ঐতিহাসিক সফরে ইরাকের সংখ্যালঘু খ্রিস্টানদের সুরক্ষা নিয়ে দেশটির শীর্ষ শিয়া নেতার সঙ্গে আলোচনা করেছেন পোপ ফ্রান্সিস। বিবিসি লিখেছে, অন্যান্য জনগোষ্ঠীর মতো বিগত কয়েক দুই দশকে ইরাকের খ্রিস্টানরা দফায় দফায় সহিংসতার শিকার হয়েছেন।
পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে আলোচনা নিয়ে শিয়া মুসলিমদের আধ্যাত্মিক নেতা আয়াতুল্লাহ আলি আল-শিসতানির কার্যায়ল থেকে জানানো হয়েছে, আলোচনা দুই ধর্মীয় নেতা শান্তি প্রতিষ্ঠার ওপর জোরারোপ করেছেন। এর আগে ইরাকের পবিত্র শহর নাজাফে নিজ শহরে নিজের বাড়িতে পোপ ফ্রান্সিসকে অভ্যর্থনা জানান তিনি।
মহামারি প্রাদুর্ভাব শুরুর পর এই প্রথম আন্তর্জাতিক সফরে বের হয়েছেন খ্রিস্টানদের ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস। আর এবারই প্রথম তিনি ইরাক সফর করছেন। করোনাভাইরাস মহামারি ও নিরাপত্তা শঙ্কার কারণে এটাকেই তার সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সফর হিসেবে বর্ণনা করেছে বিবিসি।
এর আগে ক্যাথলিক চার্চের ৮৪ বছর বয়সী নেতা পোপ ফ্রান্সিস সাংবাদিকদের বলেন, এই ‘প্রতীকী’ যাত্রা করতে ‘কর্তব্য’ বোধ করেছেন তিনি। ইরাকে চারদিনের এই সফরে তিনি বেশ কয়েকটি স্থান পরিদর্শন করবেন।’
দুই ধর্মীয় নেতা কী আলোচনা করলেন?
২০০৩ সালে ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক আগ্রাসন শুরুর পর থেকে দেশটিতে সংখ্যালঘু খ্রিস্টানরা সহিংসতার শিকার হয়ে আসছেন। আয়াতুল্লাহ শিসতানি ‘আশ্বস্ত করেছেন যে ইরানের অন্যান্য মানুষের মতো খ্রিস্টানদেরও শান্তি ও সুরক্ষার সঙ্গে জীবযাপনের অধিকার থাকা উচিত। এটা তাদের সম্পূর্ণ সাংবিধানিক অধিকার।’
মার্কিন বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদন অনুযায়ী ইরাকের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সহিংসতার সময়ে বেশ কিছু ঘটনা নিয়ে দুর্বল ও সবচেয়ে সহিংসতার শিকার মানুষের অধিকার নিয়ে সোচ্চার হওয়ায় শিসতানির প্রশংসা করেছেন পোপ।
এই শিয়া নেতার শান্তির বার্তা দিয়ে ‘মানব জীবনের পবিত্রতা এবং ইরাকি জনগণের ঐক্যের গুরুত্ব’ নিশ্চিত করেছেন। পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে তিনি আনুমানিক ৫০ মিনিট আলোচনা করেছেন। এ সময় তার মাস্ক ছিল না।
শীর্ষ শিয়া নেতার সঙ্গে আলোচনার পর পোপ ফ্রান্সিস প্রাচীন শহর উর সফরে যাবেন। যেখানে নবী ইব্রাহীম জন্ম নিয়েছেন বলে ধারণা। নবী ইব্রাহীম ইসলাম, খ্রিস্টান ও ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের কাছে সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
পোপের ইরাক সফরে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য নিরাপত্তা বাহিনীর প্রায় ১০ হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। অপরদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে দেশটিতে ২৪ ঘণ্টার কারফিউ জারি রয়েছে।
বিবিসি লিখেছে, কিছু শিয়া মিলিশিয়া গোষ্ঠী পোপের এই সফরের বিরোধিতা করেছেন।