এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে যশোর জেনারেল হাসপাতালে। আয়া দিয়ে ডেলিভারি করানোর সময় মায়ের পেট থেকে নবজাতকের মাথা থেকে শরীর বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সজরে টান দেওয়ার কারণে নবজাকতের মাথা ছিটে মায়ের পেটে থেকে যায়। এই ঘটনার পর তোলপাড় চলছে। সেই মায়ের অবস্থা এখন আশঙ্কাজনক।
শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার দিকে যশোর জেনারেল হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূর হলেন বেনাপোলের গাজীপুরের বাসিন্দা আন্না। অভিযুক্ত আয়ার নাম মোমেনা খাতুন। ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন।
জানা গেছে, প্রসূতি আন্না যশোরের বেনাপোলের গাজীপুরের ইয়াকুব আলীর স্ত্রী। আন্না ও ইয়াকুব দম্পতি প্রথম সন্তানের পিতা-মাতা হতে যাচ্ছিলেন। শুক্রবার রাতে আন্না টয়লেটে পড়ে যান। পরিবারের লোকজন তাকে মধ্যরাতে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে এনে ভর্তি করে।
ইয়াকুব আলী জানান, শনিবার সকালে ওয়ার্ডের চিকিৎসক তানজিলা ইয়াসমিন একবার দেখে যান। তিনি নার্সদের রোগীর জরায়ুমুখ খোলার ওষুধ দিতে বলেন। চিকিৎসকের কথামতো আন্নাকে ওষুধ দেওয়া হয়। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আন্নার গর্ভে থাকা শিশুর দুই পা বেরিয়ে আসে। ওয়ার্ডের আয়া মোমেনা ওটিতে নিয়ে আন্নার গর্ভের শিশুর পা ধরে টানাটানি করেন। একপর্যায়ে বাচ্চার গলার নিচ থেকে বাকি অংশ বেরিয়ে আসে। পেটের মধ্যেই থেকে যায় শিশুর মাথা। এ ঘটনায় আন্নাকে ওটিতে ফেলেই পালিয়ে যান আয়া মোমেনা।
আন্নার স্বামী ইয়াকুব আলী জানান, প্রথমে ওয়ার্ডের নার্সরা রোগী দেখে জানান নরমাল ডেলিভারি হবে। শনিবার দুপুরে চিকিৎসক তানজিলা ইয়াসমিন এসে চেকআপ করেন। তিনিও নরমাল ডেলিভারির কথা বলেন। কিছুক্ষণ পর নার্স জানায়, সিজার লাগবে। সিজারের জন্য স্লিপে ওষুধের নাম লিখে দিলেন। ওষুধ আনার জন্য হাসপাতালের একজনকে আমার সঙ্গে দিলেন। আমি তার সঙ্গে না গিয়ে অন্য একটি ফামের্সি থেকে ওষুধ কিনে আনি। কিছুক্ষণ পর নার্সরা জানান- বাচ্চা আর বেঁচে নেই। মায়ের অবস্থাও ভালো না।
ইয়াকুব জানান, দ্রুত আমার স্ত্রীর কাছে গেলাম। শুনি মোমেনা আয়া ডেলিভারি করাতে গিয়ে আমার বাচ্চার মাথা ছিঁড়ে ফেলেছে। নার্সরা সবাই পালিয়েছে।
এ বিষয়ে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক তানজিলা ইয়াসমিন বলেন, আয়াদের ত্রুটি ছিল। তবে বাচ্চাটি আগেই মায়ের গর্ভে মারা যায়।
এদিকে, যশোর জেনারেল হাসপাতালের আরএমও আরিফ আহমেদ ওই আয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. দিলিপ কুমার রায় জানান, ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঘটনাটি শুনে আমি হতবাক হয়েছি। রোববার বিষয়টি তদন্ত করা হবে।