ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের কাছ থেকে মুক্তি পেয়েছে চার ইসরায়েলি জিম্মি। গতকাল শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) তাদের মুক্তি দেয়া হয়। তবে এদের মধ্যে এলোচিত এক নারী হলে কারিনা আরিয়েভ। তিনি চারটি ভাষায় পারদর্শী এবং কাজ করতেন ইসরায়েল সেনাবাহিনীতে। এছাড়া স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে দায়িত্ব করতেন কিন্ডারগার্ডেনে। খবর দ্য উইক
শনিবার হামাস কারিনাসহ চার ইসরায়েলি নারী সৈন্যকে মুক্তি দেয়। আরও তিনজন হলেন, লিরি আলবাগ, নামা লেভি এবং দানিল গিলবো।
এদের মধ্যে ২০ বছর বয়সী কারিনা আরিয়েভ ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) নজরদারি ইউনিটে কাজ করতেন। ছিলেন নাহাল ওজ সামরিক ঘাঁটিতে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হাতে এই ইসরায়েলি নারী সৈন্য জিম্মি হয়।
এই নারী একটি কিন্ডারগার্ডেটে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করতেন। ছিলেন বাঁশি বাদক। কথা বলতে পারতেন চার ভাষাতে। এছাড়া মুহূর্তেই ধাঁধাঁর সামাধান করতে পারতেন। বাবা মায়ের মতো আসক্ত ছিলেন ভৌতিক ছবি দেখাতে।
কারিনা আরিয়েভের সঙ্গে তার বাবা মায়ের শেষ কথা হয়েছিল ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের সকাল ৭টায়। ওই সময়ে কারিনা জানায় তাদের ওপর রকেট ও বন্দুক হামলা চালানো হয়েছে। এরপর সকাল ৭টা ৪০ মিনিটের দিকে তারা কারিনার সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ হারায়।
পরবর্তীতে হামাসের প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে আরিয়েভসহ আরও দুই নারীকে একটি গাড়িতে ফেলে রাখা হয়েছে। যেখানে আরবী ভাষায় কথা বলা হামাসের যোদ্ধারা তাদের পাহাড়া দিচ্ছে। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে হামাস ওই ভিডিও প্রকাশ করে। যেখানে আরিয়েভেকে দানিয়েলা গিলবো এবং দরোন স্ট্রেইনব্রেচারের সঙ্গে দেখা যায়। এদের মধ্যে গিলবো শনিবার মুক্তি পেয়েছেন। আর স্ট্রেইনব্রেচার গত রোববার মুক্তি পান।
কারিনার মা এ১২ নিউজে বলেছেন, হামাস প্রকাশিত ভিডিওটি তিনি না দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কারণ সেখানে তার মেয়ে একা ছিলেন এবং তিনি তাকে কোনো সাহায্য করতে পারছে না।
এদিকে কারিনার বোন অ্যালেক্সজান্দ্রা বিবিসিকে জানায়, হামাসের হামলার সময় কারিনা যখন তাকে ফোন করে তখন সে গুলির শব্দ শুনতে পায়, এরপর সে কারিনাকে একটি গাড়িতে দেখতে পায়। অ্যালেক্সজান্দ্রা বলেন, সে ছিল ভীত এবং আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল। তার শেষ বার্তা এমনই ছিল।
পরবর্তীতে আলেক্সজান্দ্রা টেলিগ্রামে প্রকাশিত হওয়া একটি ভিডিওতে তার বোনকে দেখেছিলেন। সেখানে তার বোনের মুখমণ্ডলে রক্তমাখা ছিল এবং সে চিৎকার করছিল।
৪৭৭ দিন পর পরিবার তাকে ফিরে পেয়ে বেশ উচ্ছ্বাসিত ছিল। এর মাধ্যমে তাদের দীর্ঘদের ব্যথা, হতাশা এবং উদ্বেগ দূর হয়েছে।