গাজায় গণহত্যা ও অনাহারের প্রতিবাদে ইস্তাম্বুলে বিক্ষোভ করেছে হাজারো মানুষ। স্থানীয় সময় শনিবার (৯ আগস্ট) সন্ধ্যায় মাগরিব নামাজের পর ইস্তাম্বুলের বেয়াজিত স্কয়ারে হাজার হাজার ফিলিস্তিন-সমর্থক বিক্ষোভকারী জড়ো হয়ে গাজায় ইসরায়েলের চলমান গণহত্যা ও খাদ্য সংকটের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান। এক প্রতিবেদনে তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি এ তথ্য জানায়।
এ বিক্ষোভে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও সাধারণ জনগণ অংশ নেন এবং পরে তারা ঐতিহাসিক আয়াসোফিয়া মসজিদের দিকে পদযাত্রা করেন।
বিক্ষোভকারীরা গাজার মানবিক সংকট সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করতে ও সেখানে জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশে এ কর্মসূচিতে অংশ নেন, যেখানে সহিংসতা বাড়ছে এবং খাদ্য ও ওষুধের তীব্র সংকট চলছে।
আয়োজকেরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান যাতে এই দুর্ভোগের অবসান ঘটে।
এর আগে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে গাজায় এখন পর্যন্ত ৬১,০০০-এর বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যা বিশ্বব্যাপী তীব্র নিন্দার কারণ হয়েছে। এই অভিযান গাজার অবকাঠামোকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে এবং বহু মানুষ ক্ষুধা ও অনাহারে মারা যাচ্ছে।
গত নভেম্বর মাসে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াওভ গালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।
এছাড়াও, গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) একটি গণহত্যার মামলাও চলছে।
বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ছিলেন কানাডায় জন্ম নেয়া শিক্ষক জেনি মোলেনডাইক ডিভলেলি। বলেন, পরিস্থিতি দিন দিন আরও গুরুতর হয়ে উঠছে।
মোলেনডাইক ডিভলেলি আরও বলেন,
‘সবাই জানে যে গাজায় গণহত্যা চলছে, কিন্তু এখন ফিলিস্তিনি জনগণকে ইচ্ছাকৃতভাবে অনাহারে রাখার মাধ্যমে বিষয়টি আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। প্রতিদিনই দশ কিংবা বিশ; এমনকি শত শত মানুষ মারা যাচ্ছে। আমাদের সত্যিই জোরে আওয়াজ তুলতে হবে ও যা পারি তাই করতে হবে।’
তিউনিশিয়ার নাগরিক মোহাম্মদ বেন এলশেইখ, যিনি চার বছর ধরে ইস্তাম্বুলে বাস করছেন, বলেন, এই বিক্ষোভের উদ্দেশ্য হলো গাজার মানুষের কণ্ঠস্বর বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছে দেয়া।
‘প্রথমেই আমি গাজার ভাইদের প্রতি ও হামাসের প্রতি সালাম জানাতে চাই। আল্লাহ তাদের সাহায্য করুন। আমরা শিগগিরই মুক্ত হব,’ তিনি বলেন।
তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিষ্ক্রিয়তাকে তীব্রভাবে সমালোচনা করেন।
‘লজ্জার বিষয় যে শিশুদের মৃত্যু হচ্ছে। পুরো গাজা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। অনেক কিছুই ঘটছে – খুন, অনাহার, কারাবন্দি করা। কিন্তু বিশ্ব নীরব। রাষ্ট্রপ্রধানরা কিছু করছে না। আমরা মুসলিম হিসেবে প্রতিবাদ করছি, কিন্তু এটা যথেষ্ট নয়,’ তিনি বলেন।