ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পর এবার হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে নাজেহাল হলেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা। বুধবার ওভাল অফিসে আয়োজিত বৈঠকে আমন্ত্রিত অতিথি রামাফোসার সরকারের বিরুদ্ধে শ্বেতাঙ্গ গণহত্যা ও ভূমি দখলের অভিযোগ আনেন ট্রাম্প। ট্রাম্পের অভিযোগ, অনেক মানুষ (দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গ সম্প্রদায়) মনে করছেন, তারা নিপীড়নের শিকার। তারা যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় চাচ্ছেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় শ্বেতাঙ্গদের জমি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে তারা হত্যার শিকার হচ্ছেন।
ওভাল অফিসের ঐতিহাসিক কক্ষটিতে মুখোমুখি আলোচনায় পড়ে গেল উত্তেজনার ছায়া। বুধবার (২১ মে) হোয়াইট হাউসে আয়োজিত এক বৈঠকে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার বিরুদ্ধে শ্বেতাঙ্গ নিপীড়ন ও ভূমি দখলের গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আলোচনার মূল উদ্দেশ্য ছিল বাণিজ্য, কিন্তু বৈঠকের শুরুতেই ট্রাম্প আলোচনা ঘুরিয়ে নিয়ে আসেন দক্ষিণ আফ্রিকার অভ্যন্তরীণ নীতির দিকে। আলজাজিরার খবর।
ট্রাম্প অভিযোগ করেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় শ্বেতাঙ্গ কৃষকদের জমি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে এবং অনেককে হত্যাও করা হয়েছে। তাঁর ভাষায়, ‘অনেক মানুষ মনে করছেন তারা নিপীড়নের শিকার এবং যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় চাচ্ছেন।’ তিনি কিছু সংবাদ প্রতিবেদন ও ভিডিওকে এসব দাবির প্রমাণ হিসেবে হাজির করেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট রামাফোসা বৈঠকে শান্তভাবে ট্রাম্পের অভিযোগ শুনে বলেন, ‘যদি শ্বেতাঙ্গ কৃষকদের গণহত্যা সত্যি হতো, তবে এই তিন ভদ্রলোক (সঙ্গে থাকা গলফ খেলোয়াড়রা) আজ আমার সঙ্গে এখানে থাকতেন না।’
এই ঘটনার মধ্য দিয়ে হোয়াইট হাউসের কূটনৈতিক পরিবেশ নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। রয়টার্স জানিয়েছে, ঐতিহাসিকভাবে ওভাল অফিস বিদেশি অতিথিদের সম্মান জানানোর স্থান হলেও, ট্রাম্প এটি এখন রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগ ও কূটনৈতিক অপদস্থতার প্ল্যাটফর্মে রূপ দিচ্ছেন বলে মনে করছেন অনেকে।
এর আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গেও উত্তপ্ত এক বৈঠকে বিতর্কে জড়ান ট্রাম্প। তিন মাসের ব্যবধানে দুই বিশ্বনেতাকে এইভাবে চাপে ফেলা দেখে বিশ্লেষকরা বলছেন, ভবিষ্যতে অনেক রাষ্ট্রনেতাই হোয়াইট হাউসে আসার আগে ‘দুবার ভাববেন’।
এদিকে ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক খারাপ হয়েছে বলেই মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলায় দক্ষিণ আফ্রিকার অবস্থান, যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার, উন্নয়ন সহায়তা বন্ধসহ নানা পদক্ষেপে দুই দেশের সম্পর্কে টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে।