আল্লাহ তায়ালা নামাজকে বান্দার জন্য এক ফরজ বিধান বা ইবাদত করে দিয়েছেন। প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলিমের জন্য আবশ্যক বা ফরজ। নামাজ ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভের একটি। ঈমানের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল নামাজ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর পক্ষ থেকে বার বার নামাজের তাগিদ পেয়েছেন। কুরআনে পাকে আল্লাহ তাআলা বিভিন্ন জায়গায় সরাসরি ৮২ বার সালাত শব্দ উল্লেখ করে নামাজের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। নামাজ বেহেস্তের চাবি। পবিত্র কোরআনের অসংখ্য আয়াতে ‘ইকামাতে সালাত’ তথা নামাজ কায়েমের নির্দেশ রয়েছে। যার অর্থ হচ্ছে নামাজকে তার যাবতীয় হকসহ আদায় করা। রুকু-সেজদা পূর্ণরূপে আদায় করা, কোরআন তেলাওয়াত সুন্দরভাবে করা এবং খুশু-খুজুর সঙ্গে নামাজ পড়া। গুরুত্বপূর্ণ এই ইবাদতটি করার সময় প্রায়ই আমাদের ভুল হয়ে যায়। নামাজে রাকাত সংখ্যা ভুলে যাওয়া অনেকের ক্ষেত্রে বার বার হয়ে থাকে।
সেক্ষেত্রে করণীয় সম্পর্কে প্রিয় নবী (সা.) দিয়েছেন সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনা।
হাদিসে এসেছে-
হজরত ইয়াজ ইবনে হিলাল বর্ণনা করেন আমি হজরত আবু সাঈদ (রা.)কে বললাম, আমাদের কারো যদি খেয়াল না থাকে যে, সে কতটুকু (রাকাআত) নামাজ আদায় করল, তবে সে কী করবে?
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমাদের কারো সালাত (নামাজ) আদায়কালে যদি কত রাকাআত পড়েছে, সে খেয়াল না থাকে, তবে সে (শেষ বৈঠকে) বসা অবস্থায় দুই সেজদা (সাহু) দেবে।’ (তিরমিজি)
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, ‘রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমাদের কারো কারো সালাত আদায়কালে শয়তান আসে এবং সালাতের বিষয়ে সন্দেহে ফেলে দেয়। ফলে সে (সালাত আদায়কারী) বুঝতে পারে না কত রাকাআত (সালাত) আদায় করলো। তোমাদের কারো যদি এ রকম কিছু হয়, তবে (শেষ বৈঠকে) বসা অবস্থায় সে যেন দুই সেজদা (সাহু) আদায় করে।’ (তিরমিজি)
এ অবস্থায় করণীয় সম্পর্কে প্রিয় নবী (সা.) এর ঘোষণা-
হজরত আবদুর রহমান ইবনে আওফ (রা.) বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (সা.) কে বলতে শুনেছি, তোমাদের কারো যদি সালাতে (নামাজে) ভুল হয়ে যায়। ফলে সে এক রাকাআত পড়ল না দুই রাকাআত পড়ল, তা যদি বুঝতে না পারে, তবে সে যেন এক রাকাআতকেই ভিত্তি হিসেবে ধরে নেয়।
এমনিভাবে দুই রাকাআত পড়ল না তিন রাকাআত পড়ল, তা যদি বুঝতে না পারে, তবে সে যেন দুই রাকাআতকে ভিত্তি হিসেবে ধরে।
আর যদি তিন রাকাআত পড়ল না চার রাকাআত তা যদি বুঝতে না পারে, তবে সে যেন তিন রাকাআতকে ভিত্তি হিসেবে ধরে। (এ সব ক্ষেত্রে) সে যেন সালামের আগে দুই সেজদা (সাহু) করে নেয়।
হাদিসের অন্য বর্ণনায় এসেছে, প্রিয় নবী রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমাদের কারো যদি এক রাকাআত না দুই রাকাআত (নামাজ পড়েছ) এ বিষয়ে সন্দেহ হয়, তবে এক রাকাআত ধরবে; আর যদি দুই রাকাআত না তিন রাকাআত এই বিষয়ে সন্দেহ হয়, তবে দুই রাকাআত ধরবে এবং এই কারণে সালাম ফেরনোর আগে দুই সিজদা (সাহু) আদায় করবে।