দুই দিনের সরকারি সফরে আজ বৃহস্পতিবার (০৪ ডিসেম্বর) ভারত যাচ্ছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আলোচনা ছাড়াও তিনি রাষ্ট্রীয় ভোজসভায় যোগ দেবেন এবং ভারত-রাশিয়া ‘বিশেষ ও বিশেষাধিকারপ্রাপ্ত কৌশলগত অংশীদারত্ব’ পর্যালোচনা করবেন।
সাধারণত বেশির ভাগ বিশ্ব নেতা বড় দলবল নিয়ে সফর করেন। তাদের জন্য স্বাগতিক দেশে বিপুল আয়োজন থাকে। তবে পুতিনকে ঘিরে থাকা ‘নিরাপত্তার জাল’ তাকে অন্য সবার থেকে আলাদা করে তুলেছে। তার নিরাপত্তার ব্যাপারে তিনি এতটাই কঠোর যে, তিনি মুঠোফোন ব্যবহার করেন কি-না তা নিয়ে সন্দেহ আছে! পদে পদে বিপদের সম্মুখীন হওয়া পুতিনের কোনো স্মার্টফোন নেই বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
২০১৮ সালে বিজ্ঞানী ও শিক্ষাবিদদের সঙ্গে এক বৈঠকে কুরচাতভ পরমাণু গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান মিখাইল কোভালচুক বলেছিলেন, ‘প্রত্যেকের পকেটেই একটা করে স্মার্টফোন আছে।’ এর উত্তরে পুতিন বলেছিলেন, ‘আপনি বললেন সবার স্মার্টফোন আছে। কিন্তু আমার কোনো স্মার্টফোন নেই।’
এক রুশ সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘যত দূর জানি, প্রেসিডেন্ট পুতিনের কোনো ফোন নেই।’ তিনি বলেন, ‘স্মার্টফোন ব্যবহার করলে ব্যক্তির গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে পড়ে। আর এটি বিশেষ করে যেকোনো শীর্ষ নেতার জন্য বড় বিপদ ডেকে আনে।’
তবে সাধারণ মানুষ মনে করেন, প্রকাশ্যে যে কারণ বলা হয়, আসল কারণ হয়তো তার থেকে আলাদা। পুতিন একবার রুশ সংবাদ সংস্থা তাসকে বলেছিলেন, ক্রেমলিনের ভেতরে মুঠোফোন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ক্রেমলিন একই সঙ্গে সরকারের কেন্দ্র ও প্রেসিডেন্ট পুতিনের বাসভবন। তিনি বলেছিলেন, তিনি স্মার্টফোন ব্যবহার করেন না। যদি কারও সঙ্গে যোগাযোগ করার প্রয়োজন হয়, তবে তার বদলে তিনি দাপ্তরিক ফোন লাইন ব্যবহার করেন।
পুতিন বহুবার স্বীকার করেছেন যে, আধুনিক প্রযুক্তিতে তিনি খুব একটা পটু নন। অনলাইনে সহজলভ্য কিছু বিষয় নিয়েও তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ২০১৭ সালে স্কুলশিক্ষার্থীদের সঙ্গে এক বৈঠকে পুতিন বলেন, তিনি ‘খুব কমই ইন্টারনেট ব্যবহার করেন।’ তিনি ইন্টারনেটের সমালোচনাও করেছেন, একে তিনি ‘সিআইএ-এর বিশেষ প্রকল্প’ বলেছেন এবং এটিকে ‘অর্ধেকটা পর্নোগ্রাফি’ বলেও মন্তব্য করেছেন।
এর আগে পুতিন বলেছিলেন যে—তিনি মুঠোফোন ব্যবহার করেন না। কারণ, তিনি এই ধরনের যন্ত্র বা ইন্টারনেটের সঙ্গে সংযুক্ত কিছুকেই বিশ্বাস করেন না। মূলত নিরাপত্তার কারণেই তিনি মুঠোফোন এড়িয়ে চলেন। এও বলা হয় যে, তাঁর আশপাশে ফোন বা ইন্টারনেট-সংযুক্ত অন্যান্য গেজেট থাকলেও তা তাঁর কাছ থেকে দূরে রাখা হয়।

