ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড তার সর্বশেষ স্বাস্থ্যগত অবস্থা সম্পর্কে একটি বিবৃতি দিয়েছে। যা আজ শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেলে গণমাধ্যমের কাছে পাঠানো হয়।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে ঢাকার বিজয়নগর এলাকায় হাদিকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। এরপর তাৎক্ষণিকভাবে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে তার মাথায় অস্ত্রোপাচার কর হয়। পরে পরিবারের সিদ্ধান্তে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেয়া হয়। এখন হাসপাতালটির ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিটে চিকিৎসাধীন তিনি।
হাদির চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড বলছে—
১. রোগীর মস্তিষ্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যেহেতু সার্জিক্যাল হস্তক্ষেপ সম্পন্ন হয়েছে, তাই বর্তমানে তাকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে রাখা হয়েছে। ব্রেন প্রোটেকশন প্রটোকল অনুসরণ করে প্রয়োজনীয় সকল সাপোর্ট চালু থাকবে। শারীরিক অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল হলে পুনরায় ব্রেনের সিটি স্ক্যান করা হতে পারে।
২. ফুসফুসে ইনজুরি বিদ্যমান রয়েছে। চেস্ট ড্রেইন টিউব দিয়ে অল্প পরিমাণ রক্ত নির্গত হওয়ায় তা আপাতত চালু রাখা হয়েছে। ফুসফুসে সংক্রমণ ও এআরডিএস প্রতিরোধের বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে ভেন্টিলেটর সাপোর্ট অব্যাহত রাখা হবে।
৩. কিডনির কার্যক্ষমতা বর্তমানে ফিরে এসেছে। এটি বজায় রাখার জন্য পূর্বনির্ধারিত ফ্লুইড ব্যালেন্স যথাযথভাবে চালিয়ে যাওয়া হবে।
৪. পূর্বে শরীরে রক্ত জমাট বাঁধা ও রক্তক্ষরণের মধ্যকার অসামঞ্জস্যতা দেখা দিলেও বর্তমানে তা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এ অবস্থা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী রক্ত ও রক্তজাত উপাদান সঞ্চালন অব্যাহত থাকবে।
৫. ব্রেন স্টেম ইনজুরির কারণে রক্তচাপ ও হৃদস্পন্দনের ওঠানামা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বর্তমানে যে সাপোর্ট দেয়া হচ্ছে তা চলমান থাকবে। হৃদস্পন্দন বিপজ্জনকভাবে কমে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে টেম্পোরারি পেসমেকার স্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট টিম সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে।
৬. বর্তমানে রোগীর সার্বিক অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক।
এদিকে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার, রেডিওলজি, আইসিইউ, অ্যানেস্থেশিয়া, নিউরোসার্জারি ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের চিকিৎসক ও সাপোর্টিভ স্টাফদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ জানিয়েছে মেডিকেল বোর্ড। পাশপাশি হাদির দ্রুত সুস্থতা কামনা করে সবার কাছে দোয়া চেয়েছে মেডিকেল বোর্ড।
অপ্রয়োজনে কেউ হাসপাতালে এসে ভিড় না করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে কোনও ধরনের অনুমান বা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার না করে মেডিকেল বোর্ডের প্রতি আস্থা রাখার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়।

