গাজায় চলমান যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলকে ফুটবল প্রতিযোগিতা থেকে নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানিয়ে ফিফা ও উয়েফার মতো সংস্থাগুলোর প্রধানদের কাছে চিঠি দিয়েছেন তুরস্ক ফুটবল ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম হাচিওসমানোগ্লু।
তুরস্ক ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি ইব্রাহিম হাচিওসমানোগ্লু গতকাল শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) এক চিঠিতে আন্তর্জাতিক ফুটবল নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান, ‘এখনই সময় ফিফা ও উয়েফার পদক্ষেপ নেয়ার।’
তিনি আরও বলেন,
‘আমরা গাজার ভেতরে ও চারপাশে ইসরায়েল রাষ্ট্র কর্তৃক পরিচালিত বেআইনি, অমানবিক এবং সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য কার্যক্রম নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।’
ইসরায়েল বর্তমানে ২০২৬ সালের বিশ্বকাপে খেলার জন্য কোয়ালিফাই করার প্রচেষ্টায় রয়েছে। এ অবস্থায় উয়েফার ২০ সদস্যের পরিচালনা কমিটি ইসরায়েলকে ইউরোপীয় প্রতিযোগিতা থেকে বহিষ্কারের বিষয়ে ভোট দেয়ার দিকে এগোচ্ছে। যদি ভোট আহ্বান করা হয়, তাহলে ইসরায়েলকে নিষিদ্ধ করার জন্য সংখ্যাগরিষ্ঠ সমর্থন পাওয়া যেতে পারে বলে জানিয়েছে তুরস্কের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি।
এর আগে, ২০২২ সালে ইউক্রেন আক্রমণের পর ফিফা ও উয়েফা থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল রাশিয়াকে। কিন্তু একইরকম ব্যবস্থা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে না নেয়ায় দ্বৈত নীতির অভিযোগ উঠেছে ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ৪৮ জন পেশাদার ক্রীড়াবিদের একটি জোট (অ্যাথলেটস ফর পিস) উয়েফার কাছে আহ্বান জানায়, যাতে ইসরায়েলকে সব ফুটবল প্রতিযোগিতা থেকে অবিলম্বে নিষিদ্ধ করা হয়। এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ফরাসি মিডফিল্ডার পল পগবা ও ইংলিশ ক্রিকেটার মঈন আলী।
তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে:
‘বিচার, ন্যায় ও মানবিকতা ফুটবলের মূল নীতি হওয়া উচিত। আমরা, অ্যাথলেটস ফর পিস-এর সদস্যরা, আহ্বান জানাচ্ছি—উয়েফা যেন অবিলম্বে ইসরায়েলকে সব প্রতিযোগিতা থেকে নিষিদ্ধ করে, যতক্ষণ না তারা আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলে ও বেসামরিক নাগরিক হত্যা বন্ধ করে।’
তারা আরও উল্লেখ করেন সুলেমান আল-ওবেইদের মৃত্যুর কথা — যিনি ‘প্যালেস্টাইনের পেলে’ নামে পরিচিত ছিলেন এবং গাজায় মানবিক সহায়তার জন্য অপেক্ষারত অবস্থায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিহত হন বলে জানিয়েছে প্যালেস্টাইন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন।
ইসরায়েল ১৯৯৪ সাল থেকে উয়েফার পূর্ণ সদস্য। এর আগে ১৯৭০ সালে একবার মাত্র বিশ্বকাপে খেলেছিল। এরপর ২০০২ সালে কুয়েতের উদ্যোগে এবং আরব দেশগুলোর সমর্থনে তারা এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (এএফসি) থেকে বহিষ্কৃত হয়।
এই নিষেধাজ্ঞার দাবির বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর গত বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) জানায়, ‘ইসরায়েলকে আগামী বছরের বিশ্বকাপে নিষিদ্ধ করার যেকোনো প্রচেষ্টা আমরা সম্পূর্ণভাবে ঠেকানোর চেষ্টা করবো।’
সূত্র: আল জাজিরা।