কেরলে সম্প্রতি ত্রাস হয়ে উঠেছে ব্রেন ইটিং অ্যামিবা। কিন্তু কীভাবে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে এটি? কেনই বা এই নাম? কী কী লক্ষণ দেখা যায় রোগীর মধ্যে? জেনে নিন বিস্তারিত।
এখনও পর্যন্ত ১৯ জন মৃত, ৭২ জন আক্রান্ত। কেরলে ব্রেন ইটিং অ্যামিবা ত্রাস ছড়াচ্ছে রীতিমতো। গত বছর এই বিশেষ জীবাণুর সংক্রমণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রাণ হারিয়েছেন বেশ কয়েকজন। আক্রান্ত হয়েছিলেন আরও বেশি। এই বছর ভারতের কেরলে একের পর এক সংক্রমণের খবর আসছে। কিন্তু কী এই জীবাণু? কীভাবেই বা সংক্রমণ ছড়ায় এটি? প্রতিরোধের কোনও উপায় কি রয়েছে আদৌ? জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত।
ব্রেন ইটিং অ্যামিবা আদতে কী?
ছোটবেলায় অনেকেই বিজ্ঞান বইতে পড়ে থাকবেন এককোশী ও বহুকোশী প্রাণীর কথা। অ্যামিবা আদতে এককোশী প্রাণী। এই প্রাণীটিকে পৃথিবীর আদি প্রাণী বলেও মনে করেন বিজ্ঞানীরা। বলা হয়, এককোশী থেকেই বহুকোশী প্রাণীর উদ্ভব। ব্রেন ইটিং অ্যামিবাও তেমনই এককোশী প্রাণী। এর আসল নাম নাইগ্লেরিয়া ফাউলেরি। শুধু খালি চোখ নয়, রীতিমতো মাইক্রোস্কোপ দিয়েও এই প্রাণীকে দেখা বেশ দুঃসাধ্য।
কেন এই নাম?
নাইগ্লেরিয়া ফাউলেরিকে ডাকা হয় ব্রেন ইটিং অ্যামিবা নামে। এমন নাম হওয়ার কারণ এটি মস্তিষ্ককে ধীরে ধীরে সংক্রমিত করে দেয়। মেনিনজেস নামে মস্তিষ্কের বাইরে একটি আবরণ থাকে। এই আবরণ ধীরে ধীরে ক্ষইয়ে দেয় এই অ্যামিবা। যার ফলে মেনিনজাইটিসে আক্রান্ত হন রোগী। ঠিক সময়ে চিকিৎসা না হলে মৃত্যু হয় রোগীর।
কীভাবে ছড়ায় সংক্রমণ?
সাধারণত উষ্ণ প্রস্রবণ, হ্রদ ও নদীর জলে বসবাস করে এই অ্যামিবা। এই সংক্রমিত জল নাক দিয়ে শরীরে প্রবেশ করলে তবেই সংক্রমণ ছড়ায় এটি।
কী কী লক্ষণ দেখা দেয়?
প্রচণ্ড জ্বর, মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব, কাঁপুনি, মেনিনজাইটিসের লক্ষণ যেমন ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া, আলোর সহ্য করতে না পারা, মানসিক বিভ্রান্তি। কখনও কখনও রোগী কোমায় চলে যেতে পারেন। ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের তথ্য অনুযায়ী, চিকিৎসার পরেও এই সংক্রমণে মৃত্যুর হার ৯৭% এরও বেশি।
কীভাবে প্রতিরোধ করা সম্ভব?
নদ-নদীর জল থেকে দূরে থাকাই একমাত্র উপায়। এই ধরনের জল যদি ঘরের জল সরবরাহ ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত থাকে, তাহলে সেই জল যথেষ্ট পরিমাণে ফিল্টার হচ্ছে কি না তা দেখে নিতে হবে। তা না হলে কলের মাধ্যমে আসা জল থেকেও সংক্রমণ ছড়াতে পারে এই অ্যামিবা।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস