বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা বিনিয়োগকারী, উদ্যোক্তা, দক্ষ কর্মী ও পর্যটক টানতে নতুন দু’টি ভিসা প্রণয়ন করেছে মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত। এগুলো হলো রিমোট ওয়ার্ক ভিসা ও মাল্টিপল এনট্রি ট্যুরিস্ট ভিসা। রোববার সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রধানমন্ত্রী ও ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং দেশটির রাজধানী দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম এক টুইটবার্তায় এই তথ্য জানিয়েছেন।
দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, মহামারি পরবর্তী বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে আমিরাতের অর্থনীতি পুনর্গঠনে মন্ত্রিপরিষদ পর্যায়ের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় রোববার। সেই বৈঠকেই এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
বৈঠক শেষে টুইট বার্তায় শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম বলেন, ‘রিমোট ওয়ার্ক ভিসার আওতায় পৃথিবীর যে কোনো প্রান্ত থেকে বিদেশি কর্মীরা ইউএইর প্রতিষ্ঠানগুলোতে কাজ করতে পারবেন। আমিরাতের কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতে হলে আমিরাতেই আসতে হবে, এ ভিসার মাধ্যমে সেই বাধ্যবাধকতা শিথিল করা হলো।’
‘বিশ্বের সমস্ত দেশের যেসব নাগরিক ইউএইতে পর্যটনের উদেশ্যে আসতে চান, তাদেরকে মাল্টিপল এনট্রি ট্যুরিস্ট ভিসা দেওয়া হবে। এই ভিসার মেয়াদ হবে পাঁচ বছর। অর্থাৎ পর্যটকদের কেউ যদি একবার এই ভিসা পান, পরবর্তী পাঁচ বছর পর্যন্ত যে কোনো সময় তিনি আমিরাতে আসতে পারবেন।’
আমিরাতের সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রিমোট ওয়ার্ক ভিসার মেয়াদ হবে এক বছর। এক বছরের মধ্যে যে কোনো সময় এই ভিসাধারীরা যেতে পারবেন দেশটিতে। অন্যদিকে, চলতি বছর জানুয়ারি থেকে পর্যটকদেরকে এক বছরের মাল্টিপল ভিসা দেওয়া শুরু করেছিল আমিরাত। রোববারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তা বাড়িয়ে ৫ বছর করা হয়েছে।
তবে মাল্টিপল ট্যুরিস্ট ভিসার আওতায় যারা দেশটিতে যাবেন, তাদের কারো যদি আমিরাতে একটানা দীর্ঘদিন থাকতে হয়, সেক্ষেত্রে ৯০ দিন পরপর ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আবেদন করতে হবে সেসব পর্যটকদের।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক খাত হলো বাণিজ্যিক পর্যটন। গত বছর করোনা মহামারির কারণে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছিল এই খাতটি। তবে নতুন এই ভিসা প্রণয়নের ফলে খুব দ্রুত এই খাত ঘুরে দাঁড়াতে পারবে বলে মনে করছে এই খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিমালিকানাধীন পর্যটন সংস্থাগুলো।
এরকম একটি পর্যটন সংস্থা স্মার্ট ট্রাভেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফি আহমেদ আমিরাতের সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমসকে বলেন, ‘অনেক পর্যটক আছেন, যাদের নিয়মিত এদেশে আসতে হয়। এদেশে বসবাসকারী আত্মীয়স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে দেখা করতেই নিয়মিত আসেন তারা। এই ভিসানীতি যদি কার্যকর হয়, সেক্ষেত্রে তারা লাভবান হবেন।’
রোববারের টুইটবার্তায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রধানমন্ত্রী ও ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, করোনা মহামারি পরবর্তী বিশ্ব অর্থনীতিতে নেতৃস্থানীয় ভূমিকায় আসীন হওয়ার আকাঙ্ক্ষা নিয়ে চলছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। এজন্য দেশের অর্থনীতির প্রসারণ ও শক্তিশালী করার কোনো বিকল্প নেই।
টুইটবার্তায় তিনি বলেন, ‘অদূর ভবিষ্যতে বিশ্বের অর্থনৈতিক রাজধানী হবে সংযুক্ত আরব আমিরাত। আমরা সেই লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছি।’
সূত্র: খালিজ টাইমস, ইউএই