তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, লেখক মুশতাকের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু নিয়ে বিএনপিসহ বিশেষ মহল প্রতিদিন প্রেসক্লাবের সামনে নানা ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজনে রাজনীতির মাঠগরম করে পানি ঘোলা করতে চাইছে। কিন্তু ঘোলা করে লাভ হবে না।
বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত এক স্মরণসভায় এসব কথা বলেন হাছান মাহমুদ। সদ্য প্রয়াত অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামানের স্মরণসভায় এসব কথা বলেন তিনি।
হাছান মাহমুদ বলেন, মুশতাকের মৃত্যু নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তার মৃত্যু স্বাভাবিকভাবে হয়েছে নাকি কারা কর্তৃপক্ষের অবহেলা ছিল নাকি অন্য কোনো কারণ ছিল, সেগুলো তদন্তে বেরিয়ে আসবে। তারপর সরকার ব্যবস্থা নেবে।
এসময় বিএনপির উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমান ক্ষমতাকালীন ১৯৭৫ সালের ১৩ নভেম্বর কারাগারের অভ্যন্তরে সেনাবাহিনীর বিপথগামী সদস্যরা চার জাতীয় নেতাকে গুলি করে করেছিল। মোস্তাকের নির্দেশেই ঐ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছিল। আজ সে কথা কেউ বলে না। ১৯৭৫ সালের পর কারাগারে অসংখ্য নেতাকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল। যাদের প্রতিষ্ঠাতা সেই জিয়াউর রহমান। সেই বিএনপি এখন এগুলো নিয়ে কথা বলে।
কারাগারের যেকোনো মৃত্যু অবশ্যই অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত। মুশতাক আহমেদের মৃত্যুটাও অনভিপ্রেত। তেমনি এটি নিয়ে যেভাবে মাঠ গরম করা হচ্ছে, সেটি আরও অনভিপ্রেত বলেন তিনি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, একজনের মৃত্যুর কারণে ডিজিটাল আইন বাতিল করতে হবে, এটা তো আইনের দোষ না। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট সবাইকে ডিজিটাল নিরাপত্তা দেয়ার জন্য। অবশ্য এ আইনের যেন অপব্যবহার না হয় সেজন্য আমরা সতর্ক আছি। এর অপব্যবহার কারও কাম্য নয়। এ ব্যাপারে সরকার সতর্ক আছে।
মন্ত্রী বলেন, নানা আইনে নানাজন গ্রেপ্তার হয়, তারপর কারাগারে থাকে এবং অনেকের সেখানে মৃত্যু হয়। তাহলে এখন কি সে আইনগুলোও বাতিল করতে হবে?
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আপনি বলেছেন ৫০ বছরে আমরা শুধু দলাদলি করেছি, দেশ এগোয়নি। আজকে দেশ তো অনেক দূর এগিয়ে গেছে আপনি একজন শিক্ষিত মানুষ হয়ে এটি অনুধাবন করতে পারলেন না?
তিনি বলেন, আপনি ঢাকা কলেজে পড়াতেন। আপনি শিক্ষিত মানুষ, একজন মার্জিত মানুষও বটে। যদিও বিএনপির পক্ষে অহরহ মিথ্যা কথা বলতে হচ্ছে আপনাকে। দেশ এগিয়ে গেল, স্বল্পোন্নত থেকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হল। জাতিসংঘ সেটির সার্টিফিকেশন দিয়েছে। এসব তথ্য আপনার কাছে নেই। আমি অবাক হচ্ছি। বিএনপি যদি নেতিবাচক রাজনীতি আর দলাদলি না করত তাহলে বাংলাদেশ আরও বেশি দূর এগিয়ে যেতে পারতো।
এটিএম শামসুজ্জামানকে স্মরণ করে আওয়ামী লীগের যুগ্মসম্পাদক বলেন, আমরা কখনো ভাবিনি তিনি হঠাৎ করে আমাদের এভাবে ছেড়ে চলে যাবেন। কারণ ইতোপূর্বে তিনি বহুবার অসুস্থ হয়েছেন এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। কিন্তু হঠাৎ সকালবেলা জানলাম তিনি ইন্তেকাল করেছেন। এটি মাথায় বজ্রপাতের মতো লেগেছে। তার মৃত্যু আমাদের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের জন্য একটি অপূরণীয় ক্ষতি।
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডাক্তার মুরাদ হাসান, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সহ-সভাপতি রফিকুল আলম, সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা প্রমুখ।