নাভালনি মামলায় এবার রাশিয়ার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিল আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। পুতিনের দেশের একাধিক কর্মকর্তা ও সংস্থার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলো। নাভালনির গ্রেফতারের প্রেক্ষিতে এই পদক্ষেপ।
রাশিয়া জানিয়েছে, এই পদক্ষেপ বাস্তবসম্মত নয়। অন্যদিকে যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, তারা অ্যামেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের পদক্ষেপকে সমর্থন করে। যদিও যুক্তরাজ্য রাশিয়ার বিরুদ্ধে এখনো কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
রাশিয়ার পুতিনবিরোধী রাজনীতিক নাভালনি। পুতিনের বিরুদ্ধে একাধিক ব্লগ লিখেছেন তিনি। শুধু তাই নয়, তার সংস্থা তদন্তমূলক রিপোর্টে প্রকাশ করেছে, কীভাবে কালো টাকায় আস্ত একটি প্রাসাদ কিনেছেন পুতিন। এই পরিস্থিতিতে গত বছর নাভালনিকে প্রশাসন বিষ দিয়ে মারার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। অসুস্থ নাভালনিকে জার্মানিতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসার পর তিনি সুস্থ হন। জার্মানি জানায়, এই কাজের জন্য পুতিনকে জবাব দিতে হবে।
নাভালনি দেশে ফিরতেই পুতিনের প্রশাসন তাকে গ্রেফতার করে। আদালতে তার সাজা হয়। এর পরেই একদিকে দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়তে থাকে। মঙ্গলবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আমেরিকা তারই জেরে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করল।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তার মধ্যে রাশিয়ান ফেডেরেশনের ইনভেস্টিগেটিভ কমিটির প্রধান আলেকজান্ডার বাস্ত্রিকিন আছেন। এছাড়াও প্রসিকিউটর জেনারেল ইগোর ক্রাসনোভ, ন্যাশনাল গার্ডের প্রধান ভিক্টর জোলোটোভ, ফেডারেল প্রিসন সার্ভিসের প্রধান আলেকজান্ডার কালশনিকভ আছেন। ইইউ রাশিয়ার কোনো সংস্থার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি।
আমেরিকা সাতজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। একইসাথে ১৩টি কোম্পানি বা সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। অ্যামেরিকার দাবি, ওই সংস্থাগুলো নার্ভ গ্যাস এবং বায়ো অস্ত্র তৈরির সাথে যুক্ত।
জো বাইডেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে এটাই রাশিয়ার বিরুদ্ধে তার সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ। মঙ্গলবার বাইডেনের প্রশাসন বিবৃতি জারি করে জানিয়েছে, অ্যামেরিকা দ্রুত নাভালনির মুক্তি চাইছে। এরপরেও রাশিয়া কোনো ব্যবস্থা না নিলে আরো কড়া পদক্ষেপ নেয়া হবে।
জার্মানি দীর্ঘ দিন ধরেই নাভালনি মামলায় রাশিয়ার ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। তারই মধ্যে ইইউ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ফলে ভ্লাদিমির পুতিনের ওপর অনেক দিন ধরেই চাপ রয়েছে। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি। মঙ্গলবার নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ার পরে পুতিনের প্রশাসন জানিয়েছে, যেভাবে আমেরিকা ও ইইউ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, তা বাস্তবসম্মত নয়। তারা এর সমালোচনা করছে। আমেরিকা ও ইইউর দাবি মানারও প্রশ্ন উঠছে না।
সূত্র : ডয়েচে ভেলে