বারবার গলা শুকিয়ে যাওয়া অনেকের কাছেই সাধারণ বিষয় মনে হতে পারে। তবে চিকিৎসকদের মতে, এটি অবহেলার মতো নয়। কারণ, এ উপসর্গের পেছনে লুকিয়ে থাকতে পারে পানিশূন্যতা থেকে শুরু করে ডায়াবেটিস কিংবা কিডনির জটিল রোগ। তাই এ ধরনের সমস্যাকে হালকা ভাবে না নিয়ে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা উচিত।
গলা শুকিয়ে যাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হলো শরীরে পানির ঘাটতি। পর্যাপ্ত পানি না খেলে দেহে ডিহাইড্রেশন তৈরি হয়, যা সরাসরি গলার ওপর প্রভাব ফেলে। এ ছাড়া ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রেও এ সমস্যা বেশি দেখা যায়। রক্তে অতিরিক্ত শর্করা জমে থাকলে শরীর স্বাভাবিকভাবেই বেশি তৃষ্ণা অনুভব করে এবং বারবার গলা শুকিয়ে যায়।
চিকিৎসকরা আরও জানিয়েছেন, কিছু ওষুধ যেমন অ্যান্টিহিস্টামিন, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ কিংবা মানসিক রোগের ওষুধ সেবনের পর এ ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। আবার যারা রাতে মুখ খোলা রেখে ঘুমান বা নাক ডাকার অভ্যাস রয়েছে, তাদের মাঝেও গলা শুকিয়ে যাওয়ার প্রবণতা বেশি। শুষ্ক আবহাওয়া কিংবা দীর্ঘ সময় এয়ারকন্ডিশনের মধ্যে থাকলেও একই সমস্যায় ভুগতে হয় অনেককে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, গলা শুকিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি যদি চোখ-মুখ শুকিয়ে যাওয়া, মাথা ঘোরা, অতিরিক্ত প্রস্রাব বা অস্বাভাবিক ক্লান্তির মতো উপসর্গ দেখা দেয়, তবে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া প্রয়োজন। কারণ এগুলো ডায়াবেটিস, কিডনি সমস্যা কিংবা হরমোনজনিত অসুস্থতার আগাম সংকেত হতে পারে।
চিকিৎসকদের মতে, গলা শুকিয়ে যাওয়া সাধারণ মনে হলেও এটি অনেক সময় গুরুতর রোগের পূর্বাভাস। তাই দীর্ঘদিন ধরে এ সমস্যা থাকলে অবশ্যই পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া উচিত।
সুস্থ থাকতে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করা, চা–কফি ও অ্যালকোহল কমানো, শুষ্ক পরিবেশে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। সময়মতো পদক্ষেপ নিলে এ সমস্যাকে সহজেই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।