ইউক্রেনের যুদ্ধের তিন বছর পূর্তির কাছাকাছি সময়ে নিয়ন্ত্রণ কঠোর করার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে রাশিয়ার আইন প্রণেতারা মঙ্গলবার একটি বিল অনুমোদন করেছেন। বিলটিতে রাষ্ট্রদ্রোহের সংজ্ঞাকে আরো বিস্তৃত করা হয়েছে।
নিম্নকক্ষ স্টেট ডুমা কর্তৃক অনুমোদিত সংশোধনীগুলোয় দ্বিতীয় এবং তৃতীয় পাঠে রাষ্ট্রদ্রোহের সংজ্ঞাকে বিস্তৃত করে ‘রাশিয়ান ফেডারেশনের নিরাপত্তার বিরুদ্ধে কার্যকলাপ’-এ জড়িত যেকোনো সংস্থার সাথে সম্পৃক্ততা অন্তর্ভুক্ত করে।
বর্তমান আইনটিতে ‘শত্রুপক্ষকে সমর্থন করার’ ব্যাখ্যা আরো সংকীর্ণ, এতে শত্রুর সশস্ত্র বাহিনীতে যোগদানের বিষয়টিকে শত্রুপক্ষকে সমর্থন করা হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে।
রাষ্ট্রদ্রোহের দায়ে দোষীসাব্যস্ত ব্যক্তিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।
বিলটির অন্যতম লেখক ও ডুমার নিরাপত্তাবিষয়ক কমিটির প্রধান ভাসিলি পিসকারেভ বলেন, ‘রাশিয়ার সার্বভৌমত্ব রক্ষার লড়াইয়ে যখন আমাদের সেনারা জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছে, তখন শত্রুপক্ষের পক্ষে কোনো নিরপেক্ষ বা শান্তিপূর্ণ সংগঠন নেই।’
অধিকারকর্মীরা সতর্ক করে দিয়েছেন যে, বিলের অস্পষ্ট সূত্রটি যেকোনো ইউক্রেনীয় সংস্থার সাথে সম্পর্ক রয়েছে এমন যে কাউকে লক্ষ্যবস্তু করতে ব্যবহার করা যেতে পারে এবং পাশ্চাত্য সংস্থা বা সংস্থাগুলোর সাথে যাদের কোনো যোগাযোগ রয়েছে তাদের শাস্তি দেয়ার জন্য আরো বিস্তৃতভাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে।
রাষ্ট্রদ্রোহের আইনি সংঘটি ইতোমধ্যে বিদেশী রাষ্ট্র বা সংস্থাগুলোকে অস্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত ‘সহায়তা’ প্রদানের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রসারিত করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত সংশোধনীগুলো উচ্চকক্ষ দ্বারা অনুমোদিত এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দ্বারা স্বাক্ষরিত হলে আইনে পরিণত হবে। এতে বিদেশী এবং নাগরিকত্ববিহীন মানুষ যারা ‘রুশ ফেডারেশনের সুরক্ষার বিরুদ্ধে শত্রুর কার্যকলাপে সহায়তা করার’ অভিযোগে অভিযুক্ত হবেন তাদের জন্য ১৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে পুতিন ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর পর দেশদ্রোহ ও গুপ্তচরবৃত্তির ঘটনার সংখ্যা আকাশ ছুঁয়েছে। মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর দৃষ্টিগোচর হয়েছে যে ক্রেমলিনের সমালোচক এবং স্বাধীন সাংবাদিক থেকে শুরু করে বিজ্ঞানী পর্যন্ত প্রচুর সন্দেহভাজনকে লক্ষ্যবস্তু করে এসব মামলা করা হয়েছে।
সূত্র : ভিওএ