জাপানে বয়স্কদের যত্ন নেয়ার ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার হিউম্যানয়েড রোবট বা মানবিক গুণ সম্পন্ন রোবট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। বিষয়টি মাথায় রেখে এমন রোবট তৈরির দিকে বিশেষ নজর দিচ্ছেন দেশটির গবেষকরা।
জাপানের গবেষকদের তৈরি এআইরেক নামের রোবট উঠে বসতে সাহায্য করা, মোজা পরতে সহায়তা করা, রান্না করা, কাপড় ভাঁজ করা ও গৃহস্থালির আরও কিছু কাজ
জাপানের গবেষকদের তৈরি এআইরেক নামের রোবট উঠে বসতে সাহায্য করা, মোজা পরতে সহায়তা করা, রান্না করা, কাপড় ভাঁজ করা ও গৃহস্থালির আরও কিছু কাজ
দেশটিতে অস্বাভাবিক হারে জন্মহার কমে যাওয়ায় এমন পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছেন তারা। কর্মী সংকটে ভুগতে থাকা দেশটিতে আগামীতে এমন রোবটের বাণিজ্যিক উৎপাদন বৃদ্ধি পেলে উপকৃত হবে মানুষ বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বয়স্ক রোগীদের বিছানায় পাশ ফেরানো থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় সাহায্যের চাহিদা মেটানো এমনকি ডায়পার পরানোর মতো কাজ করতে সক্ষম এমন একটি মানবিক গুণ সম্পন্ন রোবট এআইরেক। অস্বাভাবিক হারে জন্মহার কমে যাওয়ায় এমন পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে দেশটি।
এআইরেক নামের রোবটটি উঠে বসতে সাহায্য করা, মোজা পরতে সহায়তা করা, রান্না করা, কাপড় ভাঁজ করা ও গৃহস্থালির আরও কিছু কাজ করতে সক্ষম বলে জানিয়েছে এর নির্মাতা ওয়াসেদা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা।
বয়স্ক নাগরিকের দিক দিয়ে অন্যতম দেশ জাপান। কর্মক্ষম জনসংখ্যা ধীরে ধীরে কমে যাওয়ার কারণে পরিচর্যা কর্মীর সংকট দেখা দিয়েছে দেশটিতে।
আগামী দশ বছরে ১৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সী জনগোষ্ঠীর সংখ্যা নয় দশমিক তিন শতাংশ হ্রাস পেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যা কঠোর অভিবাসন নীতির কারণে কর্মী সংকটে ভুগতে থাকা দেশটিকে মানব গুণ সম্পন্ন রোবট তৈরির দিকে নজর দিতে বাধ্য করছে।
সামনে এমন রোবটের উৎপাদন বৃদ্ধি পেলে উপকৃত হবেন বলে ধারণা করছেন নাগরিকরা। সরকারি অর্থায়নে এআইরেক-এর গবেষণার নেতৃত্ব দিচ্ছেন ওয়াসেদা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শিগেকি সুগানো।
তিনি বলেন, বয়স্ক জনসংখ্যার হার ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সামনে চাহিদা ও সরবরাহের ভারসাম্য বজায় রাখা কঠিন হয়ে উঠবে। বর্তমান প্রযুক্তির সঙ্গে পরিস্থিতির সামাল দেয়া কঠিন হবে। আমরা বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করে বর্তমান কার্যক্রমকে কিছুটা উন্নীত করার চেষ্টা করছি।
সুগানো আরও বলেন, ‘যদি সত্যিই এমন একটি রোবট তৈরি হয়, তাহলে এটি আমাদের জন্য খুবই সহায়ক হবে। তবে আমি কিছুটা উদ্বিগ্ন যে মানবিক যোগাযোগ থেকে আসা উষ্ণতা এবং সূক্ষ্ম বোঝাপড়া, যেমন পরিস্থিতি অনুধাবন ও আবেগগত সম্পর্ক তৈরি করা, রোবটের পক্ষে মানিয়ে নিতে কঠিন হতে পারে।’
জেনকোকাই বয়স্ক পরিচর্যা কেন্দ্র পরিচালনাকারী সংস্থার চিফ অপারেটিং অফিসার তাকাশি মিয়ামোতো বলেন, যদি সঠিকভাবে নিরাপত্তা মূল্যায়ন করা হয়, তবে রোবট ব্যবহার না করার কোনো কারণ থাকবে না। পরিচর্যা খাতে দীর্ঘমেয়াদী শ্রম সংকট আরও তীব্র হতে চলেছে এবং রোবটের সাথে মানব পরিচর্যাকারীদের একসাথে কাজ করা সময়ের ব্যাপার মাত্র।