spot_img

প্রত্যাশিত নির্বাচনে জনগণের পাশেই থাকবো— বিবিসি বাংলাকে তারেক রহমান

অবশ্যই পরুন

দীর্ঘ সময় গণমাধ্যম থেকে দূরেই ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এবার প্রায় দুই দশক পর কোনও গণমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিলেন তিনি। তারেক রহমান কথা বলেছেন বিবিসি বাংলার সাথে। সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) তার সাক্ষাৎকারের প্রথম পর্ব বিবিসি বাংলা প্রকাশ করে। সেখানে তিনি সমসাময়িক রাজনীতি ও বেশ কিছু বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন। শীঘ্রই দেশে ফিরছেন এমন ইঙ্গিতও দেন তিনি। বহুল প্রত্যাশিত নির্বাচনের সময়ে দেশের জনগণের পাশেই থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করেন বিএনপির এই নেতা।

তারেক রহমান বিগত সময়ে গণমাধ্যমের মুখোমুখি কেন হননি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ব্যাপারটি আসলে এমন নয়। আমি গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছি। আমি দীর্ঘ ১৭ বছর এই দেশে (যুক্তরাজ্যে) আছি। তবে আমার ওপর যখন দলের দায়িত্ব এসে পড়েছে তারপর থেকে আমি গ্রামে-গঞ্জে আমার নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন পর্যায়ে সাধারণ মানুষ যখন যেভাবে অংশগ্রহণ করেছে আমি সকলের সাথে কথা বলেছি। বিগত স্বৈরাচার সরকারের সময় কোর্ট থেকে একটি আদেশ দিয়ে আমার কথা বলার অধিকারকে বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। আমি যদি গণমাধ্যমে কিছু বলতে চাইতাম হয়তো গণমাধ্যমের ইচ্ছা ছিল সেটি ছাপানোর কিন্তু গণমাধ্যম তা পারতো না। আমি একদিন প্রেসক্লাবে কথা বলেছিলাম। পরেরদিন দেখলাম তখনকার প্রেসক্লাবের যারা সদস্য বা কমিটিতে ছিলেন তারা তখন আমাকে মিটিং করে আইনের দৃষ্টিতে ফেরারি বলেছিলেন। এভাবে তারা আমার কথা বন্ধ করে রাখার চেষ্টা করেছিল। আমি চেষ্টা করেছি সামাজিক মাধ্যমসহ বিভিন্ন পন্থায় আমি পৌঁছানোর চেষ্টা করেছি। আমি পৌঁছিয়েছিও। গণমাধ্যমে যে আমি কথা বলেছি তা নয়। আমি কথা বলেছি হয়তো আপনারা তখন নিতে পারেননি অথব শুনতে পারেননি। ইচ্ছা থাকলেও ছাপাতে পারেননি। আমি কথা বলেছি থেমে থাকিনি।

উপস্থাপক প্রশ্ন করেন, বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পেরিয়ে গেছে। অনেকের ধারণা ছিল আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আপনি দেশে এসে স্বশরীরে দলের নেতৃত্ব দেবেন। আপনি এখনও দেশে ফেরেননি কেন?উত্তরে তারেক রহমান বলেন, কিছু সঙ্গত কারণে হয়তো ফেরাটা এখনও হয়ে উঠেনি এখনও। তবে সময় তো চলে এসেছে মনে হয়। ইনশাআল্লাহ দ্রুতই ফিরে আসবো। ফেরাটা কবে এমনটা জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, দ্রুতই।

নির্বাচনের আগে তিনি দেশে আসবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাজনীতি যেহেতু করি, আমি একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে চাইবো এটাই স্বাভাবিক। নির্বাচনের সাথে রাজনৈতিক দল এবং রাজনৈতিক কর্মীর সম্পর্ক ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কাজেই যেখানে একটি জনগণের প্রত্যাশিত নির্বাচন হবে সেই সময়ে কেমন করে দূরে থাকবো। আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা, ইচ্ছা, আগ্রহ থাকবে প্রত্যাশিত নির্বাচনে জনগণের পাশেই থাকবো।

তারেক রহমানকে নিরাপত্তা শঙ্কায় আছেন কি না উপস্থাপকের এমন প্রশ্নে বিএনপির এই নেতা বলেন, বিভিন্ন রকম শঙ্কার কথা আমরা শুনেছি। বিভিন্ন মাধ্যমে তা মিডিয়াতেও প্রকাশ হয়েছে।

মোটামুটি সব পক্ষই স্বীকার করে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আপনার সক্রিয় ভূমিকা ছিল। বিএনপির কেউ কেউ অভ্যুত্থানের একমাত্র মাস্টারমাইন্ড মনে করেন। এ বিষয়ে তারেক রহমানের মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেন, জুলাই আন্দোলনে আমি আমাকে কখনোই মাস্টারমাইন্ড হিসেবে দেখি না। ৫ আগস্ট জুলাই আন্দোলন নামে যেটি সকলের কাছে গৃহীত, এই আন্দোলন সফল হয়েছে জুলাই মাসে কিন্তু এর প্রেক্ষাপট শুরু হয়েছে বহু বছর আগে। এই আন্দোলনে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা, বিএনপি হোক বা অন্য দল হোক, প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল বিভিন্নভাবে অবদান রেখেছে। বিভিন্নভাবে তাদের নেতাকর্মীরা নির্যাতিত হয়েছে। আমি মনে করি জনগণ জুলাই আগস্ট মাসে এসে সকল রাজনৈতিক দলের সাথে অংশগ্রহণ করেছে। শুধু কী রাজনৈতিক দলের নেতারাই সেদিন ছিল? অবশ্যই নয়। সেদিন মাদরাসার ছাত্ররা ছিলেন, গৃহিণীরা পর্যন্ত রাস্তায় নেমে এসেছিলেন সন্তানের পেছনে। কৃষক, শ্রমিক, সিএনজি চালক, দোকানদার, গার্মেন্টসকর্মীসহ সবাই রাস্তায় নেমে এসেছিলেন। সামরিক বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্মচারীরাও নেমে এসেছিলেন। অনেক সাংবাদিক যারা স্বৈরাচারের অত্যাচারে দেশ থেকে বাইরে চলে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন তারা সম্পৃক্ত হয়েছিলেন। কারোর ভূমিকাকে আমরা ছোট করে দেখতে চাই না। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি সমাজের দল মত নির্বিশেষে সমাজের প্রত্যেকটি মানুষের অবদান রয়েছে। এই আন্দোলন ছিল বাংলাদেশের জনগণের আন্দোলন। যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। এই আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড কোনো দল বা ব্যক্তি নয়, এই আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ।

আন্দোলন চলাকালে ছাত্র নেতৃত্বের সাথে কতটা যোগাযোগ ছিল এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমি যেহেতু বাইরে থেকে কাজ করছি আমাকে অনলাইনের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখতে হয়েছে। সেই দিনগুলো আপনাদের মনে আছে টেলিফোন ও অনলাইন সিস্টেমের কী অবস্থা করে রাখা হয়েছিল। যোগাযোগ প্রত্যক্ষ, পরোক্ষ বিভিন্ন মাধ্যমে করতে হয়েছে। এটি যে সবসময় খুব মসৃণ ছিল এমন নয়। প্রত্যেকে প্রত্যেককে সহযোগীতা করেছে বলেও জানান বিএনপির এই শীর্ষ নেতা।

সর্বশেষ সংবাদ

মাদককাণ্ড ইস্যুতে আরিয়ানকে নিয়ে কথা বললেন সেই কর্মকর্তা

বলিউডের বাদশাহ শাহরুখ খানের পুত্র আরিয়ান খানের প্রথম পরিচালিত ওয়েব সিরিজ ‘দ্য ব্যাডস অব বলিউড’ মুক্তির পর থেকেই নতুন...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ