতি সর্বদা সহায়তা ও সমর্থন করব।
প্রিন্স হাসান, বাদশার চাচা এবং অন্যান্য প্রিন্সের সঙ্গে সাক্ষাতের পর জর্ডানের সাবেক প্রিন্স হামজা ওই চিঠি লেখেন। জর্ডানের শাসক বাদশাহ দ্বিতীয় আব্দুল্লাহ রাজদ্বন্দ্ব মিটমাটের জন্য মধ্যস্থতায় রাজী হন।
ওই চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, সবার ওপরে জন্মভূমি তথা দেশের স্বার্থ প্রাধান্য থাকবে। জর্ডান এবং দেশের জাতীয় জাতীয় স্বার্থ রক্ষার জন্য আমরা সবাই অবশ্যই রাজা এবং তার প্রচেষ্টাকে সমর্থন করব।
প্রিন্স হামজা জর্ডানের সাবেক ক্রাউন প্রিন্স। তার সৎ ভাই দেশটির বর্তমান শাসক বাদশাহ দ্বিতীয় আব্দুল্লাহ ২০০৪ সালে তার ক্রাউন প্রিন্স খেতাব কেড়ে নেন। এরপর রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি এবং কর্তৃত্ববাদীতার অভিযোগ করেন।