spot_img

বাংলাদেশ সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করেছে ভারত, বসালো ভাসমান চৌকি

অবশ্যই পরুন

বাংলাদেশ-ভারত আন্তর্জাতিক সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে নয়াদিল্লি। গত শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র এবং সুন্দরবনসহ সীমান্তবর্তী নদীগুলোতে ভাসমান চৌকি বসায় ভারত। শনিবার (৪ জানুয়ারি) ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কিছু অংশকে বাংলাদেশের সাথে যুক্ত করে একটি মানচিত্র পোস্ট দেয়ার জেরেই সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়ায় ভারত। এর আগে মাহফুজ আলমের পোস্টের তীব্র প্রতিবাদ জানায় ভারত সরকার। দেশটির একজন মুখপাত্র তখন বলেন, আমরা সংশ্লিষ্ট প্রত্যেককে জনসমক্ষে মন্তব্যের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার বিষয় স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। এমন পোস্ট দেয়ার ক্ষেত্রে আরও দায়িত্বশীলতা দেখানো প্রয়োজন।

ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) একটি সূত্র জানায়, গত শুক্রবার ভারতের সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনী (বিএসএফ) গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র এবং সুন্দরবনসহ সীমান্তবর্তী নদীগুলোতে নতুন ভাসমান চৌকি বসিয়েছে। সীমান্ত এলাকাগুলোতে সার্বক্ষণিক টহল চলছে। নতুন ভাসমান চৌকিগুলো টহলে সাহায্য করবে। এই চৌকিগুলো সময়ের প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করে সূত্রটি।

এতে আরও বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সন্ত্রাসীদের চলাচলে সহায়তা করতে পারে বলে ভারত আশঙ্কা করছে। পাশাপাশি বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের সম্ভাব্য অর্থায়ন এবং সমর্থন নিয়েও দেশটির উদ্বেগ রয়েছে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নরেন্দ্র মোদির গুরুত্বপূর্ণ মিত্র উলেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির তিনি ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। এরপর বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে তাকে ফেরত চেয়ে চিঠিও দেয়া হয়। কিন্তু ভারত এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।

শেখ হাসিনার পতনের পর ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) বারবার হিন্দু জনগোষ্ঠীকে রক্ষা করার আহ্বান জানিয়ে আসছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী কীর্তি বর্ধন সিং জানায়, ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে হিন্দুসহ সংখ্যালঘুদের ওপর ২২০০টি আক্রমণ করা হয়েছে। যা গত বছর ছিল ৩০২ টি। তবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এই সংখ্যাটিকে অতিরঞ্জিত বলে অভিহিত করেছে। তারা জানায়, নভেম্বর পর্যন্ত মাত্র ১৩৮টি আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে।

বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান গত সপ্তাহে বলেন, ঢাকা ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে অস্থিতিশীল করার জন্য কিছুই করবে না। প্রতিবেশীর সাথে এমন কিছু করব না যা কৌশলগত স্বার্থের বিরুদ্ধে যায়। তবে দিল্লিও যাতে আমাদের স্বার্থের বাইরে কিছু না করে।

এদিকে, চিন্ময় কৃষ্ণকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে আগরতলায় বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনে হামলা চালায় ভারতীয় বিক্ষোভকারীরা। এর প্রতিবাদে ঢাকা তাৎক্ষণিকভাবে মিশনের সব কনস্যুলার সেবা স্থগিত করে এবং ভারতের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে।

অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল টেলিগ্রাফকে বলেন, বাংলাদেশ এবং জুলাই বিপ্লবের বিরুদ্ধে ক্রমাগত ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে ভারত। বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন এবং ইসলামপন্থীদের একটি শক্ত ঘাঁটি প্রমাণ করতে এই অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। জুলাই বিপ্লবের সময় এবং পরে কয়েকজন হিন্দু ব্যক্তিকে আক্রমণ বা গ্রেফতার করা হয়েছিল। কিন্তু এই হামলার মূলে ছিল আওয়ামী লীগের সাথে তাদের অপরাধমূলক কার্যকলাপ।

ভারতের সাথে সম্পর্কের উন্নয়ন নিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, পুতুল শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠার স্বপ্ন ভুলে যাওয়া, জনগণের রায়কে সম্মান এবং সম মর্যাদা ও অধিকারের ভিত্তিতে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক পুনর্নির্মাণ করা যেতে পারে।

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ দ্য টেলিগ্রাফকে বলেন, ভারত সরকার মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত শেখ হাসিনাকে রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে। এজন্য বাংলাদেশি জনগণ ভারত সরকারের প্রতি ক্ষুব্ধ।

সর্বশেষ সংবাদ

অভিযুক্ত বিচারপতিদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরুর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের কয়েকজন বিচারপতির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্ত করতে অনুমতি দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. শাহাবুদ্দিন। আগামী সপ্তাহে তাদের বিরুদ্ধে...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ