spot_img

প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, ভারত-চীন একে অপরকে অংশীদার হিসেবে দেখা উচিত: চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

অবশ্যই পরুন

ভারত ও চীনকে একে অপরকে ‘প্রতিদ্বন্দ্বী বা হুমকি’ নয়, বরং ‘অংশীদার’ হিসেবে দেখা উচিত—স্থানীয় সময় সোমবার (১৮ আগস্ট) দিল্লিতে দুই দিনের সফরে এসে এমন মন্তব্য করেছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই।

তিনি ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করেছেন—যা ২০২০ সালের পর দুই দেশের মধ্যে মাত্র দ্বিতীয় উচ্চপর্যায়ের বৈঠক। তখন লাদাখের বিতর্কিত গালওয়ান উপত্যকায় প্রাণঘাতী সংঘর্ষ দুই দেশের সম্পর্ককে সম্পূর্ণ ভেঙে দিয়েছিল।

ওয়াং ই বলেছেন, দুই দেশের সম্পর্ক এখন ‘সহযোগিতার ইতিবাচক ধারায়’ ফিরছে। আজ মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) তার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা।

জয়শঙ্কর বলেন, ভারত ও চীন ‘কঠিন সময়’ পেরিয়ে সম্পর্ককে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে। দুই দেশের মন্ত্রী বাণিজ্য, তীর্থযাত্রা ও নদীর তথ্য ভাগাভাগিসহ বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে আলোচনা করেছেন।

ওয়াং ই ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গেও বৈঠক করবেন, যেখানে সীমান্ত বিরোধ নিরসনের চলমান আলোচনা নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা।

সফরটি দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশীর সম্পর্কে ‘বরফ গলানোর সর্বশেষ ইঙ্গিত’ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

গত বছরের অক্টোবরে ভারত-চীন হিমালয়ের বিতর্কিত সীমান্ত এলাকায় টহল সংক্রান্ত সমঝোতায় পৌঁছায়, যা উত্তেজনা কমাতে সহায়ক হয়। এরপর থেকে দুই দেশ সম্পর্ক স্বাভাবিক করার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। চীন এ বছর ভারতীয় তীর্থযাত্রীদের তিব্বতের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোয় যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে। ভারতও চীনা পর্যটকদের জন্য ভিসা পরিষেবা আবার চালু করেছে এবং নির্ধারিত রুট দিয়ে সীমান্ত বাণিজ্য পুনরায় খোলার বিষয়ে আলোচনা শুরু করেছে।

এছাড়া খবর আছে, এ বছর থেকেই ভারত-চীনের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট আবার চালু হতে পারে। ওয়াং ইয়ের বৈঠকগুলো আসন্ন সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (এসসিও) সম্মেলনে মোদির চীন সফরের প্রস্তুতি হিসেবে দেখা হচ্ছে। মোদি প্রায় সাত বছর পর প্রথমবার চীন সফরে যাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

খবরে আরও বলা হয়েছে, মোদি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গেও দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করতে পারেন, যদিও কোনো পক্ষই এ তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেনি।

ভারত-চীনের এই ঘনিষ্ঠতা আসছে এমন এক সময়, যখন ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক খারাপের দিকে যাচ্ছে।

চলতি মাসের শুরুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়া থেকে তেল ও অস্ত্র কেনার কারণে ভারতীয় আমদানির ওপর অতিরিক্ত ২৫% শুল্ক আরোপ করেছেন, ফলে মোট শুল্ক বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০%—যা এশিয়ায় সর্বোচ্চ।

সোমবার হোয়াইট হাউসের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস-এ একটি নিবন্ধে ভারতকে অভিযুক্ত করে লিখেছেন, দেশটি ‘রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছে’।

তিনি বলেন, ভারত ‘রাশিয়ার তেল নিষেধাজ্ঞা ভেঙে বৈশ্বিক বাজারে উচ্চমূল্যের পণ্য রপ্তানি করছে এবং মস্কোকে ডলার সরবরাহ করছে’।

নাভারোর মন্তব্য—’যদি ভারত যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অংশীদার হিসেবে আচরণ করতে চায়, তবে তাকে সেই অনুযায়ী আচরণ শুরু করতে হবে।’

ওয়াং ইয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর জয়শঙ্কর বলেন, বৈশ্বিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
তিনি যোগ করেন—

‘আমরা একটি ন্যায্য, ভারসাম্যপূর্ণ বিশ্ব চাই, যার মধ্যে এশিয়াও অন্তর্ভুক্ত। বর্তমান পরিবেশে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা ও জোরদার করাও অত্যন্ত জরুরি।’

সূত্র: বিবিসি নিউজ, রয়টার্স।

সর্বশেষ সংবাদ

নোয়াখালীর টানা তৃতীয় হার, এক লাফে শীর্ষে রাজশাহী

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) টানা দুই হারের পর ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নেমেছিল নবাগত নোয়াখালী এক্সপ্রেস। কিন্তু মাঠের...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ