spot_img

সকল ধর্মের মানুষকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ নতুন বাংলাদেশ গড়তে চায় জামায়াত

অবশ্যই পরুন

হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান মুসলমান এই চার ধর্মের অনুসারী মিলেই আমাদের এই বাংলাদেশ। সকল ধর্মের মানুষ নিয়ে মিলেমিশে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে ধর্মের ভিত্তিতে বিভেদের কোনো দেয়াল থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান।

সোমবার (৯ মে) বিকেলে বড়লেখা উপজেলা জামায়াতের আয়োজনে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে সকল ধর্মাবলম্বীদের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জামায়াত আমীর বলেছেন, ‘আজকের এই আয়োজনটা আসলে একটা ভিন্ন মোড়কে। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, মুসলিম বাংলাদেশের প্রধান চার ধর্মের লোক আমরা এখানে সমবেত হয়েছি। এটি একটি ফুলের বাগান। আমরা সকলেই প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি; জন্মসূত্রে আমরা সকলেই প্রিয় দেশের নন্দিত ও মর্যাদাবান নাগরিক।

তিনি আরও বলেন, আপনারা অনেকেই অভিযোগের সুরে বলেছেন যে, ‘৫ আগস্টের আগে আমাদেরকে নিয়ে আপনারা কখনই বসেননি; আমরাও যাইনি। আমরা সব সময় আওয়ামী লীগে ভোট দেই- এই ধারণা থেকে আমাদেরকে দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছিল।’ এই অভিযোগের সূত্র ধরে আমীরে জামায়াত বলেন, শুধু আপনারা নন, ৫ আগস্টের আগে তো আমার মা-ও আমাকে পায়নি, আমার বাবাও আমাকে পায়নি, আমার স্ত্রী-সন্তানরাও আমাকে পায়নি। এটা শুধু আমার কথা বলছি না, আমাদের কথা বলছি। ৫ আগস্টের আগে আমাদেরকে স্বাভাবিকভাবে বসবাস করতে দেওয়া হয়নি। আমি চোর-ডাকাত নই, দখলদার নই, চাঁদাবাজ নই, খুনি কিংবা সন্ত্রাসীও নই। তা সত্ত্বেও আমাকে কেন কয়েকবার জেলে রাখা হলো? এটা শুধু আমার ব্যাপারে না এই ধরনের ঘটনা লক্ষ লক্ষ রয়েছে। আমাদেরকে সমাজের মানুষের সুখ-দুঃখ, ব্যথা, বেদনার অংশীদার হতে দেওয়া হয়নি। তারপরও যেখানে খবর পেয়েছি সারা বাংলাদেশে দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, কিছুদিন আগে বরগুনায় পঞ্চম শ্রেণির একটি মেয়ের ইজ্জত নষ্ট করা হয়েছে। মেয়েটির বাবা থানায় মামলা করেছিলেন। লম্পটরা মামলা করার কারণে তার বাপকেও খুন করল। তিনি সনাতন ধর্মের অতি সাধারণ একজন মানুষ; মুরগী বিক্রির দোকানে চাকরি করতেন। এই দিয়ে তার ছোট্ট সংসারটি চলত। তিনটা মেয়ের মধ্যে নির্যাতিত মেয়েটি বড়। কোলের শিশুটির বয়স মাত্র আড়াই মাস। আমি সেখানে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, আপনাদের পাশে কারা কারা দাঁড়িয়েছেন? তারা বললেন, ডিসি সাহেব একজনের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা পাঠিয়েছেন। জিজ্ঞেস করলাম, আর কিছু কী তারা বলেছে? জবাব পেলাম, মামলাটা তারা দেখবেন। জিজ্ঞেস করলাম, এখন আপনারা চলবেন কিভাবে?

তিনি বললেন, পরিবারের একমাত্র অভিভাবক মারা গেছেন; এই পরিবারে এখন আর কোনো পুরুষ সদস্য নাই। পরিবারটিতে এখন বিধবা স্ত্রী, আর তিনটা এতিম মেয়ে। মহিলাটি তখন কেঁদে কেঁদে প্রায় বেহুশ হওয়ার উপক্রম। সে হাউ মাউ করে বলল যে, আমরা এখন বাঁচব কী করে? কি খাব? কারা আমাদেরকে খাবার দেবে? আমাদের সংসারের একমাত্র বাতি সে তো নিভেই গেল। আমি তখন আড়াই মাসের বাচ্চাটিকে কোলে তুলে নিয়ে বলেছিলাম- এই বাচ্চাটির দায়-দায়িত্ব আল্লাহর ওপর ভরসা করে আমরা নিলাম। আজ পর্যন্ত আমাদের সংগঠন আল্লাহর অপার মেহেরবানিতে প্রতি মাসে এই অসহায় পরিবারটির আর্থিক ভরণ-পোষণ দিয়ে যাচ্ছে।’

বড়লেখা উপজেলা জামায়াতের আমীর এমাদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি আব্দুল বাছিতের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, সিলেট মহানগর জামায়াতের আমীর ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মো. ফখরুল ইসলাম, জেলা সেক্রেটারি মো. ইয়ামীর আলী, মৌলভীবাজার-১ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মাওলানা আমিনুল ইসলাম, জেলা নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুর রহমান, ঢাকার পল্টন থানা আমীর শাহিন আহমদ খান। উপজেলা নায়েবে আমীর আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ সুমন, উপজেলা কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুল মুহাইমিন, মো. কামাল উদ্দিন প্রমুখ।

মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বড়লেখা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রনজিত কুমার পাল, সহ সাধারণ সম্পাদক স্বপন চক্রবর্তী, সহ সাধারণ সম্পাদক গীতেশ চন্দ্র দাস, কোষাধ্যক্ষ মুক্তাসান বিশ্বাস ও হ্যাডম্যান কেমেডি সুমের।

অনুষ্ঠান শেষে ডা. শফিকুর রহমান উপস্থিত সকলের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। ওইদিন জামায়াতের শীর্ষনেতাকে কাছে পেয়ে অনেকেই আবেগাপ্লুত হন।

সর্বশেষ সংবাদ

ইসরায়েল থেকে সুইডেনে ফিরলেন গ্রেটা থুনবার্গ

ইসরায়েল থেকে নিজ দেশ সুইডেনে ফিরলেন আলোচিত পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১০ জুন) সন্ধ্যায় স্টকহোমের আরলান্ডা বিমানবন্দরে...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ