spot_img

মসজিদে যেসব কাজ করা নিষেধ

অবশ্যই পরুন

মহান আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় জায়গা মসজিদ। এটি মুসলমানদের এমন একটি স্থান, যেখানে তারা আল্লাহর ইবাদত, আনুগত্য ও তাঁর স্মরণে একত্রিত হয়। তাই আল্লাহ তাআলা এ ধরনের জায়গাকে উচ্চ সম্মান ও মর্যাদা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ যে ঘরগুলোকে উচ্চমর্যাদা দিতে এবং তাতে তাঁর নাম উচ্চারণ করতে আদেশ করেছেন, তাতে সকাল ও সন্ধ্যায় তাসবিহ পাঠ করে এমন লোক, যাদেরকে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বেচাকেনা আল্লাহর স্মরণ, নামাজ কায়েম ও জাকাত আদায় থেকে গাফেল করতে পারে না। তারা ভয় করে সেই দিনকে, যে দিন অন্তর ও দৃষ্টি ওলট-পালট হয়ে যাবে। (সুরা নুর, আয়াত : ৩৬-৩৭)

আমাদের প্রিয় নবী (সা.)-ও সাহাবায়ে কেরামকে মসজিদের পবিত্রতা রক্ষার নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি মসজিদের শৃঙ্খলা বজায় রাখার প্রতি উত্সাহ দিয়েছেন। হাদিস শরীফে আছে, ইসহাকের চাচা আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন আমরা রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে মাসজিদে নববীতে বসে ছিলাম। এ সময় হঠাত্ এক বেদুঈন এসে মাসজিদের মধ্যে দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করতে লাগল, তা দেখে রাসুল (সা.)-এর সাহাবাগণ থামো থামো’ বলে তাকে প্রস্রাব করতে বাঁধা দিলেন। আনাস (রা.) বলেন, তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, তোমরা তাকে বাধা দিও না , বরং তাকে ছেড়ে দাও। লোকেরা তাকে ছেড়ে দিল, সে প্রস্রাব সেরে নিল। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে কাছে ডেকে বললেন, এটা হলো মাসজিদ। এখানে প্রস্রাব করা কিংবা ময়লা আবর্জনা ফেলা যায় না। বরং এ হলো আল্লাহর জিকির করা, সালাত আদায় করা এবং কোরআন পাঠ করার স্থান। অথবা রাসুল (সা.) কথাটা যেভাবে বলেছেন তাই আনাস বলেন, এরপর রাসুল (সা.) সবার মধ্য থেকে এক ব্যক্তিকে এক বালতি পানি আনতে আদেশ করলেন। (মুসলিম, হাদিস : ৫৪৮)

মসজিদের মর্যাদা রক্ষার জন্য আল্লাহ কিছু বিশেষ নিয়ম নির্ধারণ করেছেন এবং কিছু কাজ সেখানে নিষিদ্ধ করেছেন। নিম্নের তার কয়েকটি তুলে ধরা হলো;

হারানো জিনিসের ঘোষণা : অনেককেই দেখা যায়, কিছু হারিয়ে গেলে ইমাম সাহেবকে তা মাইকে ঘোষনা দেওয়ার অনুরোধ করে, কেউ কেউ না বুঝে চাপ প্রয়োগেরও চেষ্টা করে। অথচ মসজিদে হারানো জিনিসের ঘোষনা দেওয়া নিষেধ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মসজিদে তার হারানো জিনিস খুঁজতে উচ্চস্বরে ডাকাডাকি করে, তোমরা তাকে বলবে: ‘আল্লাহ যেন তা তোমার কাছে ফিরিয়ে না দেন।’ কেননা মসজিদ এ উদ্দেশ্যে তৈরি হয়নি।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৭৩)

তবে কারো কাছে নিচুস্বরে জিজ্ঞেস করা বা ইমাম সাহেবকে নীরবে অবহিত করা নিষিদ্ধ নয়।

মসজিদে ক্রয়-বিক্রয় করা : মসজিদের ভেতর ক্রয়-বিক্রয় করাও মসজিদের আদব পরিপন্থী কাজ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা যদি কাউকে মসজিদে ক্রয়-বিক্রয় করতে দেখো, তবে বলবে: ‘আল্লাহ তোমার ব্যবসায় বরকত না দিন।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১৩২১)

অনর্থক কাব্য পাঠ করে হৈচৈ করা : মহানবী (সা.) মসজিদে কবিতা আবৃত্তি করে প্রতিযোগিতা করতে নিষেধ করেছেন। এতে মসজিদ আড্ডাখানা বা সাহিত্যসভায় রূপ নেয়। তবে ইসলামের প্রশংসা, ঈমান বৃদ্ধি বা শিক্ষামূলক কবিতা হলে অনুমোদন আছে।

আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) মসজিদে কবিতা পাঠ করতে নিষেধ করেছেন। (নাসায়ি, হাদিস : ৭১৫)

দুনিয়াবি আলাপ-আলোচনায় মশগুল হওয়া : মসজিদে দুনিয়াবী আলাপ করা, জোরে জোরে কথা বলা নিষিদ্ধ। একবার উমর (রা.) দুই ব্যক্তিকে মসজিদে উচ্চস্বরে কথা বলার কারণে শাসন করেছিলেন। (বুখারি, হাদিস ৪৭০)

অন্যদের ইবাদতে বিঘ্ন সৃষ্টি করা কাজ করা : আবু সাঈদ (রা.) বলেন , রাসুল (সা.) মাসজিদে ইতিকাফ কালে সাহাবিদেরকে উচ্চস্বরে কিরাত পড়তে শুনে পর্দা সরিয়ে বলেন, ‘জেনে রাখো! তোমাদের প্রত্যেকেই স্বীয় রবের সাথে চুপিসারে আলাপে রত আছো। কাজেই তোমরা পরস্পরকে কষ্ট দিও না এবং পরস্পরের সামনে কিরাতে বা সালাতে আওয়াজ উঁচু করো না।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১৩৩২)

সংক্ষেপে বলতে গেলে, মসজিদে উদ্দেশ্যহীন উচ্চস্বরে কথা বলা, দুনিয়াবি আলাপ-আলোচনা, ক্রয়-বিক্রয়, হারানো জিনিস খোঁজার ঘোষণা, অপ্রয়োজনীয় কবিতা বা হৈচৈ—সবই নিষিদ্ধ। কারণ মসজিদ কেবল আল্লাহর ইবাদত, নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত ও জিকিরের স্থান।

সর্বশেষ সংবাদ

ফিরছে ‘পিকি ব্লাইন্ডার্স’

জনপ্রিয় ব্রিটিশ ক্রাইম-ড্রামা সিরিজ ‘পিকি ব্লাইন্ডার্স’ আবারও ছোট পর্দায় ফিরে আসছে। বিবিসি বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর ) ঘোষণা করেছে, সিরিজটির...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ