পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা রাজনৈতিক নয়, ব্যক্তিগত বা ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বে ঘটেছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম।
বুধবার (১৬ জুলাই) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে ‘সোহাগ হত্যা মামলার অগ্রগতি প্রসঙ্গে’ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, সোহাগ বিগত সরকারের সময় সাবেক সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ভাগ্নে পিল্লু কমিশনারের ছত্রছায়ায় বিদ্যুতের চোরাই তার কেনাবেচা করতো। ৫ আগস্টের পর তার এই ব্যবসায় ভাগ বসাতে চায় তারই পরিচিতজনরা। এ নিয়েই তাদের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি; যা থেকে মব সৃষ্টি করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।
তিনি জানান, এ ঘটনায় পটুয়াখালী থেকে রেজওয়ান নামে আরও একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে হত্যায় মোট ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী, এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এজাহার নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়ানো হয়েছে। প্রকৃত ঘটনা হলো-মামলা দায়েরের জন্য নিহত সোহাগের সাবেক স্ত্রী লাকী আক্তার থানায় আসেন, কিছুক্ষণ পর সোহাগের সৎ ভাই রনিও থানায় আসেন। তারা নিজের মধ্যে পরামর্শ করে ২৩ জনকে আসামি করে একটি খসড়া এজাহার প্রস্তুত করেন। এরমধ্যে নিহতের আপন বড় বোন মঞ্জুয়ারা বেগম থানায় এসে এজাহার দায়েরের আগ্রহ প্রকাশ করেন। এ সময় তার সামনে আগের খসড়া এজাহার উপস্থাপন করা হয়। এ সময় তিনি আগের খসড়া এজাহার থেকে পাঁচজনের নাম বাদ দিয়ে নতুন করে আরও একজনের নাম যুক্ত করে মোট ১৯ জনকে আসামি করে এজাহার দাখিল করেন।
তিনি বলেন, নিহতের বোনের এজাহার দাখিলের পর কোতোয়ালি থানায় মামলা রুজু করা হয়। মামলা নম্বর-৭। কোনো ঘটনা এজাহার একটি প্রাথমিক তথ্য বিবরণী মাত্র। এজাহারের উল্লেখিত ঘটনা তদন্ত সাপেক্ষ প্রয়োজনীয় সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আদালতে পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করেন।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ঘটনা চলাকালীন ৯৯৯ এর মাধ্যমে সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চকবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই সরোয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছে। সেখানে গিয়ে পুলিশ দেখতে পায় অভিযুক্তরা একটা মবের পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছে। ‘চাঁদাবাজদের জায়গা নাই, ব্যবসায়ীদের ভয় নাই’ এমন স্লোগান দিচ্ছিল। এ অবস্থায় চকবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই সরোয়ার ঘটনাস্থল থেকে সন্দেহজনক মাহমুদুল হাসান মহিন ও রবিন নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করে।
প্রসঙ্গত, গত ৯ জুলাই মিটফোর্ড হাসপাতালের ৩ নম্বর ফটকের সামনে সোহাগকে প্রকাশ্যে কংক্রিট বোল্ডার দিয়ে শরীর ও মাথা থেঁতলে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তার বোন মঞ্জুয়ারা বেগম বাদী হয়ে পরেরদিন মামলা করেন।