spot_img

যুক্তরাষ্ট্র থেকে অনেক শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করে দেশে পাঠানো হচ্ছে

অবশ্যই পরুন

যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কঠোর নতুন পদক্ষেপ নিচ্ছে দেশটির সরকার। সাম্প্রতিক সময়ে, ট্রাফিক লঙ্ঘন, মৃদু অপরাধ কিংবা প্রো-প্যালেস্টাইন বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার অভিযোগে অনেক শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তারা বলছেন, এসব শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিলের বিষয়ে আগে থেকে কোনো নোটিশ দেওয়া হচ্ছে না এবং এমনকি অনেকক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও বিষয়টি জানতে পারছে না। অতীতে সাধারণত শিক্ষার্থীরা ভিসা হারালেও তারা যুক্তরাষ্ট্রে থেকে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারত। তবে এখন অনেকেরই বৈধ অবস্থানও বাতিল করে দেওয়া হচ্ছে, ফলে তাদের আটক হওয়ার ঝুঁকিও বাড়ছে।

মিনেসোটা স্টেট ইউনিভার্সিটি উদাহরণ

মিনেসোটা স্টেট ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট এডওয়ার্ড ইনচ জানান, তাদের পাঁচজন শিক্ষার্থীর ভিসা রহস্যজনকভাবে বাতিল হয়েছে। বিষয়টি ধরা পড়ে যখন বিশ্ববিদ্যালয় একটি ডাটাবেসে শিক্ষার্থীদের স্ট্যাটাস যাচাই করে। এক তুর্কি শিক্ষার্থীকে ডিইউআই (ড্রাইভিং আন্ডার ইনফ্লুয়েন্স) মামলায় আটক করার পর বিষয়টি সামনে আসে।

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় ক্ষমতায় আসার প্রচারণায় ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, প্রো-প্যালেস্টাইন বিক্ষোভে জড়িত বিদেশি শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করা হবে। এই ঘোষণার পর থেকেই ব্যাপক হারে পদক্ষেপ গ্রহণ শুরু হয়। কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির গ্র্যাজুয়েট ছাত্র মাহমুদ খলিল, যিনি একজন ফিলিস্তিনি অ্যাক্টিভিস্ট, তাকে প্রথম আটক করা হয়।

সেক্রেটারি অফ স্টেট মার্কো রুবিও বলেন, শুধুমাত্র বিক্ষোভ নয়, “সম্ভাব্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে” জড়িত থাকার অভিযোগে শিক্ষার্থীদের টার্গেট করা হচ্ছে।

দেশে ফেরত পাঠানোর নতুন পদ্ধতি

বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বলছে, এবার সরকার শিক্ষার্থীদের তথ্য সরাসরি ডাটাবেস থেকে মুছে ফেলছে এবং পূর্বের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে পদক্ষেপ নিচ্ছে না।

নর্থ ক্যারোলিনা স্টেট ইউনিভার্সিটির দুইজন সৌদি শিক্ষার্থী তাদের বৈধ অবস্থান বাতিল হওয়ার পর নিজ দেশে ফিরে গেছেন। একজন ভারতীয় ও একজন লেবানিজ শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে, যাদের অপরাধমূলক রেকর্ড থাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে যদিও তারা পূর্ণকালীন কর্মরত ছিলেন এবং নিয়ম অনুযায়ী অবস্থান করছিলেন।

শিক্ষার্থীদের উদ্বেগ ও ভবিষ্যৎ

টাফটস ইউনিভার্সিটি ও ইউনিভার্সিটি অব আলাবামার কিছু শিক্ষার্থীকে অভিবাসন কর্তৃপক্ষ গ্রেফতার করেছে। কখনও কখনও এমনও হয়েছে যে, বিশ্ববিদ্যালয় জানার আগেই শিক্ষার্থীর স্ট্যাটাস পরিবর্তন হয়ে গেছে।

“এটি কোনো স্বাভাবিক প্রক্রিয়া নয়,” বলছেন প্রেসিডেন্টস অ্যালায়েন্স অন হায়ার এডুকেশন অ্যান্ড ইমিগ্রেশনের প্রধান মিরিয়াম ফেল্ডব্লুম।

নাফসা-এর সিইও ফান্তা আও বলেন, “আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বের মেধাবী শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করেছে। তবে আমরা যদি তাদের সঙ্গে এমন আচরণ করি, তাহলে তারা অন্য দেশকে বেছে নিতে পারে। এই ব্যাপারটিকে আর স্বাভাবিক ধরে নেওয়া যাবে না।”

বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখন তাদের শিক্ষার্থীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পর্যালোচনা করছে এবং রাজনৈতিক অ্যাক্টিভিটির প্রমাণ খুঁজছে, কিন্তু অনেকক্ষেত্রে তারা কোনো স্পষ্ট কারণ খুঁজে পাচ্ছে না।

এই কঠোর পদক্ষেপ শিক্ষার্থীদের প্রথম সংশোধনী অধিকার (মতপ্রকাশের স্বাধীনতা) লঙ্ঘন করছে কিনা, তা ভবিষ্যতে আদালতে নির্ধারিত হতে পারে। তবে ইতোমধ্যেই অনেক শিক্ষার্থী আতঙ্কিত এবং যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনার আগ্রহ হারাতে শুরু করেছে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সর্বশেষ সংবাদ

যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইয়েমেনে নিহত ২, দাবি হুতিদের

ইয়েমেনের বিভিন্ন স্থানে হামলা অব্যাহত রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। রাজধানী সানা ও সাদাসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা চালিয়েছে মার্কিন বিমান বাহিনী। সাদায়...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ