এলন মাস্কের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান টেসলা জানুয়ারিতে ১.৫ বিলিয়ন বিটকয়েন কিনে নিয়েছে এমন ঘোষণা দেয়। ভবিষ্যতে লেনদেনের ক্ষেত্রে বিটকয়েন গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠবে এমন আশাবাদও ব্যক্ত করে প্রতিষ্ঠানটি।
টেসলার এ ঘোষণার পরই বিটকয়েনে বাজারদর একলাফে ১৭ শতাংশ বেড়ে প্রথমবারের মতো ৪৪ হাজার ২২০ ডলার অতিক্রম করে।
এলন মাস্ক তার টুইটার প্রোফাইলে বিটকয়েনের হ্যাশট্যাগ সংযুক্ত করার পরই এ ঘোষণা আসে। কদিন পরই তিনি এ হ্যাশট্যাগ মুছে দিলেও বিটকয়েনসহ ডগকয়েনের মতো ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে আলোচনা করতে থাকেন। তার সম্পৃক্ততার পরই ডগকয়েনের দাম ৫০ শতাংশ বেড়ে যায়।
স্টক মার্কেটের এক সভায় টেসলা জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠানটি জানুয়ারিতে তাদের বিনিয়োগের নীতি পরিবর্তন করেছে, ডিজিটাল কারেন্সি, গোল্ড বুলিওন ও গোল্ড এক্সেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ডের মতো খাতে বিনিয়োগের কথা ভাবছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যেই ১.৫ বিলিয়ন বিটকয়েন কিনে নিয়েছে বলেও জানানো হয়।
“অদূর ভবিষ্যতে আমাদের পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে বিটকয়েন গ্রহণের কথাও ভাবছি আমরা।” প্রথমদিকে সীমিত পরিসরে এটি শুরু করা হবে।
এক সপ্তাহ আগেই এলন মাস্ক এক টুইটার বার্তায় বলেছেন, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বিটকয়েনের গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হওয়ার সময় চলে এসেছে।
গেম চেঞ্জার?
অনেক বিশ্লেষকই মনে করছেন, টেসলার বিনিয়োগ বিনিয়োগ ক্রিপ্টোকারেন্সির জন্য গেম চেঞ্জার হতে পারে।
ক্রিপ্টোকারেন্সি গবেষণা প্রতিষ্ঠান মেসারি’র ভাইস-প্রেসিডেন্ট এরিক টার্নার বলেন, “আমি মনে করি শীঘ্রই আমরা দেখতে পাবো বড় প্রতিষ্ঠানগুলো বিটকয়েনের দিকে ঝুঁকছে। বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ প্রতিষ্ঠানের এখন বিটকয়েন কিনছে, টেসলার বিনিয়োগকারীরাও এখন বিনিয়োগের মাধ্যম হিসেবে বিটকয়েনকে বিবেচনায় রাখতে পারেন”
অন্যদিকে বিটকয়েন একটি ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগের মাধ্যম বলে সতর্ক করেছেন মার্কেটস.কমের চিফ মার্কেট অ্যানালিস্ট নিল উইলসন।
“টেসলা বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বেশ বড় ধরনের ঝুঁকি নিচ্ছে। এটি হয়তো বেশিরভাহ বিনিয়োগকারীদের জন্যই চিন্তার কারণ হবে না, তবে রক্ষণশীল ঘরানার বিনিয়োগকারীরা চিন্তিত হয়ে পড়তে পারেন।” বলেন তিনি।
সহজাত মূল্য নেই?
কয়েক দশক পর হঠাত করেই বিটকয়েনের মূল্য বাড়তে শুরু করেছে। বড় বড় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোও বিটকয়েনে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ ও সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান ব্ল্যাকরক সম্প্রতি বিটকয়েনের বিনিয়োগের জন্য প্রতিষ্ঠানটির কিছু বিনিয়োগের বিধিমালা পাল্টেছে।
তবে ব্যাংক সংশ্লিষ্ট খাতের অনেকেই এব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। গত বছরের অক্টোবরে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের গভর্নর অ্যান্ড্রু বেইলি এব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। লেনদেনের মাধ্যম হিসবে বিটকয়েন ব্যবহার সম্পর্কে তিনি চিন্তিত জানিয়ে বিনিয়োগকারীদের এর অস্থিতিশীল বাজারদর সম্পর্কে সতর্ক করেন।
সূত্র: বিবিসি