spot_img

জাতীয় পার্টি কোন জোটেই নেই : জি এম কাদের

অবশ্যই পরুন

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেছেন, জাতীয় পার্টি মহাজোটে নেই, জাতীয় পার্টি কোন জোটেই নেই। জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগ বা বিএনপির বি-টিম নয়। নির্বাচনের সময় কিছু আসনে সমঝোতা হয়েছে, তবে বেশির ভাগ আসনেই জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা শেষ সময় পর্যন্ত নির্বাচনের মাঠে লড়াই করেছেন। জাতীয় পার্টি নিজস্ব রাজনীতি নিয়ে মাঠে আছে। নিজস্ব স্বকীয়তা নিয়ে রাজনীতির মাঠে এগিয়ে যাচ্ছে জাতীয় পার্টি।

তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি প্রতাপের সাথে নয় বছর দেশ পরিচালনা করেছে। দেশ পরিচালনায় সুশাসন ও উন্নয়নের গৌরবোজ্জল ঐহিত্য আছে জাতীয় পার্টির। দেশ ও মানুষের অধিকারের প্রশ্নে জাতীয় পার্টি প্রধান বিরোধী দলের ভূমিকায় কখনোই আপোষ করছে না। জাতীয় পার্টি কারো দয়া বা ভিক্ষার রাজনীতি করেনা। কারো করুণা নয়, সম্মানের জন্য রাজনীতি করছে জাতীয় পার্টি।

বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান-এর বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে যৌথ সভায় সভাপতির বক্তৃতায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এ কথা বলেন।

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরও বলেন, ১৯৯১ সালের পর থেকে দেশে সাংবিধানিকভাবেই একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এতে আনুষ্ঠানিকভাবেই দেশে বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে। যারাই সরকার গঠন করে তারা আইনের উর্ধে থেকে দুর্নীতি ও লুটপাটে জড়িত। উপজেলা পর্যায়ের নেতারাও বিদেশে হাজার কোটি টাকা পাচার করছে। পেশি শক্তি, কালোটাকা আর প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে কলুষিত করছে নির্বাচন ব্যবস্থা। একটি দলের প্রার্থীরাই নির্বাচনে জিতছে তাই রাজনীতির মাঠে অন্য দলগুলোর টিকে থাকাই দুরুহ হয়ে পড়েছে। দুর্নীতি ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে রাজনীতি করছে জাতীয় পার্টি। জাতীয় পার্টি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গড়তে রাজনীতি করছে। কোন নির্যাতনে মাথা নত করবেনা জাতীয় পার্টি।

এসময় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, রাষ্ট্র ক্ষমতায় না থাকলে রাজনৈতিক দলগুলো দূর্বল হতে থাকে। আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে আমাদের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করেছে। তার আগে আওয়ামী লীগ দূর্বল থাকলেও এখন রাষ্ট্র ক্ষমতায় থেকে সুপার পাওয়ার হয়ে গেছে। বিএনপিও অনেক দিন রাষ্ট্র ক্ষমতার বাইরে থেকে অনেকটাই দূর্বল হয়ে পড়েছে। কিন্তু জাতীয় পার্টি আরো বেশি সময় পর্যন্ত রাষ্ট্র ক্ষমতার বাইরে থাকার কারণে দূর্বল হয়েছে। তাই এখনই রাজনীতির মাঠে জাতীয় পার্টি ঘুরে দাঁড়াবে।

এসময় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান উল্লেখ করে বলেন, বিএনপি ও আওয়ামী লীগের পালিত কিছু বুদ্ধিজীবী জাতীয় পার্টি ও পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে নিয়ে মিথ্যাচার করছে। তিনি বলেন, ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করেননি। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তার বৈধভাবেই সেনা প্রধান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ-এর হাতে রাষ্ট্র ক্ষমতা হস্তান্তর করেছেন। তাতে দেশের মানুষ খুশি হয়েছিলেন। কারন, দেশের মানুষ তখন একটি পরিবর্তন প্রত্যাশা করছিলেন। ঐ সময় শুধু বিএনপি ছাড়া আওয়ামী লীগসহ সকল রাজনৈতিক দলগুলো সেনা প্রধান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ-এর রাষ্ট্র ক্ষমতা গ্রহণকে সমর্থন করেছিলেন। নয় বছর রাষ্ট্র পরিচালনায় পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ দেশে উন্নয়ন ও সুশাসনের দৃষ্টান্ত স্থাপণ করেছেন। আইনের শাসন ও মানুষের আর্থ-সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছিলেন পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, তিন জোটের রুপরেখা অনুযায়ী চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে বৈধভাবেই রাষ্ট্র ক্ষমতা হস্তান্তর করেন পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। কিন্তু তৎকালীন সরকার তিন জোটের রুপরেখার সকল অঙ্গীকার ভঙ্গ করে পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে জেলখানায় বন্দি করা হয়। তখন পল্লীবন্ধুর নামে কোন অভিযোগ ছিলোনা। পার্টির নেতা-কর্মীদের মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়। হামলা ও নির্যাতন চালানো হয়েছে জাতীয় পার্টি নেতা-কর্মীদের ওপর। কিন্তু তিন জোটের রুপরেখা অনুয়ায়ী সকল দলগুলো রেডিও টিভিতে বক্তৃতা দিয়েছে কিন্তু জাতীয় পার্টিকে বঞ্চিত করা হয়। মিছিল-মিটিং করতে দেয়া হয়নি, নির্বাচনে এজেন্ট দিতে পারেনি জাতীয় পার্টি। ঠুনকো অভিযোগ তুলে পল্লীবন্ধুকে নির্বাচন করতে দিতে চায়নি। কিন্তু গণমানুষের কঠোর আন্দোলনের মুখে পল্লীবন্ধুকে নির্বাচন করতে দিতে বাধ্য হয়েছিলো। জেলখানায় বন্দি পল্লীবন্ধু ৫টি আসনে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলেন। জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ কখনোই জনগণ থেকে প্রত্যাখ্যাত হননি, তিনি মৃত্যুর পরেও গণমানুষের দোয়া ও ভালোবাসায় সিক্ত। তাই জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা রাজনীতির মাঠে মাথা উচুঁ করে কথা বলবে। কারণ, জাতীয় পার্টি ও পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ রাজনীতির নিয়ামক শক্তি হিসেবে ছিলেন।

এসময় জাতীয় পার্টি মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, দেশে মানুষের ভোটের অধিকার নেই। দেশে নির্বাচনের নামে প্রহসন চলছে, তাই ভোটের প্রতি সাধারণ মানুষের আগ্রহ নেই। দুর্নীতি, দুঃশাসন আর লুটপাটের রাজনীতির বিরুদ্ধে জাতীয় পার্টির সংগ্রাম চলবে। ’৯১ সালের পর থেকেই জাতীয় পার্টির ওপরে নির্যাতন চলছে কিন্তু কোন নির্যাতন জাতীয় পার্টিকে সত্য ও ন্যায়ের আন্দোলন থেকে বিচ্যুত করতে পারেনি। সংসদে ও রাজপথে জাতীয় পার্টি দেশ ও মানুষের অধিকার নিয়ে সোচ্চার থাকবে। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির ইতিহাস সুশাসন ও আইনের শাসনের ইতিহাস। জাতীয় পার্টির রাজনীতি স্পষ্ট, জাতীয় পার্টি গণমানুষের স্বার্থ রক্ষার রাজনীতি করছে।

সর্বশেষ সংবাদ

ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রথম কাজ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করা: ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, জানুয়ারি মাসে দায়িত্ব গ্রহণের পর তার প্রথম কাজ হবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করা।...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ