১১৫ বছর ধরে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কালের সাক্ষী হয়ে আছে ওল্ড ট্রাফোর্ড। তবে দিন দিন আধুনিক ফুটবলের উপযোগিতা হারাচ্ছে ঐতিহাসিক এ স্টেডিয়ামটি। তাই ৩১ হাজার ৪১৯ কোটি টাকা খরচে এক লাখ ধারণক্ষমতার নতুন স্টেডিয়াম তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
১৯১০ সালে চালু হওয়া ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বড় স্টেডিয়ামের একটি ওল্ড ট্রাফোর্ড। নানা কারণে স্টেডিয়ামটি ঐতিহাসিক হয়ে উঠেছে। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের অনেক অর্জনের সাক্ষী এ স্টেডিয়াম। কিন্তু আধুনিক ফুটবলের সঙ্গে তাল মিলিয়ে স্টেডিয়ামটি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। সাম্প্রতিক সময়ে ওল্ড ট্রাফোর্ড অনেকগুলো নেতিবাচক সংবাদের শিরোনাম হয়েছে। গত মে মাসে ভারী বৃষ্টির সময় স্টেডিয়ামের ববি চার্লটন স্ট্যান্ডের ছাদ ফুটো হয়ে অঝোরে পানি ঝরতে দেখা যায়। অতিথি দলের ড্রেসিংরুমসহ আরও কিছু জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর আগে ২০২৩ সালে স্টেডিয়ামের ছাদের একটি অংশ ভেঙে পড়ে ভক্তদের উপর।
তাই স্টেডিয়াম সংস্কারেই আটকে থাকতে চায় না ক্লাব কর্তৃপক্ষ। আধুনিক সব সুযোগ সুবিধা নিয়ে নতুন স্টেডিয়াম তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে তারা। লন্ডনের বিখ্যাত ব্রিটিশ আন্তর্জাতিক আর্কিটেকচার ফাম ফস্টার অ্যান্ড পার্টনার্সকে স্টেডিয়ামের নকশা তৈরীর জন্য গত বছরের সেপ্টেম্বরে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। রয়টার্স, এপিসহ বিভিন্ন সংবাদ সংস্থার তথ্যমতে, পাঁচ বছরের মধ্যে দুইশ কোটি পাউন্ড খরচ করে নতুন স্টেডিয়াম বানানোর পরিকল্পনা রয়েছে ইউনাইটেডের। বাংলাদেশি হিসেবে সেটা ৩১ হাজার ৪১৯ কোটি টাকা। প্রস্তাবিত এই স্টেডিয়ামের আসন সংখ্যা হবে ১ লাখের মতো।
ইউনাইটেডের প্রকল্পিত নতুন স্টেডিয়াম ও তার আশপাশ দেখতে কেমন হবে, সেটার একটা মডেল চিত্র ‘ফস্টার প্লাস পার্টনার্স’-এর লন্ডনের সদর দপ্তরে প্রকাশ করা হয়েছে। নতুন স্টেডিয়ামের বিষয়ে ক্লাবের স্বত্বাধিকারী স্যার জিম র্যাটক্লিফ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘ওল্ড ট্রাফোর্ডের কাছাকাছি বিশ্বের বৃহত্তম ফুটবল স্টেডিয়াম দেখতে কেমন হবে, সেটার অসাধারণ এক যাত্রা শুরু হয়েছে। আমাদের বর্তমান স্টেডিয়াম ১১৫ বছর ধরে অনেক ভাবে উপকার করছে। কিন্তু বৈশ্বিক খেলাধুলার মানদণ্ডে সেটা অনেক পেছনে পড়ে গেছে।’
নতুন স্টেডিয়াম তৈরির কাজ চ্যালেঞ্জিং হবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘ইউনাইটেড বিশ্বের ফেবারিট ফুটবল ক্লাব ও আমার মতে এটাই সেরা। সেই মানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ একটা স্টেডিয়াম দরকার। এক লাখ ধারণক্ষমতার স্টেডিয়াম নির্মাণ অনেক চ্যালেঞ্জিং। তবে যুক্তরাজ্যের এমন এক স্টেডিয়াম অবশ্যই দরকার। ইংল্যান্ডের উত্তর অংশে যে পরিমাণ মানুষের উপস্থিতি, তাতে এটাই স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য উপযুক্ত মনে হয়েছে।’
নতুন স্টেডিয়াম তৈরি চ্যালেঞ্জিং হলেও এ প্রকল্প থেকে লাভের আশাও দেখছেন ইউনাইটেড কর্তৃপক্ষ। তারা মনে করছে, এটা সফল হলে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে প্রতি বছর বাড়তি সাতশ ত্রিশ কোটি পাউন্ড যোগ করবে। নতুন ৯২ হাজার কাজের সুযোগ তৈরি হবে, নিমার্ণ করা হবে ১৭ হাজার নতুন বাড়ি। এই অঞ্চলে বাড়তি ১৮ লাখ দর্শনার্থী বাড়তে পারে প্রতি বছর।