ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও)-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘনিষ্ঠ সহযোগী হুসেন আল-শেখের নাম ঘোষণা করেছেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে ফিলিস্তিনি নেতৃত্ব নিয়ে চলমান অনিশ্চয়তা দূর করতে এই পদক্ষেপ জরুরি ছিল বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
২০০৪ সালে ইয়াসির আরাফাতের মৃত্যুর পর থেকেই মাহমুদ আব্বাস (৮৯) পিএলও এবং ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ (পিএ) উভয়ের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। তবে এতদিন উত্তরসূরি নির্বাচনে তিনি অনাগ্রহ দেখিয়েছিলেন।
হুসেন আল-শেখ, যিনি ১৯৬০ সালে জন্মগ্রহণ করেন, ফাতাহ দলের একজন শীর্ষ নেতা এবং ইসরায়েলের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলার জন্য পরিচিত। পিএলওর নির্বাহী কমিটির অনুমোদনের পর আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে ভাইস প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করা হয়।
ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীরে সীমিত স্বায়ত্তশাসন পরিচালনা করে। দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও উপসাগরীয় দেশগুলো পিএতে সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছে, যাতে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত সমাধানে পিএ কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। গাজায় চলমান যুদ্ধের পর এই চাপ আরও বেড়েছে।
যুদ্ধশেষে গাজার পুনর্গঠন ও প্রশাসনে পুনর্গঠিত পিএর ভূমিকা প্রত্যাশা করছে যুক্তরাষ্ট্র ও সম্ভাব্য অর্থদাতারা। তবে ইসরায়েল গাজার প্রশাসনে পিএর অংশগ্রহণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে এবং স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনেরও বিরোধিতা করছে।
হামাস ২০০৭ সাল থেকে গাজা শাসন করছে। ২০০৬ সালের নির্বাচনের পর ফাতাহর বিরুদ্ধে গৃহযুদ্ধে জয়ী হয়ে তারা গাজার নিয়ন্ত্রণ নেয়। বর্তমানে পশ্চিম তীরেও হামাসের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি রয়েছে।
সম্প্রতি পিএলওর সেন্ট্রাল কাউন্সিলের বৈঠকে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদের অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে মাহমুদ আব্বাস হামাসকে নিরস্ত্র করার এবং গাজার দায়িত্ব পিএর হাতে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান।
তবে ফিলিস্তিনিদের মধ্যে পিএর জনপ্রিয়তা কমছে। এর পেছনে রয়েছে দুর্নীতির অভিযোগ, স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনে অগ্রগতির অভাব এবং পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সেনা অভিযানের বাড়বাড়ন্ত।
১৯৯৩ সালের অসলো চুক্তির মাধ্যমে গঠিত পিএ দীর্ঘদিন ধরেই ফাতাহর নেতৃত্বে রয়েছে এবং সর্বশেষ সংসদীয় নির্বাচন হয়েছিল ২০০৫ সালে।
উল্লেখ্য, হুসেন আল-শেখ ১৯৭৮ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত ইসরায়েলের কারাগারে বন্দী ছিলেন। ইসরায়েল সরকারের সঙ্গে পিএর সংলাপ পরিচালনার দায়িত্বেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।