কোন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা না করে শুধুমাত্র ইচ্ছা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের অজো পাড়াগাঁয়ের এক কিশোর শিক্ষার্থী বিমানের আদলে ড্রোন আবিস্কার করে এলাকার মানুষকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। তার ড্রোন উড়ানোর দৃশ্য দেখতে ভিড় করছেন স্থানীয়রা।
ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈল উপজেলার দরিদ্র কৃষক পরিবারের সন্তান সালাউদ্দীন জনি। ছোট বেলা থেকে তার স্বপ্ন ছিল বিমানের পাইলট হয়ে আকাশে উড়ে বেড়ানোর। গ্রামের কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃষি ইউনিটে। কৃষি বিষয়ে পড়াশোনা করলেও তার ছোট থেকে স্বপ্ন বিমানের পাইলট হবার। যদিও তার পাইলট হবার বাসনা পূরণ হবার নয়।
তারপরও শুধু মাত্র নিজের ইচ্ছা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ২০১৭ সালে পরীক্ষামূলকভাবে দূরপাল্লার বিমান তৈরির কাজ শুরু করে সে। দীর্ঘ ৪ বছর প্রচেষ্টার পর গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে চালকবিহীন বিমান আকৃতির একটি ড্রোন আবিস্কার করে সে। ইতোমধ্যে তার নিজস্ব উদ্ভাবিত ড্রোন উড্ডয়ন করতেও সক্ষম হয় সে।
প্রথমদিকে ৫ কেজি ওজনের ৫ ফুট লম্বা একটি ড্রোন আবিস্কার করে যা ৪ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ১ হাজার ফুট উচ্চতায় ৩৫ মিনিট ধরে উঠতে সক্ষম হয়। পরে বাঁশ, কাঠ, কর্কশিট, ফোমশিট ব্যবহার করে ছোট আকারের ড্রোন বানায় যার ওজন ১ কেজি। তার এই উদ্ভাবিত ড্রোনটি পাঁচ কিলোমিটার নিয়ন্ত্রণ রেখার ভিতরে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে ২ হাজার ফুট উচ্চতায় এবং ঘন্টায় ১শ কিলোমিটার গতিতে ৪০ মিনিট উড়তে পারে।
ইতোমধ্যে সেটি জেলা শহরের বড় মাঠ ও রাণীশংকৈল উপজেলার মীরডাঙ্গী উচ্চবিদ্যালয় উড্ডয়ন করে হাজারো মানুষের প্রশংসা কুড়িয়েছে। জেলা প্রশাসন তার আবিস্কারে বিস্মিত হয়ে তার উদ্ভাবিত ড্রোন বিষয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠানোর কথা ভাবছেন।
সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে বঙ্গবন্ধু অ্যারোস্পেস এন্ড অ্যারোনোটিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেলে আগামী দিনে বড় আকারের বিমান তৈরি করতে পারবেন বলে স্বপ্ন দেখে খুদে এই আবিস্কারক।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম জানান, ইচ্ছা শক্তি থাকলে মানুষ যে ব্যতিক্রমী কোন যন্ত্র আবিস্কার করতে পারে জনি তার উজ্জল দৃষ্টান্ত। সালাউদ্দীনকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করা হয় তাহলে দেশ ও জাতি তার কাছ থেকে অনেক ভালো কিছু পেতে পারে।